বিয়ের স্বীকৃতি চেয়ে ভারতের সুপ্রিম কোর্টে সমলিঙ্গের ৪ দম্পতি

ভারতের সুপ্রিম কোর্ট। ছবি : সুশীল কুমার ভার্মা

চার বছর আগে ভারতের সংবিধানের ৩৭৭ নম্বর অনুচ্ছেদ বাতিল করে দিয়েছে দেশটির সুপ্রিম কোর্ট। ফলে সমলিঙ্গের প্রাপ্ত বয়স্ক নাগরিকরা পারস্পরিক সম্মতির ভিত্তিতে যৌন সম্পর্কে লিপ্ত হতে পারেন। সুপ্রিম কোর্টের ওই রায়ের সুবাদে এই ধরনের সমলিঙ্গের সম্পর্ককে আর অপরাধ বলে ধরা হয় না। কিন্তু তার পরও তাদের দাম্পত্য সম্পর্কের আইনি স্বীকৃতি নেই দেশে।

ভারতের সমলিঙ্গের চার দম্পতি সুপ্রিম কোর্টে তাদের বিয়ের স্বীকৃতি চেয়ে মামলা করেছেন। সেই মামলার শুনানি শুরু হবে আগামী সোমবার থেকে। প্রধান বিচারপতি ডি ওয়াই চন্দ্রচূড়ের‌ নেতৃত্বাধীন বেঞ্চ সোমবার থেকে টানা শুনানি করে শীর্ষ আদালতের অবস্থান জানিয়ে দেবে। যা আরো ঐতিহাসিক পদক্ষেপ হতে পারে বলে আশাবাদী মামলাকারীরা। 

ভারতের সুপ্রিম কোর্ট বলেছে, দেশের হাই কোর্টগুলোতে দায়ের হওয়া মামলাগুলোও একই সঙ্গে বিবেচনা করা হবে।

চার মামলাকারী তাদের আবেদনে বলেছেন, সমলিঙ্গের বিয়ে দেশে বাড়ছে। ২০১৮ সালে সুপ্রিম কোর্ট সংবিধানের ৩৭৭ নম্বর অনুচ্ছেদ বাতিল করার পর সমলিঙ্গের বিয়ে বেড়েছে। ওই অনুচ্ছেদে সমলিঙ্গের মধ্যে যৌনতাকে অপরাধ বলে গণ্য করা হত। কিন্তু ওই অনুচ্ছেদ বাতিল হওয়ার পরও স্পেশাল ম্যারেজ অ্যাক্টেও বিয়ের রেজিস্ট্রাররা সমলিঙ্গের বিয়ে রেজিস্ট্রি করাতে রাজি হচ্ছেন না। ফলে জীবন বিমা কম্পানি তাদের নমিনি হিসেবে দাম্পত্য সম্পর্ককে মান্যতা দিচ্ছে না।

একটি মামলায় এক দম্পতি বলেছেন, তারা একটি শিশুকে দত্তক নিতে চান। শিশু দত্তক নেওয়ার সব শর্ত পূরণ করার পর শেষ মুহূর্তে বেঁকে বসেছে কর্তৃপক্ষ। দম্পতি হিসেবে ম্যারেজ সার্টফিকেট দাবি করা হয়েছে তাদের কাছে।

আর এক দম্পতি জানিয়েছেন, তাদের একজনের অস্ত্রোপচারের আগে নিকটজনের পক্ষ থেকে হাসপাতালে জমা করা সম্মতিপত্র গৃহীত হয়নি আইনিভাবে বিয়ের নথিপত্র দেখাতে না পারায়।

সমকামী অধিকার আন্দোলনের সঙ্গে যুক্ত সংগঠনগুলো বলছে, ভারতে বিভিন্ন স্তরের আদালতে বিয়ের স্বীকৃতি চেয়ে কয়েক হাজার মামলা হয়েছে। কিন্তু বিচারকরা সিদ্ধান্ত নিচ্ছেন না। তাদের মতে, এর একটি কারণ হলো বর্তমান কেন্দ্রীয় সরকার এই ধরনের বিয়ের বিষয়ে আইনি অবস্থান স্পষ্ট করেনি। সুপ্রিম কোর্টেও বর্তমান সরকার ৩৭৭ নম্বর অনুচ্ছেদ বাতিলের রায়ের বিরোধিতা করেছিল। আন্দোলনকারীদের অভিযোগ, মোদি সরকারের নীতিগত অবস্থানের কারণেই সমলিঙ্গের বিয়ের স্বীকৃতি সংক্রান্ত বিজ্ঞপ্তি জারি করছে না আইন মন্ত্রণালয়।

সূত্র : দ্য ওয়াল

LEAVE A REPLY