বঙ্গোপসাগরে সৃষ্ট অতিপ্রবল ঘূর্ণিঝড় ‘মোখা’ রোববার তাণ্ডব চালিয়েছে উপকূলীয় জেলা কক্সবাজারে। মোখার প্রলয়ংকরী ছোবলে তছনছ হয়ে গেছে সেন্টমার্টিন ও শাহপরীর দ্বীপ এবং টেকনাফের হাজার হাজার ঘরবাড়ি। উপড়ে পড়েছে গাছপালা, বিদ্যুতের খুঁটি। সামুদ্রিক জলোচ্ছ্বাসে ভেসে গেছে কয়েকটি গ্রাম। সেন্টমার্টিন দ্বীপের ১২শ ঘরবাড়ি দুমড়ে-মুচড়ে গেছে। পুরো জেলায় ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে ১০ হাজারের বেশি বাড়িঘর। ফসল ও বিভিন্ন ফসলি বাগানের ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে। রাত ১টায় এ রিপোর্ট লেখাকালে কোনো নিহতের খবর পাওয়া যায়নি। তবে গাছপালা পড়ে কমপক্ষে ১৫ জন আহত হয়েছেন। জেলায় সাড়ে তিন লাখ মানুষ দুর্গত হয়ে পড়েছেন। উখিয়া ও টেকনাফের রোহিঙ্গা ক্যাম্পগুলোর অন্তত ৫শ ঝুপড়ি ঘর ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। দ্বীপগুলোর মানুষ দুটি দিন পার করেছেন মহা আতঙ্কে। সৃষ্টিকর্তার সাহায্য কামনা করে প্রার্থনায় মশগুল ছিলেন নারী-পুরুষ। মোখা বাংলাদেশের উপকূল অতিক্রমের সময় সাগরে ভাটা চলার কারণে বড় ধরনের জলোচ্ছ্বাস থেকে বেঁচে গেছেন সংলগ্ন এলাকার মানুষজন। দেশের অন্যান্য উপকূলীয় জেলা-উপজেলায় মোখার প্রভাবে ঝড়বৃষ্টি হলেও বড় ধরনের কোনো ক্ষয়ক্ষতির খবর পাওয়া যায়নি।
ঘূর্ণিঝড়টি রোববার বেলা ৩টার দিকে আঘাত হানে মিয়ানমারে। দেশটির রাখাইন রাজ্যের সিত্তওয়ে শহরের কাছে ২০৯ কিমি. গতিতে এটি আছড়ে পড়লে বাড়ির ছাদ ধসে অন্তত তিনজনের মৃত্যুর খবর পাওয়া গেছে।
এদিকে রোববার সন্ধ্যায় বাংলাদেশ আবহাওয়া অধিদপ্তরের (বিএমডি) সর্বশেষ বুলেটিনে বলা হয়, ঘূর্ণিঝড় মোখা দুর্বল হয়ে মিয়ানমারে স্থল গভীর নিম্নচাপে পরিণত হয়েছে। বৃষ্টি ঝরিয়ে এটি ক্রমান্বয়ে আরও দুর্বল হয়ে পড়বে। কক্সবাজার সমুদ্রবন্দরকে ১০ নম্বর মহাবিপদ সংকেত নামিয়ে ৩ নম্বর স্থানীয় সতর্ক সংকেত দেখাতে বলা হয়েছে। অন্যদিকে চট্টগ্রাম ও পায়রা সমুদ্রবন্দরকে ৮ নম্বর মহাবিপদ সংকেত নামিয়ে এর পরিবর্তে ৩ নম্বর স্থানীয় সতর্কসংকেত এবং মোংলা সমুদ্রবন্দরকে ৪ নম্বর স্থানীয় হুঁশিয়ারি সংকেতের স্থলে ৩ নম্বর স্থানীয় সতর্কসংকেত দেখাতে বলা হয়েছে।
