নাইজেরিয়ার আদামাওয়া রাজ্যে লুটপাট থামাতে সান্ধ্য আইন জারি করা হয়েছে। প্রেসিডেন্ট তিনুবু জ্বালানি থেকে ভর্তুকি তুলে নেওয়ার পর উত্তর-পূর্বাঞ্চলের রাজ্যটিতে একদল মানুষ ব্যাপক লুটতরাজ চালায়। পরিবেশবাদীরা ভর্তুকি প্রত্যাহারকে স্বাগত জানালেও এর প্রভাবে জ্বালানি ও অন্যান্য দ্রব্যের মূল্য বাড়ছে।
গত ফেব্রুয়ারিতেই নির্বাচনে জয়ী হয়ে ক্ষমতায় আসেন তিনুবু।
তবে বিরোধীরা নির্বাচনের স্বচ্ছতা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছে। নির্বাচনে তার নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী ছিলেন আতিকু আবুবকর। রক্ষণশীল এই মুসলিম নেতা ২৯ শতাংশ ভোট পেয়ে দ্বিতীয় হন। তার চেয়ে ৭ শতাংশ বেশি ভোট পেয়ে প্রেসিডেন্ট নির্বাচিত হলেও তিনুবুর এ জয় মেনে নেননি আতিকু।
রবিবার আতিকুর নির্বাচনী এলাকা আদামাওয়া রাজ্যের রাজধানী ইয়োলার সরকারি ও বেসরকারি গুদাম ও দোকানপাট থেকে খাদ্যপণ্যসহ বিভিন্ন সামগ্রী লুট করে নেয় একদল মানুষ। সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়ে লুটপাটের সেই দৃশ্য। একটি ভিডিওতে নাইজেরিয়ার জরুরি ব্যবস্থাপনা সংস্থার (এমইএনএ) খাদ্যশস্য, পাস্তা এবং অন্যান্য দ্রব্য বস্তায় ভরে নিয়ে যেতে দেখা যায় একদল উচ্ছৃঙ্খল জনতাকে।
বিভিন্ন বেসরকারি সংস্থা এবং পরিবেশবাদী সংগঠন দীর্ঘদিন ধরে জ্বালানি থেকে ভর্তুকি প্রত্যাহারের দাবি জানিয়ে আসছিল।
তিনুবু ক্ষমতায় এসেই তাদের দাবি অনুযায়ী জ্বালানি থেকে ভর্তুকি তুলে নেন। পাশাপাশি নাইজেরিয়ার মুদ্রা নাইরার ওপর থেকে সব নিয়ন্ত্রণমূলক ব্যবস্থা প্রত্যাহার করে নেন। এর ফলে জ্বালানির দাম কোনো কোনো ক্ষেত্রে ৪০০ শতাংশ পর্যন্ত বেড়ে যায়। এ ছাড়া নাইরার দামও অনেকটা কমে যাওয়ায় আমদানিনির্ভর পণ্য ক্রয় কঠিন হয়ে পড়ে। এর ফলে খাদ্যপণ্যের দামও বাড়তে থাকে।
এ ছাড়াও আদামাওয়া, বর্নো ও ইয়োবে—এই তিন রাজ্যে ইসলামী বিচ্ছিন্নতাবাদীদের সঙ্গে নাইজেরিয়ার সেনাবাহিনীর লড়াই চলছে দীর্ঘদিন ধরে। এ কারণে সেসব এলাকার অনেক মানুষ নিজের ঘর ছাড়তে বাধ্য হয়েছে। আদামাওয়া রাজ্যে লুটপাট হলেও বাকি দুটি রাজ্যে অবশ্য পরিস্থিতি এখনো শান্ত।
রবিবার গভর্নর আহমাদু উমারু ফিনতিরি সকাল-সন্ধ্যা সান্ধ্য আইন ঘোষণার পর থেকে আদামাওয়ার রাজধানী ইয়োলাও শান্ত বলে জানা গেছে।