
নতুন উত্তেজনা শুরু হয়েছে কোরিয়া উপদ্বীপে। আগের দিন পরপর দুটি ক্ষেপণাস্ত্র পরীক্ষার পরদিন শুক্রবারই যুক্তরাষ্ট্রের পারমাণবিক সাবমেরিন এসে ভিড়েছে দক্ষিণ কোরিয়ার বন্দরে। পিয়ংইয়ংয়ের ক্রমবর্ধমান হুমকি মোকাবিলার অঙ্গীকার হিসাবেই মার্কিন নৌবাহিনীর পারমাণবিক শক্তিচালিত ডুবোজাহাজটি এদিন দক্ষিণ কোরিয়ার বন্দর শহর বুসানে এসেছে। বিবিসি, এএফপি।
ছয় বছরের মধ্যে প্রথমবারের মতো শুক্রবার এটি বুসানে পৌঁছেছে। দক্ষিণ কোরিয়ার সামরিক বাহিনী জানিয়েছে, এপ্রিলে ওয়াশিংটন সিউলের নেতাদের স্বাক্ষরিত ঘোষণা অনুযায়ী সামরিক সহযোগিতার অংশ হিসাবে এই সাবমেরিন বুসানে এসেছে। ঘোষণায় ওয়াশিংটনের ‘দক্ষিণ কোরিয়ার প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ানোর প্রতিশ্রুতি’ এবং কোরিয়াকে পারমাণবিকসহ মার্কিন সক্ষমতার সম্পূর্ণ পরিসরের সমর্থন দেওয়া হয়েছে। উত্তর কোরিয়ার নেতা কিম জং উন তার দেশকে একটি ‘অপরিবর্তনীয়’ পারমাণবিক রাষ্ট্র এবং কৌশলগত পরমাণু অস্ত্রসহ সামরিক শক্তি বৃদ্ধির ঘোষণা দিয়েছেন। পালটা জবাবে ওয়াশিংটনের প্রতিশ্রুতি, মিত্রদের বিরুদ্ধে পিয়ংইয়ং যদি কখনো তার কৌশলগত পরমাণু অস্ত্র ব্যবহার করে তাহলে উত্তর কোরিয়া পারমাণবিক অস্ত্রের মুখোমুখি হবে এবং উত্তর কোরিয়ার বর্তমান সরকারের ‘অবসান’ ঘটবে।
উত্তর কোরিয়ার ২ ক্ষেপণাস্ত্র নিক্ষেপ: মার্কিন নেতৃত্বাধীন সামরিক মহড়ার পর উত্তর কোরিয়া তার পূর্ব উপক‚ল থেকে দুটি স্বল্পপাল্লার ক্ষেপণাস্ত্র নিক্ষেপ করেছে। দক্ষিণ কোরিয়ার সেনাবাহিনী এ তথ্য দিয়েছে। দক্ষিণ কোরিয়া ও মার্কিন সৈন্যদের দ্বারা পরিচালিত সামরিক মহড়ার অনিবার্য প্রতিক্রিয়া সম্পর্কে সতর্ক করেছিল উত্তর কোরিয়া। এরপরই ওই সামরিক মহড়ার এক ঘণ্টারও কম সময়ের মধ্যে ক্ষেপণাস্ত্র উৎক্ষেপণ করে পিয়ংইয়ং।
বৃহস্পতিবার দক্ষিণ কোরিয়ার সেনাবাহিনীর জয়েন্ট চিফস অব স্টাফ জানিয়েছেন, উত্তর কোরিয়ার রাজধানী অঞ্চল থেকে ওই ক্ষেপণাস্ত্রগুলোকে নিক্ষেপ করা হয়। এ বিষয়ে তাদের কাছে পর্যাপ্ত তথ্য আছে। জাপানের প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, দুটি ব্যালিস্টিক ক্ষেপণাস্ত্র তাদের একচেটিয়া সামুদ্রিক অর্থনৈতিক অঞ্চলের মধ্যে অবতরণ করেছে। সম্ভবত এগুলো একটি অনিয়মিত গতিপথে উড়ে এসেছিল। জাপানি কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, এ ক্ষেপণাস্ত্রগুলোর একটি জাপান সাগরে অবতরণ করেছে, যা পূর্ব সাগর নামেও পরিচিত। এটা হেগুরা দ্বীপের প্রায় ১১০ কিলোমিটা উত্তর-পশ্চিমে ও ইশিকাওয়া প্রিফেকচারের অংশে আঘাত হানে। অপর ক্ষেপণাস্ত্রটি প্রায় ২৫০ কিলোমিটার দূরে পড়ে। যখন ওই ক্ষেপণাস্ত্রগুলোকে নিক্ষেপ করা হয় তখন মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেনের জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা জ্যাক সুলিভান জাপানি ও দক্ষিণ কোরিয়ার জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা চো তাই-ইয়ং এবং তাও আকিবার সঙ্গে বৈঠক করছিলেন।
টোকিওতে তাদের এ আলোচনা বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়। তারা তিনজন উত্তর কোরিয়ার ক্ষেপণাস্ত্র কর্মসূচি নিয়ে আলোচনা করেছেন। তারা জানিয়েছেন, পিয়ংইয়ংকে তার পারমাণবিক অস্ত্র পরিত্যাগ করার জন্য একসঙ্গে কাজ করবেন তারা। এএফপি।