রোববার দুপুরের দিকে আবহাওয়ার পূর্বাভাসে যখন বলা হচ্ছিল মোখা বাংলাদেশের বিস্তৃত অঞ্চলে আঘাত হানছে না এবং বঙ্গোপসাগরে ভাটা চলার কারণে জলোচ্ছ্বাসের আশঙ্কাও নেই, তখনই সবার মাঝে স্বস্তি নেমে আসে। আশ্রয়কেন্দ্রে অবস্থান করা মানুষ মূল্যবান জিনিসপত্র, গবাদি পশু নিয়ে বাড়ি ফিরে যান। জেলেরা মাছ ধরতে আবার নদী ও সমুদ্রে পাড়ি জমান। দেশব্যাপী বড় ধরনের কোনো ক্ষয়ক্ষতি ছাড়া এই ঝড় অতিক্রম করায় উপকূলীয় অঞ্চলের পাশাপাশি সারা দেশের মানুষ স্বস্তির নিঃশ্বাস ফেলেছেন। যুগান্তরের ব্যুরো ও প্রতিনিধিদের পাঠানো খবর-
কক্সবাজার : বঙ্গোপসাগরে সৃষ্ট অতিপ্রবল ঘূর্ণিঝড় মোখার তাণ্ডবে কক্সবাজার জেলায় ১০ হাজার ৪৬৯টি কাঁচা ঘরবাড়ি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে বলে জানিয়েছেন জেলা প্রশাসক মুহম্মদ শাহীন ইমরান। এর মধ্যে সেন্টমার্টিন দ্বীপের ১২০০ ঘর পুরোপুরি লন্ডভন্ড হয়েছে। আর পুরো জেলায় ২ হাজার ৫২২টি ঘর পুরোপুরি বিধ্বস্ত হয়েছে। তিনি বলেন, আগেভাগে প্রস্তুতি গ্রহণের কারণে প্রাণহানির কোনো ঘটনা ঘটেনি। প্রচুর গাছপালা পড়ে গেছে। অনেক জায়গায় বিদ্যুতের খুঁটিও ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে বলে আমরা জেনেছি।
জেলা প্রশাসন সূত্র আরও জানায়, কক্সবাজারে ৫৭টি ইউনিয়ন ও ৩টি পৌরসভা ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। আর দুর্গত মানুষের সংখ্যা ৩ লাখ ৩৪ হাজার ৬২০ জন। তবে আগেভাগে ঘূর্ণিঝড়ের পূর্বাভাস পাওয়ায় লবণের মাঠে তেমন কোনো ক্ষয়ক্ষতি হয়নি।
সরকারি-বেসরকারি ও রাজনীতিবিদসহ সবার সহযোগিতায় জেলার প্রায় আড়াই লাখ মানুষকে আশ্রয়কেন্দ্রে নিয়ে আসতে সক্ষম হয়েছেন বলে জানান ডিসি। রোববার দুপুর ১টা থেকে ঘূর্ণিঝড় মোখার তাণ্ডব শুরু হয় সেন্টমার্টিনে। তীব্র বাতাসের সঙ্গে মাঝারি বৃষ্টি রীতিমতো ভয় ধরিয়েছিল দ্বীপবাসীর মনে। কিন্তু বিকাল ৫টার দিকে বাতাসের তীব্রতা কমে এলে স্বস্তি ফিরে আসে সেন্টমার্টিনের বাসিন্দাদের মাঝে।
স্থানীয় বাসিন্দা আবদুল মালেক ও সাদ্দাম হোসেন বলেন, ঘূর্ণিঝড়ে দ্বীপের মাঝরপাড়া, কোনারপাড়া, গলাচিপা, দক্ষিণপাড়া, পশ্চিমপাড়া, উত্তরপাড়ার ৩৫০টি ঘরবাড়ি ভেঙে গেছে। বিপুল পরিমাণ গাছপালা উপড়ে গেছে।
সেন্টমার্টিন ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মুজিবুর রহমান বলেন, ঘূর্ণিঝড়ের তাণ্ডবে দ্বীপের প্রায় সব বাড়ি অর্থাৎ ১২০০ ঘরবাড়ি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। কয়েকশ গাছপালা ভেঙে গেছে। গাছপালা পড়ে ১২ থেকে ১৫ জন নারী-পুরুষ আহত হয়েছেন। তাদের স্থানীয় হাসপাতালে চিকিৎসা দেওয়া হচ্ছে।
