
মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের ২০২০ সালের প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে জর্জিয়া প্রদেশের ফলাফল পাল্টে দেওয়ার চেষ্টার অভিযোগে দায়ের করা মামলায় গ্রেফতার হয়েছেন সাবেক প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। স্থানীয় সময় বৃহস্পতিবার তাকে জর্জিয়ার ফুলটন কাউন্টি কারাগারে আনুষ্ঠানিকভাবে গ্রেফতার দেখানো হয়। তবে গ্রেফতারের পর বেশিক্ষণ কারাবন্দী থাকতে হয়নি সাবেক এই প্রেসিডেন্টকে। ২ লাখ মার্কিন ডলারের বন্ডে তাকে জামিন দেওয়া হয় অল্প সময়ের মধ্যেই।
গত ১৪ আগস্ট ২০২০ সালে জর্জিয়ায় নির্বাচনের ফল বদলে দেওয়ার চেষ্টা করেন এমন অভিযোগ আনা হয় ট্রাম্প ও তার ১৮ সহযোগীর বিরুদ্ধে। ওই দিন ৯৮ পৃষ্ঠার একটি বিস্তারিত প্রতিবেদন প্রকাশ করা হয়। এতে ট্রাম্পসহ ১৯ জনের বিরুদ্ধে ৪১টি অভিযোগ আনা হয়েছে।
জর্জিয়ার গ্র্যান্ড জুরি ট্রাম্পসহ তাদের বিরুদ্ধে র্যাকিটেরিং ইনফ্লুয়েন্সড অ্যান্ড করাপ্ট অর্গানাইজেশন (আরআইসিও) আইন ভঙ্গের অভিযোগ এনেছেন।
এরপর ট্রাম্প ও তার সহযোগীদের বিরুদ্ধে গ্রেফতারি পরোয়ানা জারি করা হয়। বৃহস্পতিবার তাকে প্রেপ্তার করা হলেও ২ লাখ ডলারের মুচলেকা সাপেক্ষে তাকে ছেড়ে দেওয়া হয়।
গত ১৪ আগস্ট ট্রাম্পের এই অভিযোগপত্র দেওয়ার আগের দিন আদালতের ওয়েবসাইটে ১৩ অভিযোগসংবলিত একটি নথি প্রকাশ করা হয়েছিল। পরে এই নথি সরিয়ে দেওয়া হয়।
এতে বলা হয়, ২০২১ সালের ২ জানুয়ারি ট্রাম্প জর্জিয়ার শীর্ষ নির্বাচন কর্মকর্তার সঙ্গে টেলিফোনে কথা বলেছিলেন। এ সময় ট্রাম্প ওই কর্মকর্তাকে বলেন, কিছু ভোট খুঁজে বের করুন, যাতে নির্বাচনের ফল বদলে দেওয়া যায়। ট্রাম্পের ওই আদেশে সাড়া দেননি কর্মকর্তা। এর ছয় দিন পর কংগ্রেস ভবন ইউএস ক্যাপিটল হিলে ব্যাপক হামলা চালায় ট্রাম্প সমর্থকেরা। সেই দিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেনের জয়ের স্বীকৃতি দিতে কংগ্রেসের যৌথ অধিবেশন বসেছিল।
কংগ্রেস সদস্যরা যাতে জো বাইডেনকে জয়ী ঘোষণা করতে না পারেন, এ লক্ষ্যে হামলা চালায় তারা।
ওই অভিযোগপত্রে আরও বলা হয়েছে, ২০২০ সালের ৩ নভেম্বর ভোটের আগে থেকে ২০২২ সালের সেপ্টেম্বর পর্যন্ত ট্রাম্প ও তার সহযোগীরা বেশ কিছু অপরাধ করেছেন। এর মধ্যে ২০২০ সালের নির্বাচন যাচাই-বাছাইয়ে আইনপ্রণেতাদের গঠিত কমিটিতে মিথ্যা সাক্ষী দেওয়ার অভিযোগ রয়েছে। একই সঙ্গে নির্বাচনী প্রক্রিয়ায় বাধা, নির্বাচনী সরঞ্জাম ভাঙচুরের অভিযোগও আনা হয়েছে ট্রাম্প ও তার সহযোগীদের বিরুদ্ধে। বলা হয়েছে, জর্জিয়ার প্রত্যন্ত এলাকাগুলোয় ভোটারদের তথ্য চুরি ও ব্যালটের ছবি তুলেছেন ট্রাম্পের সমর্থকেরা। এছাড়া তার সমর্থকেরা নির্বাচনী কর্মকর্তাদের হয়রানিও করেছেন। অভিযোগ প্রমাণিত হলে তার ২০ বছর পর্যন্ত কারাদণ্ড হতে পারে।
এ নিয়ে চলতি বছরে দুইবার গ্রেফতার হলেন ট্রাম্প। ট্রাম্প বরাবরই তার বিরুদ্ধে সকল অভিযোগ অস্বীকার করে আসছেন। তার অভিযোগ, এসব উদ্দেশ্যপ্রণোদিত।
সূত্র: বিবিসি,সিএনএন