চীনের রপ্তানিকৃত পণ্যে ৫ কোটি টাকার কর ফাঁকি!

চীন বরাবরই কোনো না কোনো কারণে বাংলাদেশে খবরের শিরোনাম হয়। গত দুই বছরে চীন বা বাংলাদেশভিত্তিক চীনা সংস্থাগুলোর মাধ্যমে কর ফাঁকির প্রচেষ্টার বেশ কয়েকটি ঘটনা সামনে এসেছে। 

অন্যান্য ঘটনার মধ্যে মিথ্যা ঘোষণার অধীনে চীন থেকে বাংলাদেশে পণ্য রপ্তানির বিষয়টি ঢাকার জন্য একটি প্রধান উদ্বেগের কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে। কারণ শুল্ক ফাঁকি দেওয়ায় দেশের কোষাগারের ব্যাপক ক্ষতি হচ্ছে।

সম্প্রতি এমন একটি ঘটনা ঘটেছে বাংলাদেশভিত্তিক কোম্পানি হান্স ট্রেড ইন্টারন্যাশনালের ক্ষেত্রে। ৫ কোটি টাকার রাজস্ব ফাঁকি দিতে মিথ্যা ঘোষণায় চীন থেকে পণ্য আমদানির অভিযোগ উঠেছে প্রতিষ্ঠানটির বিরুদ্ধে।

জানা গেছে, বাংলাদেশ সরকারের সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ তদন্তে দেখতে পেয়েছে যে, কোম্পানিটি চীন থেকে ক্যালসিয়াম কার্বনেট আমদানির ঘোষণা দিয়েছে। তবে অনুসন্ধানের সময় দেখা গেছে, প্রতিটি ব্যাগের ভেতরে ক্যালসিয়াম কার্বনেটের আলাদা আলাদা সিল করা বাক্স রয়েছে। সংস্থাটির ক্যালসিয়াম কার্বনেটের ব্যাগের নিচে লুকানো বাক্সগুলো থেকে মোট ১ দশমিক ৭ মিলিয়ন টুকরো পেন্সিল ব্যাটারি এবং ১৮ মেট্রিক টন তালা পাওয়া গেছে।

কর্তৃপক্ষ জানায়, ক্যালসিয়াম কার্বনেট আমদানির ঘোষণার আওতায় কোম্পানিটি ৫ কোটি টাকার কর ফাঁকি দিতে পেন্সিল ও তালা নিয়ে এসেছে। তদন্ত অনুসারে, ওই কোম্পানি এবং দায়ী ব্যক্তিদের বিরুদ্ধে কর ফাঁকি ও অর্থ পাচারের মামলা করার প্রক্রিয়া শুরু করা হয়েছে। 

ক্যালসিয়াম কার্বোনেট আমদানির মিথ্যা ঘোষণার অনুরূপ গুয়াংডংভিত্তিক চীনা কোম্পানি সিনো-কেমেড ট্রেডিং কোম্পানি ২০২২ সালে মে মাসে তাদের ঢাকাভিত্তিক সহযোগী এনবি ট্রেডিং হাউস-এর কাছে প্রলেপকৃত ক্যালসিয়াম কার্বনেটের চালান পাঠানোর ঘোষণা দিয়েছিল। 

তবে বাংলাদেশের কর্মকর্তারা চালানটি থেকে ১২০ টন উচ্চ মূল্যের ডেক্সট্রোজ মনোহাইড্রেট উদ্ধার করেছিলেন। ডেক্সট্রোজ বাদামী কার্টনের ভেতরে লুকিয়ে রাখা হয়েছিল। যদিও লেবেল অনুযায়ী ভেতরে ক্যালসিয়াম কার্বনেটের প্রলেপ ছিল। চালানটি চীনের কিনগাডো বন্দর থেকে চট্টগ্রাম বন্দরে এসেছিল। সময়মতো ধরা না পড়লে বাংলাদেশ ব্যাংকের সরকারি কোষাগারের ৪২ লাখ ১৩ হাজার টাকার ক্ষতি হতো। 

এ ছাড়া ২০২২ সালের সেপ্টেম্বরে বাংলাদেশের কর্তৃপক্ষ একটি কন্টেইনার জব্দ করেছিল, যাতে চীন থেকে রপ্তানি করা টেক্সটাইল ডাই স্টাফ থাকার কথা ছিল। তবে কন্টেইনারটি খুললে দেখা যায়, সাত কোটি টাকার প্রায় ৯০০ প্যাকেট বিদেশি সিগারেট ছিল।

LEAVE A REPLY