ভারতজুড়ে আবার হইচই। আবার ‘নোটবন্দি’ (ডিমানিটাইজেশন)। সরকার বলছে-না, এটা ‘নোটবন্দি’ নয়। সর্বোচ্চ কারেন্সি ২ হাজার রুপির নোট বাজার থেকে তুলে নেওয়া হচ্ছে মাত্র। সময় দেওয়া হয়েছে বেশ, প্রায় চার মাসের মতো। সেপ্টেম্বর পর্যন্ত। ওই পর্যন্ত দুই হাজার রুপির নোট ‘লিগ্যাল কারেন্সি’ থাকবে, অর্থাৎ বৈধ নোট। এ সময়ের মধ্যে সাধারণ মানুষ ওই নোট ব্যাংক থেকে ভাঙিয়ে সমপরিমাণের অন্য নোট নিতে পারবেন।
কোনো রকম বাধা নেই আগের মতো, অর্থাৎ ১ হাজার রুপির নোট বাতিলের মতো। সেটা ৬-৭ বছর আগের কথা। তখনকার ঝক্কির কথা মনে করে মানুষ ‘কনফিউজ্ড’। ঘটনাটা কী? মিডিয়া এতে আগুন ঢালছে। সারা দিন ধরে বিতর্ক। হঠাৎ কেন এ সিদ্ধান্ত? আবার কি ‘কালোটাকা’ ধরার ফাঁদ পাতা হয়েছে? কে আসলে টার্গেট। ভারতের কেন্দ্রীয় ব্যাংক বলছে, ‘ক্লিন নোট পলিসির’ আওতায় এটা করা হয়েছে। ২ হাজার রুপির নোট ছাপানো বন্ধ কয়েক বছর ধরে। ধীরে ধীরে বাজারে ওই নোটের সংখ্যা কমছে। ব্যাংকের কাছে পুরোনো নোট বদলে দেওয়ার মতো নতুন ২ হাজার রুপির নোট নেই।
অতএব, বর্তমান ২ হাজার রুপির নোট বাজার থেকে তুলে (উইথড্র) নেওয়ার সিদ্ধান্ত হয়েছে। এটা কোনোভাবেই ‘ডিমানিটাইজেশন’ নয়। সাধারণ মানুষ যে কোনো ব্যাংক থেকে ব্যাংকিং সময়ের মধ্যে তাদের নিজ নিজ নোট বদলে নতুন অন্য নোট নিতে পারবেন।
না, এত আশ্বাস দেওয়ার পরও মানুষের মনের সন্দেহ যাচ্ছে না। আলোচনার শেষ নেই। পণ্ডিতদের দিন চলছে এখন। ‘টকশো’ আর ‘টকশো’। এর মধ্যে ইন্ধন জোগাচ্ছেন বিরোধীদলীয় নেতারা। তারা এ পদক্ষেপের মধ্যে সরকারের হীন উদ্দেশ্য আবিষ্কার করছেন। কেউ কেউ আবার বলছেন, ২০২৪ সালের নির্বাচনের সময় ২ হাজার রুপির নোট দিয়ে যাতে ভোটারদের ‘ঘুস’ দেওয়া না যায়, তার জন্যই এ ব্যবস্থা করা হয়েছে। আবার কেউ কেউ পশ্চিমবঙ্গের মন্ত্রীদের কাণ্ড থেকে শিক্ষা নিচ্ছেন। সেখানে অবৈধভাবে অর্জিত কোটি কোটি রুপি পাওয়া যাচ্ছে গরু চোরাচালানি, ‘চোর’ মন্ত্রীদের কাছ থেকে। এর থেকে শিক্ষা নিয়েই বর্তমান পদক্ষেপ।
বলাবাহুল্য, একই কথা বলে ১ হাজার রুপির নোট বাতিল করা হয়েছিল ২০১৬ সালের দিকে। সে যাই হোক, বিতর্কের কোনো শেষ নেই। বহু মানুষের ঘুম নষ্ট হয়ে গেছে। অনেকে আছেন ভয়ে ভয়ে। কোথায় কোন ব্যাংকে কত টাকা বদল করতে যাওয়া যায়। এদিকে গরিব মানুষ বলছে, ‘এটা আমাদের বিষয় নয়; ২ হাজার রুপির নোট আমাদের হাতে নেই।’ এই হচ্ছে ভারতের বর্তমান নোট-বিতর্ক।
