গভীর সমুদ্রে স্থাপিত পাইপলাইনে তেল খালাস শুরু

কক্সবাজারের মহেশখালী গভীর সমুদ্রে স্থাপিত সিঙ্গেল পয়েন্ট মুরিং থেকে সমুদ্রের তলদেশের পাইপলাইনের মাধ্যমে জ্বালানি তেল খালাস শুরু হয়েছে। সোমবার সকাল থেকে পরীক্ষামূলকভাবে অপরিশোধিত তেল খালাস শুরু হয় বলে যুগান্তরকে নিশ্চিত করেছেন প্রকল্প বাস্তবায়নকারী সংস্থা ইস্টার্ন রিফাইনারি লিমিটেডের (ইআরএল) ব্যবস্থাপনা পরিচালক মো. লোকমান। দেশে পাইপলাইনের মাধ্যমে জ্বালানি তেল খালাস এই প্রথম।

এর আগে রোববার বিকালে চট্টগ্রাম বন্দর কর্তৃপক্ষ তাদের নিজস্ব জনবল ও নৌযানের সহায়তায় সৌদি আরব থেকে ৮২ হাজার টন অপরিশোধিত জ্বালানি তেল নিয়ে আসা ‘এমটি হোরে’ নামক বিশালাকার অয়েল ট্যাংকার সিঙ্গেল পয়েন্ট মুরিংয়ে সফলভাবে নোঙর করাতে সক্ষম হয়। ওইদিনই সাগরে স্থাপিত ভাসমান বিশেষ বয়া’র পাইপের সঙ্গে জাহাজের পাইপের সংযোগ দিয়ে তেল খালাসের সব প্রস্তুতি সম্পন্ন করা হয়। তবে কিছু কারিগরি সমস্যার কারণে সেদিন তেল খালাস শুরু করা যায়নি। সোমবার সকাল নাগাদ জাহাজ থেকে পাইপলাইনে তেল সরবরাহ শুরু হয়।

ইআরএল ব্যবস্থাপনা পরিচালক মো. লোকমান আরও জানান, প্রাথমিকভাবে জ্বালানি তেল সাগরের তলদেশের পাইপলাইনের মাধ্যমে মহেশখালীর কালারমারছড়ায় স্থলভাগে স্থাপিত ট্যাংকে নিয়ে যাওয়া হবে। সেখান থেকে পরবর্তীতে চট্টগ্রামের আনোয়ারা হয়ে পতেঙ্গায় অবস্থিত ইস্টার্ন রিফাইনারির পরিশোধন ট্যাংকে নেওয়া হবে। তবে কিছু পরীক্ষা-নিরীক্ষার বিষয় থাকায় তাতে আরও কয়েক দিন সময় লাগতে পারে।

প্রকল্পের অধীনে সাগরের তলদেশে ২২০ কিলোমিটার পাইপলাইন স্থাপন করা হয়েছে। এই পাইপলাইনের মাধ্যমেই জাহাজ থেকে পরিশোধিত ও অপরিশোধিত তেল খালাস হয়ে পতেঙ্গায় ইস্টার্ন রিফাইনারিতে চলে যাবে।

প্রায় সাড়ে ৭ হাজার কোটি টাকা ব্যয়ে বাংলাদেশ পেট্রোলিয়াম করপোরেশনের এই প্রকল্প বাস্তবায়ন করছে ইআরএল। এই প্রকল্প চালু হলে জাহাজ থেকে লাইটারিংয়ের মাধ্যমে আর তেল খালাস করতে হবে না। এতে বছরে প্রায় ৮০০ কোটি টাকা সাশ্রয় হবে। জ্বালানি নিরাপত্তাও নিশ্চিত হবে। শুধু তাই নয়, বর্তমানে চট্টগ্রাম বন্দরের বহির্নোঙরে যে আকারের জাহাজ আসে তার চেয়ে কয়েক গুণ বড় জাহাজ ভিড়তে পারবে সিঙ্গেল পয়েন্ট মুরিংয়ে। কারণ গভীর সমুদ্রের ওই অংশে সাগরের তলদেশের গভীরতা অনেক বেশি।

LEAVE A REPLY