ডিমের দাম কমলেও চড়া সবজি পেঁয়াজ-রসুনের বাজার

রাজধানীর বাজারে ফার্মের মুরগির লাল ডিমের দাম প্রতি ডজনে ১০ থেকে ১৫ টাকা কমে ১৫০ থেকে ১৫৫ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। বেড়ে গেছে সবজির দাম। বেগুন, করলা, বরবটির কেজি শতের ঘরে। অন্যান্য সবজির দামও কেজিপ্রতি ১০ থেকে ১৫ টাকা বেড়েছে।

পেঁয়াজ কেজিতে ১০ থেকে ২০ টাকা ও রসুন ১০ টাকা বেড়েছে।

বৃহস্পতিবার (২৪ আগস্ট) রাজধানীর বাড্ডা, রামপুরা ও জোয়ারসাহারা বাজার ঘুরে এবং ব্যবসায়ীদের সঙ্গে কথা বলে নিত্যপণ্যের বাজারের এই পরিস্থিতি জানা গেছে। সবজি ব্যবসায়ীরা বলছেন, টানা কয়েক দিনের বৃষ্টিতে বিভিন্ন এলাকায় ক্ষেতে পানি জমে সবজির ক্ষতি হয়েছে। ভিজে নরম হয়ে ক্ষেতেই পচে যাচ্ছে অনেক সবজি।

এতে বাজারে সবজির সরবরাহ কমেছে, চাহিদার কারণে বেড়ে গেছে দাম।

বাজারে ভালো মানের গোল বেগুন প্রতি কেজি ১০০ থেকে ১২০ টাকা ও লম্বা বেগুন ৭০ থেকে ৮০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। করলা প্রতি কেজি ৯০ থেকে ১০০ টাকা, কাঁচা মরিচ ২০০ থেকে ২৪০ টাকা, শসা ৬০ থেকে ৮০ টাকা, কচুমুখি ৮০ টাকা, বরবটি ৯০ থেকে ১০০ টাকা, চিচিঙ্গা, ঢেঁড়শ ও পটোল ৬০ টাকা, ঝিঙা ৮০ টাকা, পেঁপে ৪০ টাকা ও আলু ৪০ থেকে ৪৫ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। তবে সপ্তাহের ব্যবধানে পাকা টমেটোর দাম কিছুটা কমে ১৪০ থেকে ১৬০ টাকা কেজি দরে বিক্রি হচ্ছে।

গত সপ্তাহে টমেটো ছিল ২০০ থেকে ২২০ টাকা। চালকুমড়া ও লাউ প্রতিটি ৬০ থেকে ৭০ টাকা।

জোয়ারসাহারা বাজারের সবজি ব্যবসায়ী মিলন হোসেন খান কালের কণ্ঠকে বলেন, কারওয়ান বাজারে সবজির সরবরাহ কমে যাওয়ায় পাইকারিতেই বড় গোল বেগুনের দাম কেজিতে ২০ টাকা পর্যন্ত বেড়েছে। অন্যান্য সবজির দামও পাইকারিতে কেজি ৫ থেকে ১০ টাকা পর্যন্ত বেড়ে গেছে। এতে খুচরায় দাম বেড়ে বেশির ভাগ সবজি বাড়তি দামে বিক্রি হচ্ছে।

বাড্ডার সবজির বাজারে কথা হয় ক্রেতা উবায়দুল হকের সঙ্গে। বেসরকারি একটি প্রতিষ্ঠানের এই কর্মী কালের কণ্ঠকে বলেন, ‘বাজারে এলে সবজির দাম শুনে মাথা ঘোরে। আধা কেজি করে কয়েকটি সবজি কিনলেই চার-পাঁচ শ টাকা নেমে যায়। আজ (বৃহস্পতিবার) দেড় হাজার টাকা নিয়ে এসেছি। তালিকার অর্ধেক জিনিস কিনতেই টাকা শেষ। বাজার তদারকিতে সরকারকে জোরালোভাবে গুরুত্ব দিতে হবে, তা না হলে বাজারের এ অস্থিরতা কমবে না।’

বাজারে ডালের দাম আগের মতোই আছে। মসুরের চিকন ডাল প্রতি কেজি ১৪০ টাকা ও মোটা ডাল ১০০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। খোলা চিনি প্রতি কেজি ১৩৫-১৪০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। বাজারে প্যাকেটজাত চিনির সরবরাহ নেই।

পেঁয়াজ ব্যবসায়ীরা বলছেন, গত শনিবার পেঁয়াজ রপ্তানিতে ভারত ৪০ শতাংশ শুল্ক আরোপের ঘোষণা দেওয়ায় অনেক আমদানিকারক পেঁয়াজ আমদানি বন্ধ রেখেছেন। এতে বাজারে সরবরাহ কমে দাম চড়েছে। অনেকে আবার বাড়তি শুল্ক দিয়েই ভারত থেকে পেঁয়াজ আমদানি শুরু করেছেন। এর প্রভাবও পড়েছে দামে।

বাড্ডার মেসার্স আলী স্টোরের ব্যবসায়ী আব্দুর রশিদ বলেন, এক সপ্তাহের ব্যবধানে সবচেয়ে বেশি বেড়েছে পেঁয়াজের দাম। আগে ভারতের পেঁয়াজ কেজি ছিল ৫০ থেকে ৬০ টাকা, সেটি এখন বিক্রি হচ্ছে ৭০ থেকে ৮০ টাকায়। দেশি পেঁয়াজ ছিল ৭৫ থেকে ৮০ টাকা, তা এখন ৮৫ থেকে ৯৫ টাকা কেজি।

তিনি বলেন, ডিমের দাম কিছুটা কমেছে। গত সপ্তাহে প্রতি ডজন ডিমের দাম ছিল ১৬৫-১৭০ টাকা, এখন তা কমে প্রতি ডজন ১৫০-১৫৫ টাকায় বিক্রি হচ্ছে।

সরকারি বিপণন সংস্থা টিসিবির বাজারদরে এদিন দেখা গেছে, এক সপ্তাহে পেঁয়াজের দাম কেজিতে ১১ শতাংশ ও রসুনের দাম কেজিতে ৪ শতাংশ বেড়েছে। প্রতি ডজন ফার্মের মুরগির ডিমের দাম ৬ শতাংশ পর্যন্ত কমেছে।

LEAVE A REPLY