‘আমাকে কেউ পাত্তা দেয় না, আমিও দিই না; আমাকে ধরা মুশকিল’

কবির সুমন

আজ কবির সুমনের জন্মদিন। সহস্র, অজস্র শুভেচ্ছায় ভেসে যাওয়া সুমন কিন্তু জন্মদিন বিশ্বাস করেন না।  বললেন, আমি জন্মদিনে বিশ্বাস করি না! মাঝখানে একটু নাম-টাম করে গিয়েছিলাম। তাই আমাকে যাঁরা ভালোবাসেন, তাঁরা কেউ কেউ আমার জন্মদিন উদ্‌যাপন করতেন। শুভেচ্ছা জানাতেন। তাঁরা খুবই সুন্দর মানুষ। কিন্তু জানেন, আমার খুবই অস্বস্তি হয়। 

একটা বয়সের পর বিনোদনশিল্পীদের কেউ চায় না উল্লেখ করে সুমন বলেন, আমার কারো প্রতি কোনো ক্ষোভ নেই। আসলে বিনোদনশিল্পীদের একটা বয়সের পর আর কেউ চায় না। ব্যতিক্রম হলেন ডাক্তার এবং আইনজীবীরা। বহু বছর ধরে গান লিখছি, গাইছি। বুধবার আমার ৭৪ বছর পূর্ণ হলো। সময়টা ১৯৬৭ সাল। সেই ১৮ বছর বয়স থেকে আকাশবাণী কলকাতায় রবীন্দ্রসংগীত গাইছি। তখন শ্যামল মিত্র, নির্মলা মিশ্ররাও ছিলেন। তাই আমি কালকের খোকা নই। কত ধানে কত চাল হয়, সেটা আমি খুব ভালো জানি। আমাকে কেউ পাত্তা দেয় না। আমিও পাত্তা দিই না। আমাকে ধরা মুশকিল!

মঞ্চে গাইতে চান না সুমন, এর বিকল্প হিসেবেও ভেবে রেখেছেন। বললেন,  একটা গাড়িতে হারমোনিয়াম, তানপুরা, তবলা আর সাউন্ড সিস্টেম চাপিয়ে বেরিয়ে পড়ব। গাড়ির গায়ে লেখা থাকবে ‘বাংলা ভাষায় খেয়াল’। সেটা কোথাও কোথাও দাঁড়াবে। কাউকে বিরক্ত না করে, আইন ভঙ্গ না করে আমি রাস্তায় গান গাইব।

এই বয়সেও এত স্ট্যামিনা কিভাবে পান সুমন এটা অনেককেই ভাবায়। বললেন, কাম! মুক্ত কাম! যেখানে অশ্লীলতাই সব। বয়স হয়েছে। রাতে ভলো ঘুম হয় না। কিন্তু আমি বিছানায় চূড়ান্তভাবে সক্ষম। নারীরা আমাকে সমৃদ্ধ করেছেন। নতুন ধারণা আবিষ্কার করে প্রেম করাতেই আমার এনার্জি। আঁতলামি নয়, প্রেম করতে হবে শরীর দিয়ে, ভালোবাসা দিয়ে এবং সম্মান দিয়ে। এ ছাড়া আমাদের শাস্ত্রীয়সংগীতের বিভিন্ন রাগ এবং খেয়াল আমাকে বাঁচিয়ে রাখে।

সুমন সফল-অনেকেই এটা মনে করেন। দেশ-বিদেশে কোটি ভক্ত। কিন্তু নিজেকে কতটা সফল মনে করেন তিনি? এ প্রসঙ্গে সুমন বলেন, যেমন- আমার স্বপ্ন ছিল সিনেমা তৈরি করব। একটা সময়ে আমি সিরিয়াসভাবে সিনেমার চর্চা করেছি। বাংলাদেশে একটা টেলিফিল্ম করেছিলামও। হয়তো আবার কোনো দিন ছবি করব। আরো একটা স্বপ্ন আছে, আমি নৃত্যনাট্য নিয়ে কাজ করতে চাই। খুব দ্রুত কাজ শুরু করব। রবীন্দ্রনাথের নৃত্যনাট্য নিয়ে খুব বেশি কাজ হয়নি। আর হবে বলেও মনে হয় না।

আনন্দবাজার থেকে

LEAVE A REPLY