আর্মেনিয়ার প্রধানমন্ত্রী বলেছেন, তার দেশের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে শুধু রাশিয়ার ওপর নির্ভর করার নীতি ছিল একটি কৌশলগত ভুল। কারণ মস্কো তা প্রদানে ব্যর্থ হয়েছে এবং বিস্তৃত অঞ্চলে তার ভূমিকা বন্ধের প্রক্রিয়াতে রয়েছে।
রবিবার প্রকাশিত ইতালীয় সংবাদপত্র লা রিপাবলিকার সঙ্গে একটি সাক্ষাৎকারে নিকোল পাশিনিয়ান আর্মেনিয়ার নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে ব্যর্থ হওয়ার জন্য রাশিয়াকে অভিযুক্ত করেছেন। এ সময় তিনি বিচ্ছিন্ন নাগর্নো-কারাবাখ অঞ্চলে প্রতিবেশী আজারবাইজানের আগ্রাসনের কথা উল্লেখ করেন।
পাশিনিয়ান বলেছেন, আর্মেনিয়ার সঙ্গে মস্কোর একটি প্রতিরক্ষা চুক্তি এবং একটি সামরিক ঘাঁটি রয়েছে। কিন্তু রাশিয়া তার দেশকে পর্যাপ্তভাবে রাশিয়ানপন্থী হিসেবে বিবেচনা করে না। তিনি বিশ্বাস করেন, রাশিয়া বৃহত্তর দক্ষিণ ককেশাস অঞ্চল ছেড়ে যাওয়ার প্রক্রিয়ায় রয়েছে।
ইউরোপীয় ইউনিয়ন ও যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে আর্মেনিয়ার সম্পর্ক এবং এ অঞ্চলের অন্য দেশের সঙ্গে ঘনিষ্ঠ সম্পর্ক স্থাপনের প্রচেষ্টার স্পষ্ট উল্লেখ করে আর্মেনীয় প্রধানমন্ত্রী বলেন, ইয়েরেভান তাই দেশের নিরাপত্তা ব্যবস্থায় বৈচিত্র্য আনার চেষ্টা করছে।
পাশিনিয়ান লা রিপাবলিকাকে বলেছেন, ‘অস্ত্র ও গোলাবারুদ সংগ্রহের ক্ষেত্রে আর্মেনিয়ার নিরাপত্তা স্থাপত্য ৯৯.৯৯৯ শতাংশ রাশিয়ার সঙ্গে যুক্ত ছিল। কিন্তু আজ আমরা দেখতে পাচ্ছি, রাশিয়ার নিজেরই অস্ত্রশস্ত্র ও গোলাবারুদের প্রয়োজন (ইউক্রেনের যুদ্ধের জন্য)। এই পরিস্থিতিতে এটি বোধগম্য, চাইলেও রাশিয়ান ফেডারেশন আর্মেনিয়ার নিরাপত্তার চাহিদা মেটাতে পারে না।’
আর্মেনীয় প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘এই উদাহরণটি আমাদের কাছে প্রদর্শন করা উচিত, নিরাপত্তা বিষয়ে শুধু একজন অংশীদারের ওপর নির্ভরতা একটি কৌশলগত ভুল।
’
পাশিনিয়ানের কথাগুলো আর্মেনিয়ার অভ্যন্তরে ক্ষোভের কথা তুলে ধরে। সেখানে অনেকেই তাদের স্বার্থ রক্ষায় রাশিয়ার ব্যর্থতা হিসেবে দেখে।
ইয়েরেভান ও বাকুর মধ্যে আলোচনার সভাপতিত্বকারী মস্কো থেকে পাশিনিয়ানের সাক্ষাৎকারের তাৎক্ষণিক প্রতিক্রিয়া পাওয়া যায়নি। মস্কো অতীতে এ ধরনের সমালোচনায় লাগাম দিয়েছে, তার ক্রিয়াকলাপকে রক্ষা করেছে এবং ইউক্রেনের কারণে তাদের বৈদেশিক নীতির অগ্রাধিকার কমার ধারণা প্রত্যাখ্যান করেছে।
নাগর্নো-কারাবাখ আজারবাইজানের অংশ হিসেবে আন্তর্জাতিকভাবে স্বীকৃত।
কিন্তু এর এক লাখ ২০ হাজার অধিবাসী প্রধানত জাতিগত আর্মেনিয়ান। নব্বইয়ের দশকের গোড়ার দিকে একটি যুদ্ধে এটি বাকুর নিয়ন্ত্রণ থেকে সরে যায়। রাশিয়া যুদ্ধবিরতির মধ্যস্থতা না করা পর্যন্ত ২০২০ সালে আবারও প্রচণ্ড লড়াই হয়েছিল। রাশিয়ান শান্তিরক্ষীরা যুদ্ধবিরতি চুক্তি বহাল রাখতে তাদের কাজ করতে ব্যর্থ হয়েছে বলে পাশিনিয়ান অভিযোগ করেছেন।
সূত্র : রয়টার্স