সব ধর্মপ্রাণ মুসলমান আত্মশুদ্ধির জন্য এই এক মাস রোজা রাখতে চান। ডায়াবেটিসের রোগীরাও এর ব্যতিক্রম নন। রোজায় যেহেতু অনেকক্ষণ না খেয়ে থাকতে হয় এবং ডায়াবেটিসের রোগীরা ইনসুলিন নেন বা মুখের ওষুধ খান সেহেতু তাঁদের বিশেষ কিছু সতর্কতা অবলম্বন করতে হবে রমজান মাসে।
রোজার খাবারদাবার
সাহরি যত দূর সম্ভব দেরি করে খেতে হবে, অর্থাৎ শেষ সময়ে খেতে হবে। সাহরি না খেয়ে রোজা রাখা যাবে না।
– ইফতারে প্রচুর পরিমাণ পানি খেতে হবে, মিষ্টি জাতীয় খাবার, ভাজা-পোড়া যত দূর পারা যায় এড়িয়ে চলতে হবে।
– মিষ্টি, জিলাপি, চিনির শরবত না খেয়ে ডাবের পানি, লেবুর পানি খেতে পারেন।
ব্যায়াম
আমরা সাধারণত ডায়াবেটিসের রোগীদের ৩০-৪০ মিনিট হাঁটতে বা ব্যায়াম করতে বলি। কিন্তু রোজার মাসে দিনের বেলা ব্যায়াম করা যায় না। প্রয়োজনে ইফতারের দুই ঘণ্টা পর হাঁটা বা ব্যায়াম করা যায়। তবে ২০ রাকাত তারাবির নামাজ পড়লে আর ব্যায়াম না করলেও চলবে।
রোজা রেখে করণীয়
বাসার গ্লুকোমিটার মেশিন দিয়ে পরীক্ষা করে দেখতে হবে ব্লাড সুগার কমে যাচ্ছে বা বেড়ে যাচ্ছে কি না। ইফতারের দুই ঘণ্টা আগে, ইফতারের দুই ঘণ্টা পর এবং দিনের মধ্যভাগে ব্লাড সুগার পরীক্ষা করতে পারেন। আলেমদের মতে, রোজা রেখে ডায়াবেটিস পরীক্ষা করা যায় এবং ইনসুলিন নেওয়া যায়।
ডায়াবেটিস রোগীদের কী কী সমস্যা হতে পারে?
– ব্লাড সুগার কমে যেতে পারে। শরীর কাঁপলে, চোখে ঝাপসা দেখলে বা বুক ধরফর করলে বুঝবেন ব্লাড সুগার কমে যাচ্ছে। প্রয়োজনে রোজা ভেঙে ফেলা যাবে।
– ব্লাড সুগার বেশি বেড়ে যেতে পারে।
– পানিশূন্যতা হতে পারে।
কাদের জন্য রোজা রাখা ঝুঁকিপূর্ণ?
– যাঁদের রমজানের আগে ব্লাড সুগার কমে যাওয়ার ইতিহাস আছে
– যাঁরা কিডনি রোগী, ডায়ালিসিস নিচ্ছেন
– যাঁরা গর্ভবতী এবং ইনসুলিন নিচ্ছেন
রোজার ওষুধ ও ইনসুলিন : ডায়াবেটিস ও হরমোন রোগ বিশেষজ্ঞ (এন্ডোনাইনোলোজিস্টের) পরামর্শ অনুযায়ী রমজান মাসের জন্য ওষুধ ও ইনসুলিনের মাত্রা ও সময় ঠিক করে নেবেন।
রোজার স্বাস্থ্যগত উপকার
– শরীরের বিপাকক্রিয়া ভালো হয়
– ওজন কমে
– উচ্চ রক্তচাপ ভালো নিয়ন্ত্রণে থাকে
– রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ে
– শরীরের বর্জ্য পদার্থ নিষ্কাশিত হয়
পরামর্শ দিয়েছেন
ডা. মো. মাজহারুল হক তানিম
হরমোন ও ডায়াবেটিস বিশেষজ্ঞ
ডা. সিরাজুল ইসলাম মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতাল, মালিবাগ, ঢাকা।