তিনি আরও বলেন, সামুদ্রিক জলোচ্ছ্বাসে উত্তরপাড়া, পশ্চিমপাড়া ও পূর্ব দিকের বেশ কয়েকটি গ্রাম প্লাবিত হয়েছে। তিনটি ঘূর্ণিঝড় আশ্রয়কেন্দ্র, কয়েকটি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান ও ৩৭টির বেশি হোটেল, রিসোর্ট ও কটেজে অবস্থান করেন স্থানীয় প্রায় ৬ হাজার মানুষ। বেশিরভাগই শিশু ও নারী।
মসজিদে রাতভর কান্নাকাটি, প্রার্থনা : স্থানীয়রা জানান, তলিয়ে যেতে পারে সেন্টমার্টিন-এমন খবর ছড়িয়ে পড়ার পর দ্বীপজুড়ে আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়ে। এরপর শনিবার রাত পর্যন্ত অনেকে সেন্টমার্টিন ছাড়ার চেষ্টা করেও নৌযান চলাচল বন্ধ থাকায় ব্যর্থ হন। সেন্টমার্টিন রক্ষা ও জানমালের ক্ষতি থেকে বাঁচার জন্য শনিবার রাতভর মসজিদে মসজিদে তাহাজ্জুতের নামাজ পড়ে কান্নাকাটি করে আল্লাহর কাছে সাহায্য চান সেন্টমার্টিনের হাজারো বাসিন্দা। নারীরাও আশ্রয়কেন্দ্রে যে যার মতো করে নফল নামাজ পড়ে আল্লাহর কাছে প্রার্থনা করেছেন।
আবহাওয়া অধিদপ্তর থেকে বলা হয়েছিল, বঙ্গোপসাগরে সৃষ্ট ঘূর্ণিঝড় মোখার প্রভাবে চট্টগ্রাম, কক্সবাজার ও সেন্টমার্টিন দ্বীপসহ উপকূল থেকে দূরে চরগুলোর নিম্নাঞ্চলে ৮ থেকে ১২ ফুট উচ্চতার জলোচ্ছ্বাস হতে পারে। এতে পানির নিচে তলিয়ে যেতে পারে সেন্টমার্টিন। যদিও শেষ পর্যন্ত তেমনটা হয়নি।
আশ্রয়কেন্দ্র থেকে বাড়ি ফিরছে মানুষ : বাতাসের তীব্রতা কমে আসার পর রোববার বিকাল ৫টায় আশ্রয়কেন্দ্র থেকে বাড়ি ফিরতে শুরু করেছেন মানুষ। জেলা প্রশাসন বলছে, জেলায় ৬৩৬টি আশ্রয়কেন্দ্রে প্রায় আড়াই লাখ মানুষ আশ্রয় নিয়েছেন। একই সঙ্গে অর্ধলাখের বেশি গরু-ছাগলও আশ্রয়কেন্দ্রে আনা হয়।
কক্সবাজারের জেলা প্রশাসক মুহম্মদ শাহীন ইমরান বলেন, আমরা এখনো আশ্রয়কেন্দ্র থেকে মানুষকে চলে যেতে বলিনি। আমরা চাই মানুষ রাতে আশ্রয়কেন্দ্রে থাকুক। আর যাদের ঘরবাড়ি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে তারা প্রাথমিক সমাধান না হওয়া পর্যন্ত আশ্রয়কেন্দ্রে থাকতে পারবে। জেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে তাদের সহযোগিতা ও দেখভাল করা হবে।
চট্টগ্রাম : চট্টগ্রাম ও কক্সবাজার উপকূলে মোখা আঘাত হানবে এবং ৮-১০ ফুট জলোচ্ছ্বাস হতে পারে-আবহাওয়া অধিদপ্তরের এমন পূর্বাভাস ছিল। চট্টগ্রাম বন্দরে জারি করা হয় ৮নং মহাবিপৎসংকেত। এ কারণে উপকূলের মানুষের মধ্যে ছিল আতঙ্ক। প্রশাসনে ছিল সর্বাত্মক প্রস্তুতি। তবে ঘূর্ণিঝড় মোখা কক্সবাজার উপকূলে আঘাত হেনে রোববার বেলা ৩টার দিকে বিদায় নেওয়ায় রক্ষা পেয়েছে চট্টগ্রাম উপকূল। এখানকার ৬টি উপকূলীয় উপজেলা ও নগরীর উপকূলের কোথাও তেমন কোনো ক্ষয়ক্ষতির খবর পাওয়া যায়নি। চট্টগ্রামে দিনভর গুঁড়ি গুঁড়ি বৃষ্টি ও মাঝেমধ্যে দমকা হাওয়া বইছিল। জোয়ারের সময় সাগরে আছড়ে পড়ে বড় বড় ঢেউ। পতেঙ্গা সমুদ্রসৈকতে বিকালে ছিল উৎসুক মানুষের উপস্থিতি।