বলা বাহুল্য, আমাদের এখানে এসব নোট-বিতর্ক নেই। ‘নোটবন্দি’ অথবা নোট তুলে নেওয়ারও কোনো প্রসঙ্গ নেই। কেউ এসব নিয়ে কথাও বলে না। তবে মাঝেমধ্যে একশ্রেণির মিডিয়া ১ হাজার টাকার নোটের সংখ্যা নিয়ে, বাজারে এর আধিক্য নিয়ে প্রতিবেদন করে। এমন একটি প্রতিবেদন আমার নজরে পড়েছে। সেখানে বলা হচ্ছে, বাজারে ১ হাজার টাকার নোট বেশি। এই নোট ‘ঘুস’ বাণিজ্যে কাজে লাগছে। হুন্ডিতে ব্যবহৃত হচ্ছে। মানুষ ব্যাংকে টাকা না রেখে ঘরে হাজার টাকার নোট রাখছে। ‘কালোটাকা’র সঙ্গে হাজার টাকার নোটের সম্পর্ক করা হয়েছে। এমন সব মন্তব্য করে প্রতিবেদনটি ছাপা হয়েছে।
‘কালোটাকা’, ঘুস, হুন্ডির সঙ্গে হাজার টাকার নোটের সম্পর্ক কতটুকু, এর ব্যাপকতা কতটুকু-আমি বলতে পারব না। তবে এসব জনপ্রিয় কথা। এসব বললে মানুষ তা ‘খায়’। আসলে এর সঙ্গে অনেক বিষয় জড়িত। প্রথমত, হাজার টাকার নোটের অর্থনৈতিক প্রয়োজনীয়তা আছে কিনা, লেনদেনে এ ধরনের নোট উপকারী/উপযোগী কিনা। দ্বিতীয়ত, এই নোট বাজারে না থাকলে কি হুন্ডি ও ঘুস বাণিজ্য বন্ধ হয়ে যাবে? অথবা হাজার টাকার নোট না থাকলে কি ‘কালোটাকা’র জন্ম বন্ধ হয়ে যাবে?
হাজার টাকার নোট বাজারে অধিকসংখ্যক কিনা-এর সঙ্গে জড়িত আরেকটি প্রশ্ন। যদি লোকে ঘরে ঘরে এই নোট ধরে রাখে, তাহলে বাজারে/ব্যাংকে এ নোটের সরবরাহ কম হওয়ার কথা। বাজারে তা না পাওয়া যাওয়ার কথা। এমন অবস্থা কি হয়েছে দেশে? এমন অনেক প্রশ্ন। এসব প্রশ্নের উত্তর দরকার যে কোনো সিদ্ধান্তে আসার আগে। এক্ষেত্রে আমরা প্রতিবেশী দেশ ভারতের অভিজ্ঞতা আলোচনা করতে পারি।
তারা ২০১৬ সালের দিকে ‘কালোটাকা’ ধরার কথা বলে ১ হাজার রুপির নোট বাতিল করে। কঠিন সব নিয়ম করে বস্তুত অবৈধভাবে উপার্জিত রুপি ব্যাংকে জমা দেওয়া প্রায় অসম্ভব করে তোলে। চারদিকে তখন তুমুল হইচই। অনেকে মনে করেছিল, ‘কালোটাকার’ মালিকরা এবার ‘ফান্দে’ পড়েছে। যাবে কোথায়? রুপি ব্যাংকে জমা দেবে কীভাবে? অতএব, বহু কোটি ‘রুপি’ ব্যাংকে ফেরত আসবে না। কারণ অবৈধ রুপির মালিকরা সাহস করে তা জমা দিতে আসবে না। এলে বিপদে পড়বে। বিপুল আলোচনা-সমালোচনা, পক্ষে ও বিপক্ষে। সত্যি সত্যি সরকার তাদের অঙ্গীকার মোতাবেক ‘কালোটাকার’ মালিকদের ধরছে। সবাই খুশি।
