ফাইল ছবি
দেশের সব নদ-নদীর পানি বিপৎসীমার নিচে অবস্থান করছে। উজানেও কমে এসেছে ভারি বৃষ্টিপাতের প্রবণতা। আগামী দু-এক দিন নদ-নদীগুলোর অবস্থা অপরিবর্তিত থাকতে পারে। এর পরই কমতে শুরু করবে পানি।
ফলে চলতি মাসে আর কোনো বন্যার আশঙ্কা নেই বলে জানিয়েছে বন্যা পূর্বাভাস ও সতর্কীকরণ কেন্দ্র সূত্র।
এদিকে আবহাওয়া অধিদপ্তর বৃষ্টির পূর্বাভাসে জানিয়েছে, আজ শনিবার খুলনা, বরিশাল, চট্টগ্রাম ও সিলেট বিভাগের অনেক জায়গায় বৃষ্টি হতে পারে। এ ছাড়া রংপুর, ময়মনসিংহ, রাজশাহী ও ঢাকা বিভাগের কিছু কিছু জায়গায় হালকা থেকে মাঝারি ধরনের বৃষ্টি বা বজ সহ বৃষ্টি হতে পারে। সেই সঙ্গে দেশের দক্ষিণাঞ্চলে মাঝারি ধরনের ভারি থেকে ভারি বর্ষণ হতে পারে।
তবে আগামী দুই দিনে দেশে বৃষ্টি বাড়তে পারে।
বাংলাদেশ পানি উন্নয়ন বোর্ডের (পাউবো) বন্যা পূর্বাভাস ও সতর্কীকরণ কেন্দ্রের নির্বাহী প্রকৌশলী সরদার উদয় রায়হান গতকাল কালের কণ্ঠকে বলেন, ‘আজ (গতকাল) সামগ্রিকভাবে দেশের সব নদ-নদীর পানি মোটামুটি স্থিতাবস্থায় আছে। উজানে ভারি বৃষ্টিপাতের প্রবণতা কমে এসেছে। এ রকম অবস্থা আগামী ৪৮ ঘণ্টা পর্যন্ত থাকতে পারে।
এরপর নদ-নদীর পানি কমার প্রবণতা শুরু হতে পারে। দেশের কিছু নিম্নাঞ্চলে পানি আছে। ৪৮ ঘণ্টা পর এই অবস্থারও দ্রুত উন্নতি হবে। সব মিলিয়ে আমরা আশা করছি, চলতি মাসে আর কোনো বন্যা পরিস্থিতি তৈরি হবে না।’
গতকাল পাউবো জানিয়েছে, ব্রহ্মপুত্র নদের পানির উচ্চতা কমছে।
তবে যমুনা নদীর পানি বাড়ছে। আজ (শনিবার) সকাল ৬টা পর্যন্ত ২৪ ঘণ্টার পূর্বাভাসে পাউবো বলছে, ব্রহ্মপুত্র ও যমুনার পানি স্থিতিশীল থাকতে পারে। গঙ্গা নদীর পানির উচ্চতাও স্থিতিশীল আছে। তবে পদ্মার পানি বাড়ছে, যা ২৪ ঘণ্টা পর্যন্ত (শনিবার সকাল ৬টা পর্যন্ত) অব্যাহত থাকতে পারে।
কুশিয়ারা ছাড়া দেশের উত্তর-পূর্বাঞ্চলের প্রধান নদ-নদীর পানির উচ্চতা স্থিতিশীল রয়েছে। আজ দেশের উজানে ও উত্তর-পূর্বাঞ্চলে মাঝারি বৃষ্টিপাতের সম্ভাবনা সত্ত্বেও এ অঞ্চলের নদ-নদীগুলোর পানি স্থিতিশীল থাকতে পারে বলে জানিয়েছে পাউবো। এ ছাড়া আজ দুধকুমার নদের পানি পাটেশ্বরী পয়েন্টে বিপত্সীমার কাছাকাছি অবস্থান করতে পারে।
কুড়িগ্রামে কমছে পানি, বেড়েছে ভাঙন
কুড়িগ্রামে নদ-নদীর পানি কমতে শুরু করলেও গতকাল বিপত্সীমার খুব কাছ দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছিল ধরলা ও দুধকুমারের পানি। পাউবো জানায়, গতকাল বিকেলে দুধকুমার নদের পানি পাটেশ্বরী পয়েন্টে বিপত্সীমার ১০ সেন্টিমিটার এবং ধরলার পানি সেতু পয়েন্টে বিপত্সীমার ৩৯ সেন্টিমিটার নিচ দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছিল।
এদিকে পানি কমার সঙ্গে সঙ্গে বিভিন্ন এলাকায় দেখা দিয়েছে নদীভাঙন। চিলমারী উপজেলার চর বড়ভিটা, রাজারহাটের কিং ছিনাই, গতিয়াশাম, উলিপুরের চর বজরা ও মোল্লারহাট, নাগেশ্বরীর বেরুবাড়ি ও বামনডাঙা, সদর উপজেলার ভগবতিপুর, রলাকাটাসহ কয়েকটি এলাকায় নদীভাঙন তীব্র রূপ ধারণ করেছে। এসব এলাকায় গত তিন দিনে দুই শতাধিক পরিবার গৃহহীন হয়ে পড়েছে।
নদীর তীরবর্তী নিম্নাঞ্চল ও চরাঞ্চল প্লাবিত হওয়ায় কুড়িগ্রাম সদর, ফুলবাড়ী, নাগেশ্বরী, উলিপুর, চিলমারী ও রৌমারী উপজেলার ছয় হাজার পরিবারের প্রায় ৩০ হাজার মানুষ পানিবন্দি অবস্থায় রয়েছে। এসব এলাকায় ডুবে যাওয়া কয়েক শ হেক্টর জমির পাট, বীজতলা, ভুট্টা ক্ষেত নষ্ট হওয়ার আশঙ্কা দেখা দিয়েছে।
কুড়িগ্রাম সদর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা রাসেদুল হাসান জানান, নিমজ্জিত এলাকা পরির্দশন করে প্রয়োজনীয় ত্রাণসামগ্রী সহায়তা দেওয়ার উদ্যোগ চলমান রয়েছে।