জবি শিক্ষার্থী শাওনের পরিবারের ক্ষতিপূরণ নিয়ে রুল

ফাইল ছবি

রাজধানীর গেন্ডারিয়ার ধূপখোলা বাজার এলাকায় গ্যাসলাইনের ‘লিকেজ’ থেকে বিস্ফোরণে দগ্ধ হয়ে মারা যাওয়া জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের (জবি) শিক্ষার্থী মেহেদী হাসান শাওনের পরিবারের ক্ষতিপূরণ নিয়ে রুল জারি করেছেন হাইকোর্ট।

শাওনের পরিবারকে ১২ কোটি টাকা ক্ষতিপূরণ দিতে কেন নির্দেশ দেওয়া হবে না এবং ক্ষতিপূরণ দিতে বিবাদীদের নিষ্ক্রিয়তা কেন আইনগত কর্তৃত্ববহির্ভূত ঘোষণা করা হবে না, জানতে চাওয়া হয়েছে রুলে। সেই সঙ্গে যাদের বা যে কর্তৃপক্ষের অবহেলায় এ বিস্ফোরণ ঘটেছে, তাদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নিতে কেন নির্দেশ দেওয়া হবে না, তাও জানতে চাওয়া হয়েছে রুলে। ঢাকা ওয়াসা, তিতাস গ্যাস ট্রান্সমিশন অ্যান্ড ডিস্ট্রিবিউশন কম্পানি লিমিটেড ও আরএফএলকে রুলের জবাব দিতে বলা হয়েছে।

মেহেদী হাসানের বাবা আব্দুল লতিফের রিটে প্রাথমিক শুনানির পর বিচারপতি জে বি এম হাসান ও বিচারপতি রাজিক আল জলিলের হাইকোর্ট বেঞ্চ আজ মঙ্গলবার এ রুলসহ আদেশ দেন। আদালতে রিটের পক্ষে শুনানি করেন আইনজীবী মো. মনিরুজ্জামান লিংকন। রাষ্ট্রপক্ষে ছিলেন ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল কাজী মাঈনুল হাসান।

আইনজীবী মো. মনিরুজ্জামান লিংকন কালের কণ্ঠকে বলেন, ‘রুল জারির পাশাপাশি হাইকোর্ট দুটি অন্তর্বর্তী আদেশ দিয়েছেন।

প্রথমটি হলো- কার বা কাদের অবহেলায় এ বিস্ফোরণের ঘটনা ঘটেছে তা অনুসন্ধান করে ৬০ দিনের মধ্যে প্রতিবেদন দিতে ঢাকার জেলা প্রশাসককে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক পদের নিচে নয়, এমন দুজন কর্মকর্তাকে দিয়ে তদন্ত করাতে বলেছেন আদালত। আর এ বিস্ফোরণের পর ঢাকা ওয়াসা ও তিতাস গ্যাস কর্তৃপক্ষ কী কী পদক্ষেপ নিয়েছে, তা জানিয়ে আলাদা দুটি প্রতিবেদন দিতে বলা হয়েছে। এ দুটি প্রতিবেদনও ৬০ দিনের মধ্যে হবে।

‘ আদালত আগামী ১১ নভেম্বর পরবর্তী আদেশের তারিখ রেখেছেন বলে জানান রিটকারী পক্ষের এ আইনজীবী।

গত ১ মে ধূপখোলা বাজারে রাস্তার গ্যাসলাইন লিকেজ থেকে বিস্ফোরণের ঘটনা ঘটে। এতে শিশুসহ ৯ জন দগ্ধ হন। পরে তিতাস গ্যাস কর্তৃপক্ষের এক বিবৃতিতে বলা হয়, ধূপখোলা বাজারে ওয়াসার ঠিকাদারের পানির পাইপ স্থাপনের সময় তিতাস গ্যাসের পাইপলাইন ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। তিতাস গ্যাসের জরুরি দল ক্ষতিগ্রস্ত পাইপলাইন মেরামতের কাজ করছে।

বিস্ফোরণে দগ্ধ ব্যক্তিদের মধ্যে ছয়জনকে শেখ হাসিনা জাতীয় বার্ন ও প্লাস্টিক সার্জারি ইনস্টিটিউটে ভর্তি করা হয়। বাকি তিনজনকে ভর্তি করা হয় ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের বার্ন ইউনিটে।

জবি শিক্ষার্থী মেহেদি হাসান শাওন (২৫) ছাড়া অন্য দগ্ধ ব্যক্তিরা হলেন- মো. সোহেল (৪৮), আলী হোসেন (৫২), রাশেদ মিয়া (৩২), সাহারা বেগম (৬৫), মিজানুর রহমান (৩২), আবদুর রহিম (৫০), তার মেয়ে মিম আক্তার (২১) ও মিমের ছেলে মো. আলিফ (২)। 

মেহেদি হাসান শাওন জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের উদ্ভিদ বিজ্ঞান বিভাগের শিক্ষার্থী ছিলেন। বিস্ফোরণে শাওনের শরীরের ৩০ ভাগ দগ্ধ ছিল বলে জানায় চিকিৎসকরা। গত ৬ মে সকালে রাজধানীর শেখ হাসিনা বার্ন ইনস্টিটিউটে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তার মৃত্যু হয়। পরে গত সপ্তাহে ক্ষতিপূরণ চেয়ে হাইকোর্টে রিট করেন শাওনের বাবা আব্দুল লতিফ।

LEAVE A REPLY