‘অ্যান্টি-মানি’ গ্রুপ খুশিতে আত্মহারা। হা হতোস্মি! দেখা গেল সময় শেষে হাজার রুপির নোট বাজারে যা ছিল, তার প্রায় সবটাই ব্যাংকে জমা পড়েছে। মানুষ নানাভাবে তা করেছে। ব্যবসায়ীরা নিজস্ব কায়দায় অনেক অবৈধ টাকা ‘ক্যাশ’ হিসাবে জমা দিয়েছে। ব্যাংকাররা ‘সাহায্য’ করেছে। হাজার হাজার দালালের জন্ম হয়েছে। হাজার রুপির নোট ৫০০-৬০০-৭০০ রুপিতে বিক্রি হয়েছে। এমনকি ঢাকাতেও।
ঢাকা থেকে প্রতিবছর ভারতে যায় লাখ লাখ লোক। ফেরার সময় কিছু রুপি হাতে থাকে। তা তারা বড় নোটেই আনে। এমন যারা ছিলেন, তারা পড়েন বিপদে। এ বিপদে কাণ্ডারি হিসাবে দেখা দেয় একশ্রেণির দালাল। তারা চুটিয়ে ব্যবসা করে। ফলে দেখা গেল ‘কালোটাকা’ ধরার পদক্ষেপ ব্যর্থতায় পর্যবসিত হয়েছে। কিন্তু এতে ভারতে যা ক্ষতি হওয়ার তা হয়ে গেছে। কোটি কোটি মানুষের দিন-রাত ভোগান্তি গেছে। ‘কালোটাকা’ রয়েই গেছে। ঘুস-দুর্নীতি রয়েই গেছে; বরং বেড়েছে। এসব ভারতের কাগজ পড়লেই পাওয়া যায়।
এবার করা হচ্ছে ২ হাজার রুপির ক্ষেত্রে। যদিও বলা হচ্ছে, এটা ‘নোটবন্দি’ নয়, তবু কালো রুপির মালিকরা যথারীতি ব্যবস্থা তৈরি করবে তা বদলের। তাহলে কী দাঁড়াল? আরেকটা উদাহরণ দিই, যা আমাদের দেশের। ১৯৭৪-৭৫ সালের দিকের ঘটনা। বঙ্গবন্ধু সরকার ১০০ টাকার নোট ‘ডিমানিটাইজ’ বা বাতিল ঘোষণা করে। ১০০ টাকার নোট ছিল তখন সর্বোচ্চ পরিমাণের নোট। উদ্দেশ্য একই। ‘কালোটাকা’র মালিকদের শাস্তি দেওয়া। শত টাকার নোটের বিরুদ্ধে যে জনমত গঠিত হয়েছিল, তার পরিপ্রেক্ষিতেই ছিল এ সিদ্ধান্ত।
আমি তখন এর ওপর অনেক কলাম লিখেছি। দেখা গেল ‘যাহা বাহান্ন, তাহাই তিপ্পান্ন।’ এরপর কত বছর কেটেছে। জিডিপির আকার বেড়েছে, মাথাপিছু আয় বেড়েছে। অর্থনীতির আকার বড় হয়েছে। আমদানি-রপ্তানি বেড়েছে। এসেছে রেমিট্যান্স। পাল্লা দিয়ে এসেছে ৫০০ টাকা এবং ১০০০ টাকার নোট, লেনদেনের সুবিধার্থে। এবার পাঠকরা বলুন ‘কালো অর্থনীতি’, ‘কালোটাকা’র দৌরাত্ম্য দেশে কমেছে, না বেড়েছে? ঘুস-দুর্নীতি কমেছে, না বেড়েছে? টাকা পাচার কমেছে, না বেড়েছে?