এদিকে সম্ভাব্য ক্ষয়ক্ষতি থেকে রক্ষায় চট্টগ্রাম বন্দর, বিমানবন্দর, জেলা প্রশাসন, সিটি করপোরেশন, স্বাস্থ্য বিভাগসহ সংশ্লিষ্ট সব সংস্থার প্রস্তুতি ছিল চোখে পড়ার মতো। শুক্রবার রাত থেকেই চট্টগ্রাম বন্দরের সব ধরনের অপারেশনাল কার্যক্রম বন্ধ ছিল। শনিবার সকালে চট্টগ্রাম শাহ আমানত আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর বন্ধ ঘোষণা করা হয় ৪২ ঘণ্টার জন্য। চট্টগ্রাম নগরী ও জেলায় সহস্রাধিক আশ্রয়কেন্দ্র প্রস্তুত করা হয়। তৈরি ছিল জেলা সিভিল সার্জনের ২৮৪টি মেডিকেল টিম। তবে কোনো আঘাত না করেই মোখা বিদায় নেওয়ায় উপকূলের মানুষের মধ্যে ফিরে আসে স্বস্তি। হাঁফ ছেড়ে বাঁচে প্রশাসন।
টেকনাফ (কক্সবাজার) : রোববার দুপুর থেকে প্রচণ্ড বাতাস আর বৃষ্টিতে সেন্টমার্টিনে ফুঁসে ওঠে সাগরের পানি। আতঙ্কে ১৭টি আশ্রয়কেন্দ্র ছাড়াও বিভিন্ন বড় বড় দালানে আশ্রয় নেন ৫ হাজারের বেশি মানুষ। মোখার প্রভাব কেটে যাওয়ায় খুশিতে মহান আল্লাহর কাছে কেঁদে কেঁদে প্রার্থনা করেন অনেকে। আবার কেউ কেউ কুরআন শরিফ পড়েন বলে জানিয়েছেন স্থানীয় বাসিন্দা হাসান আলী। টেকনাফ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো. কামরুজ্জামান জানান, সেন্টমার্টিন ও টেকনাফে অধিকাংশ মানুষ আশ্রয়কেন্দ্রে আশ্রয় নেন। সবার জন্য শুকনো খাবারের ব্যবস্থা করা হয়।
বরিশাল : জেলার উপকূলীয় ও নিম্নাঞ্চলে ঘূর্ণিঝড়ের হালকা প্রভাব পড়লেও অন্যান্য অঞ্চলে তেমন প্রভাব পড়েনি। কিছু এলাকায় গুঁড়ি গুঁড়ি বৃষ্টি হয়েছে। বরিশাল থেকে লঞ্চসহ সব ধরনের নৌযান চলাচল বন্ধ রাখে বিআইডব্লিউটিএ কর্তৃপক্ষ। পরবর্তী নির্দেশ না দেওয়া পর্যন্ত ছোট-বড় সব ধরনের নৌযান চলাচল বন্ধ থাকবে বলে জানিয়েছেন বরিশাল নদীবন্দর কর্মকর্তা আব্দুর রাজ্জাক। সন্ধ্যা পর্যন্ত বরিশাল বিভাগে হতাহতের কোনো খবর পাওয়া যায়নি।
খুলনা : মোখার আঘাত হানার আশঙ্কা কেটে যাওয়ায় স্বস্তি ফিরেছে খুলনার উপকূলের মানুষের মাঝে। আবারও বেড়িবাঁধ ভাঙনের আতঙ্ক নিয়ে দিন পার করছিল মানুষ। তবে ঝড়ের গতিপথ পরিবর্তন হওয়ায় সেই শঙ্কা কেটেছে। রোববার খুলনার আকাশ ছিল মেঘমুক্ত। ঘূর্ণিঝড়ের ক্ষয়ক্ষতি মোকাবিলায় খুলনায় ব্যাপক প্রস্তুতি নেওয়া হয়। একই প্রস্তুতি ছিল বাগেরহাট ও সাতক্ষীরায়।
