বন্যায় গায়েব ইতালির পথঘাট

টানা এক সপ্তাহের বন্যায় গায়েব ইতালির উত্তর-পূর্বাঞ্চলের পথঘাট! একটি দুটি নয়, ভারী বৃষ্টিপাতে একসঙ্গে ২৩টি নদীর পানি উপচে ভেসে গেছে বেশ কয়েকটি অঞ্চল। সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে এমিলিয়া রোমাগনা এলাকা। 

গত ৩৬ ঘণ্টায় ছয় মাসের সমান বৃষ্টি হয়েছে এমিলিয়া রোমাগনাতে। শহরের রাস্তাঘাট পানিতে তলিয়ে নদীতে রূপ নিয়েছে। ৩০৫টি ভূমিধস এবং বন্যার কারণে ৫০০টিরও বেশি বড় বড় সড়ক ভেসে গেছে। অদৃশ্য হয়ে আছে হাজার হাজার গলি-ঘুপচি, ছোট-মাঝারি পথঘাট। অবস্থা এমন যে, আদৌ সেখানে রাস্তা ছিল কিনা তা বোঝার সাধ্য নেই কারও। ডুবে থাকা এসব সড়ক সংস্কার মেরামতে কয়েক মাস বা বছরও লেগে যেতে পারে বলেও ধারণা করছে স্থানীয় প্রশাসন।  
চলমান এ বন্যাকে দেশটির  গত এক শতাব্দীর মধ্যে সবচেয়ে ভয়াবহ বলে বর্ণনা করা হয়েছে। বন্যায় গৃহহীন হয়েছে প্রায় ৩৬ হাজার মানুষ। বিপন্ন হয়ে পড়েছে মানবজীবন। 

এতটাই দুর্বিষহ হয়ে পড়েছে যে, ইভানা কাসাদেই নিজেকে ভাগ্যবান মনে করছেন। কারণ তার কাছে অন্তত থাকার জায়গাটুকু আছে যা অনেকের কাছেই নেই। এমিলিয়া-রোমাগনা উত্তর ইতালির একটি শহর যা এখনো রেড অ্যালার্টে আছে। এখানকার ১৪ জন বাসিন্দা প্রাণ হারিয়েছেন। শহরজুড়ে যেন চলছে ধ্বংসযজ্ঞের খেলা। একটি হেলিকপ্টার ক্ষতিগ্রস্ত বাড়িগুলোতে বিদ্যুৎ পুনরুদ্ধারের চেষ্টা করছিল। কিন্তু হলো না। শেষ পর্যন্ত সেটিও বিধ্বস্ত হয়ে পরে। ফলে এতে থাকা চারজনের মধ্যে একজন আহত হন। 

গৃহহীনদের অনেকেই আশ্রয় নিয়েছেন প্রতিবেশী এবং বন্ধুদের কাছে, অনেকেই আবার আশ্রয় নিয়েছেন হোটেলে। অনেক মানুষ অস্থায়ী আশ্রয়কেন্দ্রেও অবস্থান নিয়েছেন। সেসেনার মেয়র এনজ লাতুকা বলেন, ঝড়ের ২৪ ঘণ্টা আগে এলাকার লোকজনকে সতর্কতা দেওয়া হয়েছিল। যাতে তারা আশ্রয় নিতে পারে। যদিও পাহাড়ের পাশের গ্রামের লোকজন তাদের বাড়ি থেকে আসতে চাইছিলেন না। বন্যার কবল থেকে মানুষকে সহায়তা করার জন্য উদ্ধারকারীরা হাজার হাজার স্বেচ্ছসেবকদের সাথে যোগ দেন। তারা বিপদগ্রস্ত মানুষদের খাদ্য এবং পোশাক দেওয়ার জন্য নিরলস চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছেন। এমনকি তারা পথঘাট পরিষ্কারের জন্যও চেষ্টার কোনো কমতি রাখছেন না। এমনকি সৈকত ক্লাবের মালিকরাও রিসোর্টগুলো দ্রুত পরিষ্কারের চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছেন। 

LEAVE A REPLY