এসব প্রশ্নের উত্তর সহজ। আসলে এখন প্রশ্ন, ‘কালো টাকা’ আগে, না ঘুস-দুর্নীতি আগে? ঘুস-দুর্নীতি আছে বলেই ‘কালোটাকা’র (আনট্যাক্সড মানি) জন্ম। ঘুস-দুর্নীতি না থাকলে ‘কালোটাকা’র জন্ম হতো না। অতএব, করণীয় হলো ঘুস-দুর্নীতি বন্ধ করা, নিদেনপক্ষে কমানো। ভারত ও বাংলাদেশের অভিজ্ঞতা থেকে পরিষ্কার বোঝা যায়, ৫০০ টাকার নোট হোক, আর ১০০০ টাকার নোট হোক, অথবা ২০০০ রুপির নোটই হোক-‘কালো টাকা’ থাকবে।
১ হাজার টাকার নোট না থাকলে ৫০০ টাকার নোট ব্যবহৃত হবে। স্বর্ণ ব্যবহৃত হবে। আর বড় কথা হলো, এখন খুচরা ‘চুরি’ ছাড়া বড় অঙ্কের ‘কালোটাকা’ পাচার হয়ে বিদেশে যায় বড় বড় ব্যবসায়ীর মাধ্যম। ‘আন্ডার ইনভয়েসিং’, ‘ওভার ইনভয়েসিংয়ে’র মাধ্যম। এক টাকা, দুই টাকা নয়, হাজার হাজার কোটি টাকা বিদেশে যাচ্ছে, গিয়েছে। হয়তো আরও যাবে। দরকার এসব বন্ধ করা। করতে পারলে নোটের ‘দোষ’ খুঁজতে হবে না।
এবার দেখা দরকার, সত্যিই ১ হাজার টাকার নোটের আধিক্য কিনা বাজারে। কাগজে দেখতে পাচ্ছি, গত ৫-৬ বছরে হাজার টাকার নোট বাজারে সামান্যই বেড়েছে, খুবই সামান্য। বাজারে যত টাকার নোট চালু আছে বা যত নোট চালু আছে (মোট ইস্যুকৃত নোট), শতাংশ হিসাবে তার কোনো পরিবর্তন হয়নি গত কয়েক বছরে। মোট ইস্যুকৃত নোটে ১ হাজার টাকার নোটের হিস্যা প্রায় সমান। এটা কেমন কথা? যদি লোকে ১ হাজার টাকা নোট চুরি-চামারি, দুর্নীতির কাজে ব্যবহার বেশি বেশি করে, যদি লোকে ওই নোট বাড়িতে ধরে রাখে, তাহলে তো মোট ইস্যুকৃত নোটের পরিমাণ উল্লেখযোগ্যভাবে বাড়ার কথা। সেটা তো তথ্যে পাওয়া যাচ্ছে না।
আসলে হিসাবটা হওয়া উচিত শুধু হাজার টাকার নোট দিয়ে নয়। জিডিপির আকার বৃদ্ধির পাশাপাশি নোটের ব্যবহার কত বাড়ছে বা কমছে-সেটিই হওয়া উচিত হিসাব। এ তথ্য দরকার। প্রশ্ন, এখানে বাজারে কত নোটের দরকার। ‘কারেন্সি ইন সার্কুলেশন’ কত হওয়া দরকার। আমেরিকার মতো করে হিসাবে নয়। বাংলাদেশের মানুষের ক্রয় অভ্যাস, সঞ্চয় অভ্যাস, সামাজিক অবস্থা ইত্যাদির আলোকেই হিসাব করতে হবে। আমেরিকায় ১০০ ডলারের নোট সর্বোচ্চ পরিমাণের। এ যুক্তিতে কেউ যদি বলেন, আমাদের দেশেও তা হওয়া উচিত এবং তাহলেই ‘কালোটাকা’র উৎপাত কমবে, ঘুসখোরদের উৎপাত কমবে-তাহলে সেটা কি বাস্তবসম্মত কথা হবে?
