কক্সবাজারের ভ্যাট কমিশনারকে হাইকোর্টে তলব

ফাইল ছবি

কক্সবাজারে হোটেল, মোটেল ও রেস্তোরাঁয় মূল্য সংযোজন কর -ভ্যাট ফাঁকির অভিযোগের ব্যাখ্যা জানতে সেখানকার শুল্ক, আবগারী ও মুসক বিভাগীয় কার্যালয়ের (ভ্যাট) কমিশনারকে তলব করেছেন হাইকোর্ট। তাকে ১৮ জুন আদালতে হাজির হতে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।

এক রিট আবেদনে শুনানির পর বিচারপতি মো. নজরুল ইসলাম তালুকদার ও বিচারপতি খিজির হায়াতের দ্বৈত বেঞ্চ এ আদেশ দেন।

আদালতে রিট আবেদনের পক্ষে শুনানি করেন আইনজীবী ইসরাত জাহান।

দুদকের পক্ষে ছিলেন আইনজীবী মো. খুরশীদ আলম খান।

আইনজীবী ইসরাত জাহান কালের কণ্ঠকে বলেন, ‘গত ২১ নভেম্বর হাইকোর্ট কক্সবাজারের হোটেল, মোটেল, রেস্তোরাঁয় ভ্যাট ফাঁকির অভিযোগের বিষয়ে কী ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে, জানতে চেয়েছিলেন হাইকোর্ট। জেলা প্রশাসক ও জাতীয় রাজস্ব বোর্ড -এনবিআরকে প্রতিবেদন দিয়ে তা জানতে বলা হয়েছিল। জেলা প্রশাসক প্রতিবেদন দিয়ে বলেছেন, ভ্যাট ফাঁকি সত্যতা পাওয়া গেছে।

অন্যদিকে এনবিআর প্রতিবেদন দিয়ে ভ্যাট ফাঁকির অভিযোগ পাশ কাটিয়ে সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তাদের পক্ষে সাফাই গেয়েছেন। যে কারণে আদালত কক্সবাজারের ভ্যাট কমিশনারের অবস্থান জানতে তাকে জানতে তলব করেছেন।’

‘ভ্যাটের হাজার কোটি টাকা মিলেমিশে লোপাট’ শিরোনামে গত বছর ১৬ নভেম্বর প্রতিবেদন ছাপে একটি জাতীয় দৈনিক। সে প্রতিবেদনে দুদকের বরাত দিয়ে বলা হয়, দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) চট্টগ্রাম সমন্বিত জেলা কার্যালয়-২ এর অনুসন্ধানে উঠে এসেছে কক্সবাজারে অনেক হোটেল-রেস্টুরেন্ট ভ্যাট পরিশোধ করছে না।

বেশিরভাগ হোটেলে অতিথিদের এন্ট্রি রেজিস্ট্রার সংরক্ষণ করে না। রুম ভাড়ার তালিকা রাখে না। এমনকি রেস্টুরেন্টগুলো ভ্যাট ফরমও ব্যবহার করে না। তারা ভ্যাট কর্মকর্তাদের কাছে প্রতিমাসে নির্দিষ্ট হারে ভ্যাট পরিশোধ করে। সেই সুবাদে ভ্যাট কর্মকর্তা হোটেল-রেস্টুরেন্ট থেকে প্রতি মাসে অবৈধ সুবিধা নিয়ে থাকেন।

এতে সরকার বিপুল অঙ্কের রাজস্ব হারাচ্ছে।

প্রকাশিত প্রতিবেদনে আরো বলা হয়, গত বছর ৩ ফেব্রুয়ারি দুদকের প্রধান কার্যালয় সংস্থাটির চট্টগ্রাম কার্যালয়কে কক্সবাজারের হোটেল, মোটেল ও রেস্টুরেন্টে ভ্যাট ফাঁকির অভিযোগ অনুসন্ধান করতে নির্দেশ দেয়। এরপর তিন সদস্যের একটি অনুসন্ধান দল সাতটি হোটেলে অভিযান চালিয়ে ভ্যাট ফাঁকির প্রমাণ পায়। এর ভিত্তিতে গত বছর ২৩ মার্চ প্রধান কার্যালয়ে প্রতিবেদন পাঠানোর পর অভিযোগের বিষয়ে আর কোনো পদক্ষেপ নেয়নি দুদক। যে কারণে এ প্রতিবেদনটি যুক্ত করে গত বছর ২১ নভেম্বর হাইকোর্টে রিট করেন সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী ইসরাত জাহান ও মো. শামসুদ্দোহা। শুনানির পরই রুলসহ এ আদেশ দেন আদালত।

আদেশে সাতটি হোটেলের বিরুদ্ধে ভ্যাট ফাঁকির অভিযোগ তদন্তের অগ্রগতি জানতে চান হাইকোর্ট। দুদককে প্রতিবেদন দিয়ে তা জানাতে বলা হয়। সেই সঙ্গে কক্সবাজারের মোটেল, রেস্টুরেন্ট মালিক ও ‘শুল্ক, আবগারী ও মুসক বিভাগীয় কার্যালয়’ মিলে ভ্যাট লোপাটের বিষয়ে প্রতিবেদন প্রকাশের পর কী পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে, তা জেলা প্রশাসক ও এনবিআরকে প্রতিবেদন দিয়ে তা জানতে বলা হয়। এ দুই প্রতিবেদন দেখে কক্সবাজারের ভ্যাট কমিশনারকে তলব করলেন হাইকোর্ট।

LEAVE A REPLY