গরম পড়ছে, এই সময়ে শিশুর যত্নে যা করতে পারেন

সংগৃহীত ছবি

শুরু হচ্ছে গরমের দাবদাহ। দিন যাওয়ার সঙ্গে সঙ্গে এর প্রকোপ আরো বাড়বে। গরমে বড়রা কুলিয়ে উঠতে পারলেও শিশুদের নিয়ে বেশ হিমশিম খেতে হয় অভিভাবকদের। পরিবর্তিত আবহাওয়ার সঙ্গে মানিয়ে নিতে শিশুদের অনেক কষ্ট পোহাতে হয়। তাই গরম এলেই নবজাতক ও শিশুদের নিয়ে চিন্তায় অস্থির হয়ে পড়েন মা-বাবারা। বিশেষ করে শিশুকে নিয়ে বাস, ট্রেন বা বিমানে দূরের যাত্রায় গরমে সীমাহীন ভোগান্তি সামলাতে হয়। অনেক সময় অতিরিক্ত গরমে অসুস্থ হয়ে পড়ে শিশুরা। অতিরিক্ত ঘেমে পানিশূন্যতায় ভোগা, প্রস্রাবের পরিমাণ কমে যাওয়া, দুর্বল হয়ে পড়া, জ্বর, বমি ও ডায়রিয়ায় ভুগতে দেখা যায়। এ জন্য গরমের শুরু থেকেই সাবধানতা অবলম্বন করলে বেশ সুবিধা পাওয়া যায়।

প্রতিদিন গোসল

নবজাতকসহ ছোট-বড় শিশুদের এই সময় প্রতিদিন গোসল করাতে হবে। গরমে শিশুদের ঘাম বেশি হয়। ঘাম থেকে ময়লা জমে। শরীর চিটচিট করে এবং চুলকাতে দেখা যায়। ঘাম থেকে ঘামাচি, র্যাশ বা ফুস্কুড়ির সংক্রমণ দেখা দেয়। নিয়মিত গোসলে ঘামের ময়লা দূর হবে এবং ঘাম কম হবে। এ ছাড়া দিনে দুবার মাথাসহ পুরো শরীর সুতি কাপড় বা ভেজা গামছা দিয়ে ভালোভাবে মুছে দিতে পারেন। গোসল শেষে শিশুর শরীরে বেবি পাউডার ছিটিয়ে দিতে পারেন। এতে অতিরিক্ত গরম থেকে আরাম পাবে শিশু।

পর্যাপ্ত পানি পান 

ঘেমে গিয়ে শিশুদের শরীর পানিশূন্যতায় ভুগতে পারে। এ জন্য পানিশূন্যতা পূরণে গরমে শিশুকে কিছুক্ষণ পর পর পানি পান করাতে হবে। সকালে শিশুকে লেবু পানি পান করাতে পারেন। গরমে লেবু পানি বেশ উপকারী। এ ছাড়া ডাবের পানি, তাজা ফলের শরবত খাওয়াতে পারেন। শিশু বুকের দুধ পান করলে ঘন ঘন বুকের দুধ পান করাতে হবে।

শিশুর খাবার

শিশুদের খাওয়ানো নিয়ে মায়েদের অভিযোগের শেষ নেই। গরমে শিশুদের মধ্যে খাবার খাওয়ার প্রতি আগ্রহ কম হয়। জোর করে শিশুকে কোনো কিছু খাওয়াতে যাবেন না। জোর করে খাওয়ালে বমি হতে পারে। শিশু যেসব খাবার খেতে পছন্দ করে সেগুলোর মধ্য থেকে স্বাস্থ্যকর খাবার বেছে নিয়ে খাওয়ানোর চেষ্টা করুন। এ সময় শিশুদের ডায়রিয়ার প্রকোপ বাড়ে। এ জন্য শিশুর খাবার বাটি, চামচ ও অন্যান্য সরঞ্জাম সব সময় পরিষ্কার রাখতে হবে। শিশুর খাবার তৈরির আগে এবং খাওয়ানোর আগে যিনি খাওয়াবেন তাঁর হাত ভালোভাবে সাবান দিয়ে ধুয়ে নিতে হবে। বাইরের খাবারদাবার খাওয়ানো থেকে শিশুদের বিরত রাখতে হবে। পথের আইসক্রিম, নানা পানীয় থেকে ডায়রিয়াসহ নানা অসুখবিসুখে ভুগতে পারে। গরমে শিশুকে সহজপাচ্য, পুষ্টিকর ও টাটকা খাবার খাওয়াতে হবে।

শিশুর আরামের ব্যবস্থা

গরমে শিশুকে সুতি কাপড়ের আরামদায়ক ও ঢিলেঢালা পোশাক পরাতে হবে। এমন পোশাকে সহজেই বাতাস চলাচল করতে পারে। এতে ঘাম কম হয়। শিশু ঘেমে গেলে দ্রুত ভেজা গামছা দিয়ে ঘাম মুছে দিতে হবে। শিশুর জন্য আরামদায়ক ঘুম নিশ্চিত করতে হবে। কম ঘুম হলে শিশুরা কান্না করে, খেতে চায় না। এ জন্য শিশুর শোবার ঘর ঠাণ্ডা ও আরামদায়ক করার ব্যবস্থা করতে হবে। ফ্যান বা এসি চালু রাখা, জানালা খুলে রাখা, ঘরে ভেজা কাপড় ঝুলিয়ে রেখে ঠাণ্ডা ভাব নিশ্চিত করতে পারেন। গরমের মধ্যে শিশুকে নিয়ে কারণ ছাড়া বাইরে না বেরোনোই ভালো।

এ সময় শিশুদের চুল ছোট করে কেটে দিন। বড় চুলে ঘাম বেশি হয়। শিশুর বয়স এক বছরের কম হলে মাথা ন্যাড়া করে দিতে পারেন। বাতাস কম লাগার অজুহাতে মশারি না টানিয়ে রাখবেন না। শিশু যখনই ঘুমাবে ওর জন্য মশারি টানিয়ে দিন। শিশু কোনো সমস্যায় ভুগলে দ্রুত একজন শিশুরোগ বিশেষজ্ঞের পরামর্শ নিতে হবে।

LEAVE A REPLY