এটা বাস্তব সত্য যে, বাংলাদেশের মানুষ হাতের কাছে ‘ক্যাশ’ রাখে। এর বহুবিধ কারণ আছে। এখনো আমরা ‘ক্যাশলেস’ সোসাইটির ধারেকাছেও নই। ধীরে ধীরে আমরা এগোচ্ছি। অনেক সময় ‘এটিএম’ কাজ করে না। হাসপাতালে ভর্তি হলে জরুরি রোগীর ক্ষেত্রে ক্যাশ টাকা জমা দিতে হয়। ধরা যাক একজন রিকশাওয়ালার কথা। দিনে ৫০০-৭০০ টাকা রোজগার। কয়েকদিনের রোজগার একসঙ্গে করে বড় নোটে সে তার গাঁটে রাখে। এক মাস, দুমাস পর বাড়ি যাওয়ার সময় সেই হাজার টাকার নোট নিয়ে দেশে যায়। নতুবা ‘বিকাশ’ করে। বহু পেমেন্ট এখনো ‘ক্যাশে’ করতে হয় (ঘুসের টাকায় নয়)।
দোকানিরা ‘ক্যাশ’ চায়, তখন কি ৫ হাজার টাকার বাজার করে ১০০ টাকার নোটে দাম শোধ করা হবে? মধ্যবিত্তের মাসিক বাজার বলে একটা কথা আছে। এ খাতে ৫-৭ হাজার টাকা লাগে। কত টাকার নোটে এই লেনদেন সারা হবে? ধরা যাক একজন ‘বুয়ার’ কথা। বাসাবাড়িতে কাজ করে। টাকা জমায় বড় নোটে। বছর শেষে বাড়ি যায় ওই সঞ্চয়ের টাকা দিয়ে কিছু একটা করবে বলে। মূল্যস্ফীতির কথা বিবেচনা করা যাক। গত এক-দেড় বছরের মধ্যে জিনিসপত্রের দাম কতটা বেড়েছে! দেড়গুণ, দ্বিগুণ নিশ্চয়ই। এখন পাঠক বলুন, এই বাজারে লেনদেন করতে হলে কি আগের পরিমাণ টাকা দিয়ে হবে?
বাজারে নোটের পরিমাণ কি বেশি হতে হবে না? এক টাকার বাজার করতে এখন দুই টাকা লাগে। তাহলে ইস্যুকৃত নোটের পরিমাণ কতটুকু বাড়া দরকার? টাকার প্রচলন কি সেভাবে বেড়েছে? নিশ্চয়ই না। বলা দরকার, হাজার টাকার নোট শুধু কালোবাজারি, ঘুসখোরদের ব্যবহারের জন্য নয়, এটা বর্তমান বাজারদরে সাধারণ মানুষের প্রয়োজনেই দরকার। নোটের দোষ নয়-দোষটা হচ্ছে ঘুস, বেআইনি কাজের।
নোটের মূল্য যাই হোক না কেন, ঘুস-দুর্নীতি থাকবে বলেই মনে হয়। ব্রিটিশ আমলে (১৯৪৭ পূর্বকালে) ঘুসের ভদ্রনাম ছিল অর্থাৎ একে বলা হতো ‘উপরি’। এর আগে নজরানা, উপঢৌকন-আরও কত নাম! আবার কিছু টাকা তৈরি হয় সিস্টেমের কারণে। যেমন আবাসন খাত। না চাইলেও এখানে ‘কালোটাকা’র সৃষ্টি হয়। তাছাড়া নোটের ব্যবহার সম্পর্কে দুটি কথা। খাসির মাংস ১১০০-১২০০ টাকা কেজি, চারটি দেশি মুরগির দাম ১৮০০-২০০০ টাকা, এক কেজি চিংড়ির দাম ১৫০০-১৬০০ টাকা। এ বাজারের বোঝা বহন কি ছোট ছোট নোটে হবে, না বড় নোটে? সুবিধার জন্যই বড় নোট দরকার। অতএব, দরকার ঘুস-দুর্নীতির উৎসমূল বন্ধ করা, নোট নয়। তাই নয় কি?
ড. আর এম দেবনাথ : অর্থনীতি বিশ্লেষক; সাবেক শিক্ষক, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়