ভারতের মহারাষ্ট্রের রায়গড়ে পাহাড়ে ধসের ঘটনায় এখন পর্যন্ত অন্তত ২৬ জনের মৃত্যু হয়েছে। তিন দিন পরও উদ্ধারকাজ শেষ করা যায়নি। শনিবার সকালে নতুন করে উদ্ধারকাজ শুরু করেছে বিপর্যয় মোকাবেলা বাহিনী। এখনো ধসকবলিত ৮৬ জন গ্রামবাসীর খোঁজ মেলেনি।
রায়গড় জেলার ইরশালওয়াড়ি গ্রামে বুধবার ভোরে পাহাড়ের একাংশ ধসে পড়ে। কাদামাটিতে বসে যায় গ্রামের একাধিক বাড়ি। সেই থেকে এখন পর্যন্ত আদিবাসী গ্রামটির ধ্বংসস্তূপ থেকে ২৫ জনের দেহ উদ্ধার করা হয়েছে। এ ছাড়া হৃদরোগে আক্রান্ত হয়ে উদ্ধারকারী দলের এক সদস্যের মৃত্যু হয়েছে।
বুধবার থেকেই উদ্ধারকাজ শুরু হয়েছিল রায়গড়ে। কিন্তু বৃষ্টির কারণে বারবার তা ব্যাহত হয়। বৃহস্পতিবার রাত পর্যন্ত মৃতের সংখ্যা ছিল ১৬। শুক্রবার তা বেড়ে ২২-এ পৌঁছয়।
শনিবার আরো কয়েকটি দেহ উদ্ধার করা হয়েছে। পুলিশ জানিয়েছে, মৃতদের মধ্যে ৯ জন পুরুষ, বেশ কয়েকজন নারী এবং চারটি শিশু। একই পরিবারের ৯ সদস্যের মৃত্যু হয়েছে এই ধসে।
জাতীয় বিপর্যয় মোকাবেলা বাহিনী শুক্রবার সন্ধ্যা ৬টা নাগাদ ভারি বৃষ্টির কারণে উদ্ধারকাজ স্থগিত রেখেছিল। শনিবার সকালে আবার ধ্বংসস্তূপ সরিয়ে গ্রামবাসীর খোঁজ শুরু হয়।
মহারাষ্ট্র সরকার এ ঘটনায় মৃতদের পরিবারের জন্য পাঁচ লাখ রুপি করে ক্ষতিপূরণ দেওয়ার কথা ঘোষণা করেছে। সেই সঙ্গে যারা আহত হয়েছে, তাদের চিকিৎসার খরচও বহন করবে সরকার।
ইরশালওয়াড়ি গ্রামের বাসিন্দা মোট ২২৯ জন। তাদের মধ্যে ১১১ জন নিরাপদে রয়েছেন। ৪৮টি বাড়ির মধ্যে অন্তত ১৭টি বাড়ি ধ্বংসস্তূপে পুরোপুরি বা আংশিক চাপা পড়েছে।
পাহাড়ের ওপরে এই গ্রামটিতে যাতায়াতের পথ বেশ দুর্গম। পাকা রাস্তা নেই। পাহাড়ের নিচ থেকে টানা চড়াই পথ পেরিয়ে এই গ্রামে পৌঁছতে অন্তত আধাঘণ্টা সময় লাগে। তার ওপর গত কয়েক দিন মহারাষ্ট্রে প্রবল বৃষ্টি হচ্ছে। সে কারণেই ধস নেমেছে। দুর্গম এলাকায় উদ্ধারকাজে সমস্যায় পড়ছেন উদ্ধারকারীরাও।
রায়গড়ের এ দুর্ঘটনা থেকে শিক্ষা নিয়ে মহারাষ্ট্র সরকার রাজ্যের এই সমস্ত দুর্গম ও ধসপ্রবণ এলাকাগুলো থেকে বাসিন্দাদের নিরাপদ স্থানে সরিয়ে দেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে।
সূত্র : আনন্দবাজার পত্রিকা