দেশে পেঁয়াজের কোনো ঘাটতি নেই : বাণিজ্যমন্ত্রী

ফাইল ছবি

মূল্য নিয়ন্ত্রণে নিত্যপণ্য উৎপাদন ও প্রক্রিয়াজাতকরণ প্রতিষ্ঠানে নিরবচ্ছিন্ন গ্যাস ও বিদ্যুৎ সরবরাহের নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে বলে জানিয়েছেন বাণিজ্য মন্ত্রী টিপু মুন্সী। তিনি আরো জানান, মন্ত্রণালয়ের সুপারিশের প্রেক্ষিতে জাতীয় রাজস্ব বোর্ড চিনি ও ভোজ্যতেলের ওপর আরোপিত শুল্কহার হ্রাস করেছে।

আজ সোমবার জাতীয় সংসদ অধিবেশনে প্রশ্নোত্তর পর্বে তিনি এ তথ্য জানান। স্পিকার ড. শিরীন শারমিন চৌধুরীর সভাপতিত্বে শুরু হওয়া অধিবেশনে এ সংক্রান্ত পৃথক দুটি প্রশ্ন উত্থাপন করেন সরকারি দল আওয়ামী লীগের আনোয়ার হোসেন খান ও হাবিবুর রহমান এবং বিরোধী দল জাতীয় পার্টির সৈয়দ আবু হেসেন বাবলা ও গণফোরামের মোকাব্বির খান।

পৃথক প্রশ্নে তারা দেশে নিত্য প্রয়োজনীয় দ্রব্যের মূল্য বৃদ্ধির কারণ ও এ বিষয়ে সরকারের নেওয়া পদক্ষেপ সম্পর্কে জানতে চান।

লিখিত জবাবে বাণিজ্য মন্ত্রী জানান, প্রতিনিয়ত ভোজ্য তেলসহ নিত্যপ্রয়োজনীয় সামগ্রী বৃদ্ধি লক্ষ্যে ভোজ্যতেলসহ নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্য আমদানির বাধাসমূহ দুর করতে নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্য আমদানিতে এলসি খোলায় ন্যূনতম মার্জিন রাখার বিষয়ে বাণিজ্যিক ব্যাংকসমূহকে নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে। নিত্যপণ্য আমদানির ক্ষেত্রে বাণিজ্যিক ব্যাংকসমূহে ডলারের সরবরাহ রাখার জন্য বাংলাদেশ ব্যাংককে অনুরোধ জানানো হয়েছে।

তিনি আরো জানান, মশলার বাজার পরিস্থিতি পর্যালোচনার লক্ষ্যে বাংলাদেশ ট্রেড অ্যান্ড ট্যারিফ কমিশন, বাংলাদেশ ব্যাংক ও মশলা ব্যবসায়ী প্রতিনিধিদের নিয়ে সভা করা হয়েছে।

সভায় খুচরা পর্যায়ে মূল্য বৃদ্ধি রোধকরে পাইকারি পর্যায়ে পাকা রশিদ ব্যতীত পণ্য বিক্রয় না করার জন্য বলা হয়েছে। এছাড়া দরিদ্র জনগণকে সহায়তার লক্ষ্যে টিসিবির ফ্যামিলি কার্ডধারী নিম্ন আয়ের এক কোটি উপকারভোগী পরিবারের মধ্যে প্রতি মাসে ভর্তুকি মূল্যে নির্দিষ্ট পরিমাণ পণ্য (দুই লিটার সয়াবিন তেল, দুই কেজি মসুর ডাল ও এক কেজি চিনি) বিক্রয় করা হচ্ছে।

একই প্রশ্নের জাবে মন্ত্রী টিপু মুন্সী জানান, বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তা সমন্বয়ে গঠিত বাজার মনিটরিং টিম প্রতিদিন ঢাকা শহরের বিভিন্ন পাইকারি ও খুচরা বাজার পরিদর্শন করছে। জাতীয় ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তর ঢাকাসহ সকল মহানগর, জেলা ও উপজেলা পর্যায়ে নিয়মিত রাজার মনিটরিং করছে।

অধিদপ্তরের পক্ষ থেকে ২০২২ সালের পহেলা জুলাই থেকে গত ৩১ মে পর্যন্ত ১১ হাজার ২৯টি বাজার মনিটরিং করা হয়েছে। এছাড়া জেলা প্রশাসক ও উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তাদের নেতৃত্বে জেলা ও উপজেলা বাজারসমূহে নিয়মিত মোবাইল কোর্ট পরিচালনাসহ বাজার নিয়ন্ত্রণে প্রয়োজনীয় আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়েছে।

বিরোধী দল জাতীয় পার্টির সংসদ সদস্য হাফিজ উদ্দিন আহম্মেদের প্রশ্নের লিখিত উত্তরে তিনি আরো জানান, দেশে চিনি ও পেঁয়াজের বর্তমান বার্ষিক চাহিদা যথাক্রমে ২০-২২ লক্ষ মেট্রিক টন ও ২৫-২৭ লক্ষ মেট্রিক টন। চিনি ও পেঁয়াজের উৎপাদন প্রায় ২১ হাজার মেট্রিক টন ও ২৮ লক্ষ ১১ হাজার মেট্রিক টন। চিনির দেশিয় উৎপাদন অতি নগন্য হওয়ায় প্রায় ৯৯ শতাংশ চিনির চাহিদা আমদানির মাধ্যমে পূরণ করা হয়।

দেশে পেঁয়াজের কোনো ঘাটতি নেই বলে জানান বাণিজ্যমন্ত্রী। চিনির মূল্য বৃদ্ধির কারণ সম্পর্কে মন্ত্রী জানান, আন্তর্জাতিক বাজারে চিনির মূল্য গত তিন মাসে প্রতি মেট্রিক টন প্রায় ১৬০ ডলার বৃদ্ধি পেয়েছে। আমদানির ব্যয় নির্ধারণে ব্যবহৃত বৈদেশিক মুদ্রা ডলারের মূল্য এক বছরে প্রায় ৩০ শতাংশ বৃদ্ধি পেয়েছে। অপরিশোধিত চিনি পরিশোধনে ব্যবহৃত কেমিক্যালের মূল্যও বৃদ্ধি পেয়েছে। গ্যাস ও বিদ্যুতের মূল্য বৃদ্ধির কারণেও স্থানীয় বাজারে চিনির মূল্য বৃদ্ধি পেয়েছে।

LEAVE A REPLY