ব্লাড ক্যান্সার মূলত রক্তের কোষের উৎপাদন ও কার্যকারিতাকে প্রভাবিত করে। এটি যখন ঘটে, তখন রক্তের কোষগুলো অস্বাভাবিকভাবে ও অনিয়ন্ত্রিতভাবে বৃদ্ধি পেতে থাকে, রক্তের স্বাভাবিক কার্যকারিতায় হস্তক্ষেপ করে।
ধরন
ব্লাড ক্যান্সারের তিনটি প্রধান প্রকার বা ধরন রয়েছে।
এগুলো হলো- লিউকেমিয়া, লিম্ফোমা ও মাইলোমা।
কারণ
ব্লাড ক্যান্সারের সঠিক কারণ অজানা। আবার রোগটি বংশানুক্রমিকভাবে হয়, তা-ও কিন্তু নয়। তবে বংশানুক্রমিকভাবে দেহের যেকোনো অসুখ বংশপরম্পরায় চলে আসতে পারে। দেহে থাকা এই রোগ প্রতিনিয়ত অ্যান্টিজেনিক স্টিমুলেশনের মাধ্যমে ক্যান্সারে রূপ নিতে পারে।
আমাদের দেশে এই অ্যান্টিজেনিক স্টিমুলেশন হলো ভেজাল খাদ্য খাওয়া, কিছু রাসায়নিক পদার্থ, বিকিরণের সংস্পর্শ ইত্যাদি। এই প্রভাবগুলো আমাদের দেহে থাকা ডিফেক্টিভ জিনের মধ্যে অ্যান্টিজেনিক স্টিমুলেশন হিসেবে কাজ করে। আবার দেখা যায় কিছু ভাইরাস রয়েছে; যেমন হেপাটাইটিস বি, সিসহ আরো অনেক ভাইরাস, যেগুলো শরীরকে আক্রান্ত করলে দীর্ঘমেয়াদি ব্লাড ক্যান্সার হতে পারে।
লক্ষণ
* ব্লাড ক্যান্সারের ধরন এবং স্টেজ বা পর্যায়ের ওপর নির্ভর করে কিছু লক্ষণ পরিলক্ষিত হয়।এর সাধারণ লক্ষণগুলো হলো :
* ঘন ঘন জ্বর হওয়া, কিছুতেই জ্বর না কমা
* হিমোগ্লোবিনের পরিমাণ দিন দিন কমে যাওয়ার ফলে দুর্বল লাগা
* ঘন ঘন সংক্রমণ
* ঘন ঘন কাশি
* ক্ষত বা অল্পতেই রক্তক্ষরণ
* দেহের বিভিন্ন স্থানে, বিশেষ করে হাড়ে ব্যথা অনুভূত হওয়া
* গলা ও পেটের বিভিন্ন অঙ্গ; যেমন—লিভার, প্লিহা, লিম্ফনোড ইত্যাদির অস্বাভাবিক বৃদ্ধি। এ ছাড়া ঘাড়, পিঠও ফুলতে পারে
* রাতের বেলায় শরীর ঘেমে যাওয়া
* ত্বক ফ্যাকাসে হয়ে যাওয়া
* খাবারে অরুচি অথবা সঠিকভাবে খাওয়াদাওয়ার পরও ছয় মাসের মধ্যে মাত্রাতিরিক্ত ওজন কমে যাওয়া
* ওষুধ খেয়েও রোগ ভালো না হওয়া ইত্যাদি।
তবে এই লক্ষণগুলো ব্লাড ক্যান্সার ছাড়া অন্যান্য সমস্যার কারণেও হতে পারে।
চিকিৎসা
উচ্চতর গবেষণা এবং চিকিৎসার যথেষ্ট অগ্রগতি ব্লাড ক্যান্সারে আক্রান্ত অনেক লোকের বেঁচে থাকার হারকে বাড়িয়েছে। তবে ব্লাড ক্যান্সারের চিকিৎসা নির্ভর করে ক্যান্সারের ধরন, পর্যায় ও কারণের ওপর।
সাধারণ চিকিৎসার অপশনগুলোর মধ্যে রয়েছে কেমোথেরাপি, রেডিয়েশন থেরাপি, টার্গেটেড থেরাপি, ইমিউনোথেরাপি, স্টেমসেল ট্রান্সপ্লান্ট এবং কখনো কখনো অস্ত্রোপচার। এসব চিকিৎসার পরিকল্পনা করে থাকেন মেডিক্যাল অনকোলজিস্ট বা হেমাটোলজিস্টরা।