বাফুফের দুর্নীতির অভিযোগ অনুসন্ধানের নির্দেশ

ফুটবলের আন্তর্জাতিক নিয়ন্তা সংস্থা ফিফা ও সরকারের কাছ থেকে তহবিলে বাংলাদেশ ফুটবল ফেডারেশন -বাফুফে যে টাকা পেয়েছে, সে টাকা খরচে জালিয়াতি, আত্মসাত, বা তছরুপের মত দুর্নীতি হয়েছে কিনা, তা অনুসন্ধানের নির্দেশ দিয়েছেন হাইকোর্ট। দুর্নীতি দমন কমিশন -দুদককে এ নির্দেশ দিয়ে চার মাসের মধ্যে প্রতিবেদন দিতে বলা হয়েছে। 

বাফুফের সভাপতি কাজী মোহাম্মদ সালাউদ্দিনসহ শীর্ষ কর্মকর্তাদের বিরুদ্ধে জালিয়াতি, অর্থপাচার, আত্মসাতসহ দুর্নীতির অভিযোগ ওঠার প্রেক্ষিতে গতকাল রবিবার এ রিট করেন সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী সায়েদুল হক সুমন। আজ সোমবার সে রিটে প্রাথমিক শুনানির পর বিচারপতি মো. নজরুল ইসলাম তালুকদার ও বিচারপতি খিজির হায়াতের দ্বৈত বেঞ্চ রুলসহ এই আদেশ দেন।

আদালত রিটের পক্ষে আইনজীবী সুমন নিজেই শুনানি করেন। দুদকের পক্ষে আইনজীবী মো. খুরশীদ আলম খান ও বাফুফের পক্ষে মো. সাইফুল্লাহ মামুম শুনানি করেন। আর নিষিদ্ধ হওয়া বাফুফের সাবেক সাধারণ সম্পাদক আবু নাঈম সোহাগের পক্ষে শুনানি করেন আইনজীবী মাগরুব কবির। 

আদেশের পর সায়েদুল হক সুমন সাংবাদিকদের বলেন, ‘ফিফা এবং সরকার থেকে বাফুফে যে টাকা পেয়েছে, সে টাকা দিয়ে বাফুফে কি করেছে তা অনুসন্ধান করে চার মাসের মধ্যে প্রতিবেদন দিতে বলেছেন হাইকোর্ট।’

সুমন বলেন, ‘বাফুফের সাধারণ সম্পাদক আবু নাঈম সোহাগকে নিষিদ্ধ করার মধ্য দিয়ে নিশ্চিত করেছে যে, বাফুফেতে দুর্নীতি হয়। তাই আমরা চাই দুর্নীতির এই অভিযোগ বিচারের আওতায় আসুক।’

দুদকের আইনজীবী খুরশীদ আলম খান বলেন, ‘আমরা মনে করি ফিফার টাকা তছরুপ হলে সে অভিযোগ অনুসন্ধান দুদকের এখতিয়ার বহির্ভূত। কারণ ফিফা যে টাকাটা বাফুফেকে দিয়েছে তা কতগুলো শর্তের ভিত্তিতে দিয়েছে। ফিফাভুক্ত সব দেশকেই তহবিল থেকে এমন টাকা দিয়ে থাকে। কিন্তু যুব ও ক্রিড়া মন্ত্রণালয় যে টাকা দেয় তা যদি তছরুপ হয়ে থাকে সে অভিযোগ অনুসন্ধান বা তদন্ত করার শতহভাগ এখতিয়ার দুদকের আছে। সুতরাং সরকারের টাকা বাফুফে তছরুপ হয়েছে কিনা সে তদন্ত দুদক করবে।’  

বাফুফে সভাপতি কাজী মোহাম্মদ সালাউদ্দিন, সহভাপতি আব্দুস সালাম মুর্শেদী ও আবু নাঈম সোহাগের বিরুদ্ধে অর্থ পাচার, জালিয়াতি, অর্থ আত্মসাতের অনুসন্ধানে প্রয়োজনীয় আইনি পদক্ষেপ নিতে বিবাদীদের ব্যর্থতা ও নিষ্ক্রিয়তা কেন আইনগত কর্তৃত্ব বর্হিভূত হবে না, জানতে চাওয়া হয়েছে রুলে। 

যুব ও ক্রীড়া মন্ত্রণালয়ের সচিব, বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্ণর, দুর্নীতি দমন কমিশন -দুদকের চেয়ারম্যান, বাংলাদেশ ফাইন্যান্সিয়াল ইন্টেলিজেন্স ইউনিট -বিএফআইইউ প্রধান, জাতীয় রাজস্ব বোর্ড -এনবিআর’র চেয়ারম্যানসহ বাফুফের কর্মকর্তাদের রিটে বিবাদী করা হয়েছে। 

বাফুফের শীর্ষ কর্মকর্তাদের বিরুদ্ধে ওঠা দুর্নীতি অভিযোগ অনুসন্ধান করতে গত ৩ এপ্রিল দুদকে আবেদন করেন সুমন। সে আবেদনের পর এ বিষয়ে সংস্থাটির কোনো পদক্ষেপ না থাকায় হাইকোর্টে রিট করেন তিনি।   

আর্থিক অনিয়ম এবং কাগজ জালিয়াতির দায়ে গত ১৪ মে বাফুফের সাধারণ সম্পাদক আবু নাইম সোহাগকে সব ধরনের কার্যক্রম থেকে দুই বছরের জন্য নিষিদ্ধ করে ফুটবলের নিয়ন্ত্রক সংস্থা ফিফা। দেশি মুদ্রায় প্রায় ১২ লাখ টাকা জরিমানাও করা হয় তাকে। এরপর ১৭ এপ্রিল ইমরান হোসেন তুষারকে ভারপ্রাপ্ত সাধারণ সম্পাদকের দায়িত্ব দিয়ে সোহাগকে আজীবনের জন্য নিষিদ্ধ করে বাফুফে।

LEAVE A REPLY