অবৈধ অভিবাসীদের বিরুদ্ধে কঠোর অবস্থান নিয়েছে ব্রিটেনের টোরি সরকার। অবৈধ অভিবাসীদের ওপর সরকার এতটাই ক্ষিপ্ত হয়ে উঠেছে যে, প্রধানমন্ত্রী ঋষি সুনাক (৪৩) নিজেই অংশ নিলেন অবৈধ অভিবাসী আটক অভিযানে।
রোববার এনডিটিভির এক খবরে বলা হয়েছে, বৃহস্পতিবার লন্ডনের বিভিন্ন এলাকায় ১৫৯টি অভিযান চালান সুনাক। গ্রেফতার করেন ১০৫ জন অবৈধ অভিবাসীকে। বিশ্লেষকরা বলছেন, ঘর পোড়া আগুনে পুড়ে খাক হয়ে যাওয়া পায়ের তলার মাটি শীতল করতেই ব্রিটেনের ইতিহাসের নজিরবিহীন এ চমক দেখালেন সুনাক। নিজের ‘মরা গাছে’ পানি ঢালছেন সুনাক। সবকিছু ঠিক থাকলে আগামী বছরই ব্রিটেনে নির্বাচন। একেবারে নাকের ডগায় এসে পড়া সে বিপদ থেকে উৎরে উঠতেই অবৈধ অভিবাসী উচ্ছেদ কর্মসূচিকে রক্ষাকবচ হিসাবে সামনে আনছেন তিনি।
ভারতীয় বংশোদ্ভূত প্রধানমন্ত্রী ঋষি সুনাক এদিন স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তা এবং পুলিশের সঙ্গে এ অভিযানে অংশ নেন। প্রায় ২০ দেশের ১০৫ জন বিদেশি নাগরিককে গ্রেফতারের মধ্য দিয়ে শেষ করেন অভিযান। রেস্তোরাঁ, গাড়ি পরিষ্কার স্থল, সেলুন, মুদি দোকানের মতো জায়গাগুলোতে অবৈধভাবে কাজ করা এবং জাল কাগজপত্র রাখার অভিযোগে তাদের গ্রেফতার করা হয়। অভিযানের সময় ঋষি সুনাক বুলেটপ্রুফ ভেস্ট পরিহিত ছিলেন।
দেশটির স্বরাষ্ট্র দপ্তর জানায়, গ্রেফতারদের ৪০ জনেরও বেশি মানুষকে যুক্তরাজ্য থেকে তাদের অপসারণের অপেক্ষায় স্বরাষ্ট্র দপ্তর কর্তৃক আটক করা হয়েছে। আর বাকি সন্দেহভাজনদের অভিবাসন জামিনে মুক্তি দেওয়া হয়েছে। বেশ কয়েকজনকে গ্রেফতারের ফলে যুক্তরাজ্য থেকে অনেকে স্বেচ্ছায় প্রস্থান করবেন বলে প্রত্যাশা রয়েছে তাদের।
গত বছরের ডিসেম্বরে ঋষি সুনাক ঘোষণা দিয়েছিলেন, নৌকায় চড়ে অবৈধভাবে ইংলিশ চ্যানেল পাড়ি দিয়ে যুক্তরাজ্যে আসা বন্ধ করা হবে। এরপর জানুয়ারি থেকে মার্চ পর্যন্ত অবৈধ অভিবাসীদের গ্রেফতারের ঘটনা আগের বছরের একই সময়ের চেয়ে বেড়ে দ্বিগুণ হয়েছে।
যুক্তরাজ্যের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী সুয়েলা ব্রাভারম্যান এক বিবৃতিতে জানান, অবৈধ কর্মীরা আমাদের সমাজের ক্ষতি করছে, সৎকর্মীদের চাকরিছাড়া করছে। তারা কোনো কর না দেওয়ায় সরকারের তহবিল ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে। প্রধানমন্ত্রী নির্ধারিত সীমান্ত আইন লঙ্ঘন বন্ধে সরকার প্রতিশ্রুতিবদ্ধ বলেও জানান তিনি। চলতি বছরের প্রথম তিন মাসে যুক্তরাজ্যের অভিবাসন কর্মকর্তারা ১৩০৩টি অভিযান চালিয়েছেন।