প্রতীকী ছবি
কানে ব্যথা সাধারণত বাচ্চাদের বেশি হতে দেখা যায়। তবে যেকোনো বয়সেই আমরা কানের ব্যথায় আক্রান্ত হতে পারি। এক কান বা উভয় কানেই ব্যথা হতে পারে, তবে সাধারণত এক কানেই বেশি হতে দেখা যায়। একটানা কানে ব্যথা হতে পারে, আবার কিছুক্ষণ পর পরও হতে পারে।
উপসর্গ
♦ হালকা বা তীব্র ব্যথা বা জ্বালা অনুভূত হওয়া
♦ কান ভার বা বন্ধ লাগা
♦ কম শোনা
♦ কান থেকে পানি, রক্ত বা পুঁজ বের হওয়া
বাচ্চাদের ক্ষেত্রে যেসব লক্ষণ থাকে
♦ অস্থিরতা ও অযথা বারবার কান্নাকাটি করা
♦ জ্বর, কান ভার লাগা ও মাথা ব্যথা
♦ কথা বললে বা ডাকলে কম সাড়া দেওয়া
♦ বারবার কানে হাত দেওয়া বা টেনে ধরা
♦ খাবারে অনীহা
কারণ
বহিঃকর্ণে ইনফেকশন—
♦ ময়লা পানিতে সাঁতার কাটা
♦ কানে হেডফোন ব্যবহার করা
♦ কটন বাড, কাঠি, মুরগির পাখা বা আঙুল দিয়ে কান চুলকানোর সময় কানের ভেতরের চামড়া ক্ষতিগ্রস্ত হতে দেখা যায়, যা পরে ক্ষতিকর ব্যাকটেরিয়া বা ফাঙ্গাস সংক্রমণে সাহায্য করে।
মধ্যকর্ণে ইনফেকশন—
বাচ্চাদের কানে এ কারণেই ব্যথা বেশি হতে দেখা যায়। সর্দি-কাশি হলে মধ্যকর্ণে পানি জমে যায়। সঠিক সময়ে চিকিৎসা না করালে ব্যাকটেরিয়া সংক্রমণ হয়ে কানের ভেতর পুঁজ তৈরি হয়ে প্রচণ্ড ব্যথা হয়ে থাকে।
অন্তঃকর্ণে ইনফেকশন—
ভাইরাস ও ব্যাকটেরিয়া সংক্রমণের মাধ্যমে ল্যাবিরিন্থাইটিস নামক রোগ হতে পারে। এটা সচরাচর দেখা যায় না।
করণীয়
♦ সাধারণ ব্যথার ওষুুধ প্যারাসিটামল বা আইবুপ্রোফেন জাতীয় ওষুুধ খেতে পারেন। ঠাণ্ডা-সর্দি হলে অ্যান্টি-হিস্টামিন জাতীয় ওষুুধের পাশাপাশি নাকে ডিকনজেসটেন্ট জাতীয় ড্রপ ব্যবহার করা যেতে পারে।
♦ কান চুলকাবেন না, কচলাবেন না। কটন বাড, কাঠি, বা অন্য কিছু দিয়ে কান পরিষ্কার করবেন না।
♦ পানি যেন কানে না ঢোকে সে ব্যাপারে সতর্ক থাকুন।
♦ চুইংগাম চিবাবেন ও বারবার ঢোক গিলুন।
♦ কানে সেঁক দিতে পারেন।
♦ নাক দিয়ে গরম পানির ভাপ টানুন।
কখন চিকিৎসকের শরণাপন্ন হবেন?
♦ ব্যথার সঙ্গে জ্বর এলে
♦ তীব্র ব্যথা হলে
♦ ২৪-৪৮ ঘণ্টার মধ্যে ব্যথা না কমলে
♦ কানে তীব্র ব্যথা হয়ে যদি হঠাৎ ব্যথা কমে যায়। কারণ, অনেক সময় পর্দা ফেটে গিয়ে থাকলে কানের ব্যথা হঠাৎ কমে যায়।
♦ মাথা ব্যথা, মাথা ঘুরলে, কানে শোঁ শোঁ হলে
♦ কান থেকে রক্ত, পুঁজ বা পানি বের হলে
♦ কানের চারপাশ ফুলে উঠলে বা লাল হয়ে গেলে
পরামর্শ দিয়েছেন
ডা. আলমগীর মো. সোয়েব
সিনিয়র কনসালট্যান্ট (ইএনটি)
স্বাস্থ্যসেবা বিভাগ
গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকার।