সিরিয়ায় প্রেসিডেন্ট বাশার আল-আসাদের নতুন আতঙ্ক দেশটির শীর্ষ বিদ্রোহী গোষ্ঠী হায়াত তাহরির আল-শাম (এইচটিএস)। বছরের পর বছর ধরে চলা দেশটির সরকারবিরোধী বিক্ষোভ-হামলা আরও জোরদার করছে দলটি।
হায়াত তাহরির আল-শামের জন্ম ২০১৭ সালে। ইদলিব শহরে। আলেপ্পোর পশ্চিশাঞ্চলীয় গ্রামাঞ্চল, লাত্তইকয়া পর্বতমালা ও উত্তর পশ্চিম হামার আল-গাব সমভ‚মি অন্তর্ভুক্ত। জন্মের পর থেকেই যাদের একমাত্র ব্রত ‘বাশার উৎখাত’।
সেই লক্ষ্য আরও জোরদার করতেই এবার অত্যাধুনিক প্রযুক্তি আর ড্রোন নিয়ে নেমেছেন বিক্ষোভ মাঠে। দলের শীর্ষস্থানীয় একজন জানান, তারা সরকারের বিরুদ্ধে অভিযান চালিয়ে যাবেন। কারণ সরকারি বাহিনী ও তাদের মিত্র রাশিয়া তাদের অঞ্চলে বিমান হামলা চালিয়ে যাচ্ছে। আলজাজিরা।
গত কয়েক বছর ধরে নিজেকে পুনরুদ্ধার করেছে এইচটিএস। দলটি একসময় আল কায়দার সাথে যুক্ত ছিল। ধীরে ধীরে সিরিয়ার উত্তর-পশ্চিমাঞ্চলে সবচেয়ে শক্তিশালী বিদ্রোহী গোষ্ঠীতে পরিণত হয়েছে।
সিরিয়ার রাজনৈতিক বিষয়ক বিশ্লেষক আব্বাস শরিফার মতে, এ অঞ্চলের সশস্ত্র বিরোধী দলগুলোর মধ্যে এই গোষ্ঠীর সবচেয়ে বেশি যোদ্ধা রয়েছে।
তাদের যোদ্ধাদের সম্পর্কে কোনো সরাসরি পরিসংখ্যান না থাকলেও শরিফা অনুমান করেন, তাদের সংখ্যা সাত হাজার। এইচটিএস-এর কমান্ডার ইমাদ্দিন আল-খতিবের মতে, সরকারের কর্মকাণ্ড ইদলিবের স্থিতিশীলতা ও উন্নয়নের বিরুদ্ধে পরিচালিত।
আরও বলেন, শত্রুরা কয়েকবার আমাদের জায়গায় প্রবেশের চেষ্টা করেছিল কিন্তু তারা ব্যর্থ হয়েছে।
আল-খতিব বলেন, তাদের গোষ্ঠীটি শত্রুদের মনোবল ভাঙতে সফল হয়েছে। আরও বলেন, ‘চলতি মাসে আইন আল-বায়দা ও নবী ইউনূসে সফলভাবে দুটি অপারেশন হয়েছে। আমাদের যোদ্ধারা প্রায় ৩০ জন শত্রু সৈন্য ও অফিসারকে গুলি করতে সক্ষম হয়েছে। আমাদের কাছে অনেক প্রতিরোধক সরঞ্জাম ও অস্ত্র রয়েছে। ক্ষেপণাস্ত্র ও মর্টার শেল সিরিয়া ও রাশিয়ার অপারেশন ও মিটিং সাইটগুলোতে পৌঁছাতে পারে।’
অতীতের ভুল থেকে শিক্ষা নিয়ে নতুন কৌশল অবলম্বন করে সামনের গতিপথকে আরও শক্তিশালী করা হয়েছে বলেও জানান।
সরকারি বাহিনী গত সপ্তাহে সিরিয়ার উত্তর-পশ্চিমের ইদলিব গভর্নরেটকে লক্ষ্যবস্তু করে। সিরিয়ান অবজারভেটরি ফর হিউম্যান রাইটস এইচটিএস-এর ২৩ জন যোদ্ধার হত্যাকাণ্ডের নথিভুক্ত করে।
দেশটির প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়ের মতে, হামলায় কয়েকডজন এইচটিএস যোদ্ধা আহত ও নিহত হয়েছে। তবে নিহতদের সংখ্যা জানাতে অস্বীকৃতি জানায় এইচটিএস।
সিরিয়ান সিভিল ডিফেন্স জানান, এ বছর ইদলিব গভর্নরেটে কমপক্ষে ৫২ জন বেসামরিক লোক নিহত হয়েছে ও ২০৮ জন আহত হয়েছে।