সিলেট : ঘূর্ণিঝড় আঘাত না হানলেও এর প্রভাবে ভারী বর্ষণ হতে পারে। তাই ভূমিধসের আশঙ্কায় সিলেটের ঝুঁকিপূর্ণ এলাকায় বসবাসকারীদের দ্রুত সরিয়ে নেওয়ার নির্দেশ দিয়েছে জেলা প্রশাসন। পাহাড় ও টিলার পাদদেশে বসবাসকারীদের আশ্রয়কেন্দ্রে নিতে বলা হয়েছে। জেলার সব উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তাদের এ নির্দেশনা দেওয়া হয়।
হাতিয়া (নোয়াখালী) : মোখার প্রভাবে উত্তাল সাগরের বড় বড় ঢেউ উপকূলে আছড়ে পড়ে। রাতে স্বল্পসংখ্যক মানুষ আশ্রয়কেন্দ্রে থাকলেও সকাল থেকে তারা বাড়ি ফিরে যেতে শুরু করেন।
লক্ষ্মীপুর : লক্ষ্মীপুরে গুঁড়ি গুঁড়ি বৃষ্টি হয়েছে। তবে নদী শান্ত থাকায় জেলেরা মাছ শিকারে নৌকা ভাসিয়েছেন। বেড়িবাঁধ না থাকায় উপকূলীয় বাসিন্দারা নদীভাঙনের আতঙ্কে ছিলেন। তবে কোনো ক্ষয়ক্ষতির খবর পাওয়া যায়নি।
কয়রা (খুলনা) : ঝড়ের আতঙ্ক না থাকলেও নদীভাঙনের আতঙ্কে কয়রার মানুষের কেটে গেল একটি দিন। জলোচ্ছ্বাস থেকে রক্ষার বেড়িবাঁধগুলো অরক্ষিত থাকায়, ঝড়ে আবারও প্লাবনের আশঙ্কায় ছিলেন তারা। কয়রাবাসী বলছেন, বাঁধ স্থায়ী করতে নদী শাসনের বিকল্প নেই। স্থানীয় সংসদ-সদস্য মো. আক্তারুজ্জামান বাবু বলেন, কয়রার ঝুঁকিপূর্ণ বাঁধগুলো পর্যায়ক্রমে সংস্কার করে ঝুঁকিমুক্ত করার চেষ্টা চলছে।
ব্রাহ্মণবাড়িয়া : জেলার আশুগঞ্জ আন্তর্জাতিক নদীবন্দরের কার্যক্রম বন্ধ করে দেওয়া হয়। এ ছাড়াও পণ্যবাহী কার্গো জাহাজ থেকে পণ্য খালাস বন্ধ রয়েছে। ফলে বন্দরে আটকা পড়েছে রড, সিমেন্ট, সারসহ বিভিন্ন পণ্য নিয়ে আসা শতাধিক মালবাহী কার্গো জাহাজ।
চাঁদপুর : মেঘনা নদীর মোহনায় গিয়ে দেখা গেছে, নদী উত্তাল হওয়ায় নৌযানের সংখ্যা খুবই কম। ৫ শতাধিক লোক হরিণা চালতাতলী এডওয়ার্ড স্কুলসংলগ্ন সাইক্লোন সেন্টারে আশ্রয় নেন। রোববার তারা বাড়ি ফিরে যান।
রাজশাহী : মোখার প্রভাবে রাজশাহীতে শনিবার থেকে শুরু হয়েছে বিদ্যুৎ বিপর্যয়। তীব্র তাপপ্রবাহের মধ্যে লোডশেডিংয়ে দুর্ভোগে পড়েছেন রাজশাহীবাসী। জানা গেছে, মোখার প্রভাবে মহেশখালীর দুটি ভাসমান এলএনজি টার্মিনাল থেকে শনিবার রাত ১১টা থেকে গ্যাস সরবরাহ বন্ধ রয়েছে। তাই গ্যাসচালিত বিদ্যুৎকেন্দ্র-চট্টগ্রাম, মেঘনাঘাট, হরিপুর এবং সিদ্ধিরগঞ্জ এলাকার বিদ্যুৎকেন্দ্রগুলো বন্ধ বা আংশিক চালু থাকায় উৎপাদনে ঘাটতি দেখা দেয়। তাই ঢাকাসহ দেশের অনেক জায়গাতেই নিরবচ্ছিন্ন বিদ্যুৎ সরবরাহ করা সম্ভব হচ্ছে না।