তৃতীয় মেয়াদে শি চিন পিং প্রেসিডেন্টের দায়িত্ব নিলেন

চীনের নেতা শি চিন পিং টানা তৃতীয়বারের মতো আনুষ্ঠানিকভাবে চীনের প্রেসিডেন্টের দায়িত্ব নিয়েছেন। দেশটির রাবার স্ট্যাম্প পার্লামেন্ট থেকে তিনি প্রেসিডেন্ট নির্বাচিত হয়েছেন। চীনের সংসদে ২ হাজার ৯৫২ সদস্যের সবাই শি চিন পিং-কে আগামী পাঁচ বছরের জন্য প্রেসিডেন্ট পদের জন্য ভোট দেন। 

এই ঘটনাই বলে দিচ্ছে, শি চিন পিং (৬৯) এই প্রজন্মের মধ্যে চীনের সবচেয়ে প্রভাবশালী নেতা। চীনা শাসন ব্যবস্থায়, রাষ্ট্রপতির কার্যাবলী মূলত আনুষ্ঠানিক। কমিউনিস্ট পার্টির জেনারেল সেক্রেটারি এবং সেন্ট্রাল মিলিটারি কমিশনের চেয়ারম্যান হওয়ার কারণে শি ক্ষমতা আসেন।

তৃতীয়বারের মতো রাষ্ট্রপতি হবেন শি, এটা ব্যাপকভাবে প্রত্যাশিত ছিল। নতুন নিয়োগপ্রাপ্তরা সবাই শি চিন পিং এর  অনুগত হবেন বলে আশা করা হচ্ছে। এর মধ্যে আছেন লি কিয়াং। মার্কিন সংবাদমাধ্যম সিএনএন জানিয়েছে, শনিবার (১১ মে) সংসদে লি কিয়াংকে প্রধানমন্ত্রী বানানো হবে। শি জিনপিংয়ের অত্যন্ত আস্থাভাজন লোক তিনি।

শুক্রবার শি চিন পিং-এর প্রেসিডেন্ট নির্বাচিত করা ছাড়াও হান ঝেংকে ভাইস-প্রেসিডেন্ট এবং ঝাও লিজেকে সংসদের প্রধান নেতা বানানো হয়। তারা সবাই গ্রেট হল অব দ্য পিপলের ভেতর দেশের সংবিধান অনুযায়ী শপথ গ্রহণ করেন। 

শি চিন পিং প্রথমবার যখন ক্ষমতায় আসেন তখনো চীনের সংবিধানে ছিল, কেউ দুই মেয়াদ অর্থাৎ ১০ বছরের বেশি সময় প্রেসিডেন্ট থাকতে পারবেন না। শি শি চিন পিংয়ের পূর্বসূরি জিয়াং জেমিন, হু জিনতাওরা দশ বছর পর ক্ষমতা ছেড়ে দিয়েছেন। কিন্তু শি চিন পিং তা করেননি। তিনি নিয়ম বদল করেছেন। দুইবারের বেশি যাতে তিনি প্রেসিডেন্ট থাকতে পারেন, তার ব্যবস্থা করেছেন। ২০১৮ সালে নিয়মের পরিবর্তন হয়েছে। ফলে শি তৃতীয়বারের জন্য প্রেসিডেন্ট হতে পারলেন।

তবে শি যখন তৃতীয়বারের জন্য প্রসিডেন্ট হলেন, তখন চীন বেশ কিছু সমস্যায় ভুগছে। আর্থিক বৃদ্ধির হার কমে গেছে, রিয়েল এস্টেট সেক্টরে সমস্যা দেখা দিয়েছে, যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে চীনের সম্পর্ক খুবই খারাপ জায়গায় এসে পৌঁছেছে।

এসওএএস চীন ইনস্টিটিউটের ডিরেক্টর স্টিভ স্যাং এএফপিকে জানিয়েছেন, ‘চীন এবার আন্তর্জাতিক ক্ষেত্রে নিজেকে আরো বেশি করে প্রতিষ্ঠা করতে চাইবে। সেই সঙ্গে ঘরোয়া বিষয়ে যাতে তাদের বাইরের দেশগুলোর ওপর নির্ভরশীল না হতে হয়, তার চেষ্টাও করবে।’

 তার মতে, ‘চীন আবার মাওয়ের জমানায় ফিরছে না। তবে এমন একটা পরিবেশ তৈরি হবে, যাতে মাওয়ের অনুগামীরা স্বাচ্ছ্বন্দ্য বোধ করবেন।’

সূত্র: বিবিসি, সিএনএন, ডয়চে ভেলে।

LEAVE A REPLY