বিনা মূল্যে চোখের আলো ফিরে পেলেন ৪১ জন

চোখের অপারেশন করা হচ্ছে

মিছিল মিয়ার চোখে ছানি পড়েছে। পৃথিবীর সব কিছুই তার চোখে অস্পষ্ট। স্থানীয় চিকিৎসক ছানি অপারেশনের পরামর্শ দিলেও অর্থের অভাবে কিছুতেই তার পক্ষে অপারেশন করা সম্ভব হচ্ছিল না। অবশেষে বসুন্ধরা আই হসপিটাল অ্যান্ড রিসার্চ ইনস্টিটিউটে তার চোখের ছানি অপারেশন হলো সম্পূর্ণ বিনা মূল্যে।

মিছিল মিয়ার গ্রামের বাড়ি কিশোরগঞ্জের বাজিতপুর উপজেলার সরারচরে। তিনি বলেন, ‘চোখের ছানি অনেক দিন হয়। সব কিছু ঝাপসা দেখতাম। ডাক্তারও বলেছে অপারেশন করতে কিন্তু টাকা-পয়সা নাই, তাই করতে পারি নাই। শেষে এখানে করলাম। উনারাই, আসা থেকে শুরু করে থাকা-খাওয়া সব ব্যবস্থা করছেন। আমার কোনো টাকা লাগেনি।’

শুধু মিছিল মিয়া নয়, গরিব-দুস্থ এমন ৪১ জন রোগীর বিনা মূল্যে চোখের ছানি, মাংস বৃদ্ধি ও নেত্রনালির অপারেশন করেছে বসুন্ধরা আই হসপিটাল অ্যান্ড রিসার্চ ইনস্টিটিউট। আজ বৃহস্পতিবার বসুন্ধরা আবাসিক এলাকার সাবরিনা সোবহান রোডে অবস্থিত বসুন্ধরা আই হসপিটাল অ্যান্ড রিসার্চ ইনস্টিটিউট, ভিশন কেয়ার ফাউন্ডেশন ও মইনউদ্দিন-মুক্তারউদ্দিন ওয়েলফেয়ার সোসাইটির উদ্যোগে দিনব্যাপী বিনা মূল্যে এসব অপারেশন করা হয়।

বসুন্ধরা আই হসপিটাল অ্যান্ড রিসার্চ ইনস্টিটিউটের অবৈতনিক পরিচালক ও ভিশন কেয়ার ফাউন্ডেশনের সভাপতি প্রফেসর ডা. মো. সালেহ আহমদের তত্ত্বাবধানে এ সার্জারিতে অংশ নেন ডা. রুবিনা আক্তার, ডা. মজুমদার গোলাম রাব্বি, ডা. তাসরুবা শাহনাজ ও ডা. জেরিন পারভিন।

হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ জানায়, গত ১৪ মার্চ কিশোরগঞ্জের বাজিতপুর উপজেলার খনারচর নয়াহাটি মোড়ে বসুন্ধরা আই হসপিটাল অ্যান্ড রিসার্চ ইনস্টিটিউট, ভিশন কেয়ার ফাউন্ডেশন ও মইনউদ্দিন-মুক্তারউদ্দিন ওয়েলফেয়ার সোসাইটির উদ্যোগে বিনা মূল্যে চক্ষু চিকিৎসা ক্যাম্প অনুষ্ঠিত হয়। সেখানে চোখের চিকিৎসা নিতে আসা ৫৫০ জন রোগী সেবা দেওয়া হয়। তাদের মধ্যে ১৫০ জনকে চোখের ছানি, মাংস বৃদ্ধি ও নেত্রনালির অপারেশনের জন্য নির্বাচিত করা হয়। এর মধ্যে থেকে আজ বৃহস্পতিবার সেই ক্যাম্পের প্রথম ধাপের ৪১ জন রোগীর অপারেশন করা হচ্ছে।

কর্তৃপক্ষ আরো জানায়, বিনা মূল্যে অপারেশন করতে আসা ৪১ জন রোগীর মধ্যে ১৬ জন পুরুষ ও ২৫ জন নারী। তাদের মধ্যে ৩৮ জনের চোখের ছানি, একজনের চোখের মাংস বৃদ্ধি ও দুজনের চোখের  নেত্রনালির অপারেশন করা হয়েছে।

বসুন্ধরা আই হসপিটাল অ্যান্ড রিসার্চ ইনস্টিটিউটের অবৈতনিক পরিচালক ও ভিশন কেয়ার ফাউন্ডেশনের সভাপতি প্রফেসর ডা. মো. সালেহ আহমদ বলেন, ‘প্রতি মাসে আমরা দেশের বিভিন্ন  জেলা ও উপজেলায় বিনা মূল্যে চক্ষু চিকিৎসার ক্যাম্প করে থাকি। ক্যাম্পে যাদের অপারেশন প্রয়োজন তাদের আমরা নির্বাচিত করে আমাদের হাসপাতালে নিয়ে আসি। বিনা মূল্যে চোখের অপারেশনের পাশাপাশি আমরা তাদের আনা-নেওয়া ও খাওয়াদাওয়ার ব্যবস্থা করে থাকি।’

এ বিষয়ে বসুন্ধরা আই হসপিটাল অ্যান্ড রিসার্চ ইনস্টিটিউটের ম্যানেজার (এইচআর অ্যান্ড অ্যাডমিনিস্ট্রেশন) মোহাম্মদ আহসান হাবীব বলেন, ‘গরিব, দুস্থ ও অন্ধ রোগীদের চক্ষু চিকিৎসার সাহায্যার্থে এ উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। দুস্থদের সেবায় আগে থেকেই এ ধরনের প্রক্রিয়া চলে আসছে। সারা দেশে বিনা মূল্যে এ ক্যাম্প অনুষ্ঠিত হচ্ছে। এ পর্যন্ত ক্যাম্পের মাধ্যমে প্রায় দুই হাজার ৩৮০ জনের বেশি রোগীর বিনা মূল্যে অপারেশন করা হয়েছে।’

LEAVE A REPLY