মণিপুরে ফের সহিংসতা, হতাহত ২, তিন দিনের জন্য যাচ্ছেন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী

মণিপুরজুরে বাড়ি পুড়িয়ে দেওয়া হয়েছে। ছবি : এএনআই ; তিন দিনের সফরে যাচ্ছেন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ (ফাইল ছবি)

ভারতের মণিপুর রাজ্যে অশান্তি থামার নাম নেই। নতুন করে সংঘর্ষে এক ব্যক্তির মৃত্যুর খবর পাওয়া গেছে। আহত হয়েছেন আরো এক ব্যক্তি। এই ঘটনার জেরে নতুন করে কারফিউ জারি হয়েছে।

টহল দিচ্ছে নিরাপত্তা বাহিনী। নতুন করে উত্তপ্ত হয় মণিপুরের বিষ্ণুপুর। চূড়াচাঁদপুরের সঙ্গে বিষ্ণুপুরের সীমানা এলাকায় বুধবার জঙ্গিদের সঙ্গে একদল মানুষের সংঘর্ষ বাধে। তাতেই একজনের মৃত্যু হয়।

গুরুতর আহত অবস্থায় একজনকে হাসপাতালে ভর্তি করানো হয়েছে। বৃহস্পতিবার এমনই জানিয়েছে পুলিশ।

এ ছাড়াও বুধবার মণিপুরের জনস্বাস্থ্য কারিগরি মন্ত্রী তথা রাজ্যের অন্যতম বিজেপি নেতা কোনথৌজাম গোভিনদাসের বিষ্ণুপুরের বাড়িতে হামলা চালান স্থানীয়দের একাংশ। তাদের অভিযোগ, সহিংসতা চলাকালীন প্রশাসনের যে সদর্থক ভূমিকা নেওয়ার কথা ছিল, তা নেওয়া হয়নি।

যদিও সেই সময় বাড়িতে বিজেপি নেতা বা তার কোনো পরিজন ছিলেন না। হামলার ঘটনার নেতৃত্বে ছিলেন এলাকার নারীরা। মণিপুরে কুকি বনাম মেইতেই সংঘর্ষের ঘটনায় এই প্রথম কোনো মন্ত্রীর বাড়িতে হামলার ঘটনা ঘটল।

এদিকে এদিনই মণিপুরে যাওয়ার কথা জানিয়ে দিলেন দেশটির কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ। শুধু রাজ্য সফরই নয়, মণিপুরে গিয়ে কয়েক দিন থেকে স্থানীয় মানুষের সঙ্গে কথা বলারও ইচ্ছা প্রকাশ করেছেন তিনি।

অমিত শাহ বলেন, ‘কিছুদিনের মধ্যেই আমি নিজে মণিপুর যাব। সেখানে আমি তিন দিন থাকব এবং শান্তি প্রতিষ্ঠার লক্ষ্যে মণিপুরের বাসিন্দাদের সঙ্গে কথা বলব।’

মণিপুরে সহিংসতার ঘটনা নিয়েও বৃহস্পতিবার মুখ খুলেছেন শাহ। তিনি বলেন, ‘আদালতের একটি নির্দেশের পর মণিপুরে সংঘর্ষের ঘটনা ঘটেছে। আমি দুই পক্ষের কাছেই আবেদন করতে চাই, দয়া করে শান্তি বিঘ্নিত হয় এমন কোনো কাজ করবেন না। সকলেই সুবিচার পাবেন, তা আমি আশ্বস্ত করছি।’

গত মঙ্গলবার থেকে নতুন করে অশান্তি মাথাচাড়া দিচ্ছে মণিপুরে। মঙ্গলবার রাতে এক পক্ষ বিষ্ণুপুর জেলার একটি গ্রামের কয়েকটি বাড়িতে আগুন ধরিয়ে দেয়। তার পর থেকে এলাকায় নতুন করে উত্তেজনা ছড়ায়। ঘরছাড়া মানুষ আশ্রয় নেন মৈরাংয়ের শিবিরে। বুধবার শিবিরে খবর আসে, অপর পক্ষ গ্রামের একটি স্কুলে আগুন লাগানোর পরিকল্পনা করছে। তাতেই ক্ষিপ্ত হয়ে গ্রামের দিকে ছুটে যান শিবিরের আশ্রয় প্রার্থীরা। পথে দুই পক্ষই মুখোমুখি পড়ে যায়। শুরু হয় তুমুল সংঘর্ষ। আহত হন তৈজাম এবং লেইচোমবাম। পরে তৈজামের মৃত্যু হয়।

মেইতেই সম্প্রদায়ের তফসিলি আদিবাসী তকমার দাবির বিরোধিতা করে গত ৩ মে মণিপুরে ট্রাইবাল সলিডারিটি মার্চ নামে একটি মিছিলের আয়োজন করা হয়। গোলমালের শুরু সেখানেই। তারপর থেকেই তা রাজ্যজুড়ে ছড়িয়ে পড়তে শুরু করে। সেই সংঘর্ষে এখনো পর্যন্ত ৭০ জনেরও বেশি মানুষ প্রাণ হারিয়েছেন। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে ১০ হাজার সেনা সদস্যও মোতায়েন করা হয়েছে উত্তর-পূর্বের ছোট রাজ্যে। কিন্তু কিছুতেই সহিংসতার ঘটনায় লাগাম পরানো যাচ্ছে না।

সূত্র : আনন্দবাজার পত্রিকা

LEAVE A REPLY