সৌদি-ইসরায়েল চুক্তি মানার শর্ত দিল ফিলিস্তিন

ফাইল ছবি

সৌদি আরব ও ইসরায়েলের মধ্যে সম্পর্ক স্বাভাবিক করার ঐতিহাসিক চুক্তিকে সমর্থন জানানোর ক্ষেত্রে ফিলিস্তিন বেশ কয়েকটি শর্ত দিয়েছে। তাদের দেওয়া শর্ত মেনে নিলে যুক্তরাষ্ট্র, সৌদি আরব ও ইসরায়েলের মধ্যকার ত্রিপক্ষীয় চুক্তি ফিলিস্তিন মেনে নেবে। গত বুধবার (৬ সেপ্টেম্বর) ফিলিস্তিনি কর্তৃপক্ষের প্রতিনিধিরা এ বিষয়ে রিয়াদে সৌদি কর্মকর্তাদের সঙ্গে বৈঠক করেছেন।

ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম বিবিসি জানিয়েছে, মার্কিন কর্মকর্তাদের সঙ্গেও বৈঠক করবেন ফিলিস্তিনি প্রতিনিধিরা।

দীর্ঘদিন ধরে ইসরায়েল-সৌদি সম্পর্ক স্বাভাবিক করতে সমঝোতার জন্য চাপ দিয়ে আসছিল যুক্তরাষ্ট্র। সৌদি-ইসরায়েল সম্পর্ক স্বাভাবিক করার ক্ষেত্রে যেকোনো চুক্তিকে কেন্দ্র করে বড় ধরনের বিতর্ক থাকবে। ইসরায়েলকে স্বীকৃতি দেওয়ার বিনিময়ে যুক্তরাষ্ট্রের কাছ থেকে নিরাপত্তা সহযোগিতা চায় সৌদি আরব। যে নিশ্চয়তার মধ্যে থাকবে যুক্তরাষ্ট্র নির্মিত অত্যাধুনিক অস্ত্র এবং ইউরেনিয়াম সমৃদ্ধকরণসহ একটি বেসামরিক পারমাণবিক কর্মসূচিতে সহযোগিতা।

গত মঙ্গলবার (৫ সেপ্টেম্বর) হোয়াইট হাউসের জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা জ্যাক সালিভ্যান বলেছেন, ‘অদূর ভবিষ্যতে আমরা কোনো ঘোষণা বা বড় অগ্রগতি প্রত্যাশা করছি না।’ 

সম্প্রতি মধ্যস্থতাকারীর ভূমিকায় মার্কিন কূটনীতি গতি পেয়েছে। মার্কিন কর্মকর্তারা রিয়াদ, আম্মান ও জেরুজালেম সফর করেছেন।  সৌদি আরব।

১৯৪৮ সালে ইসরায়েল রাষ্ট্র গঠিত হওয়ার পর কখনো দেশটিকে আনুষ্ঠানিকভাবে স্বীকৃতি দেয়নি সৌদি আরব। গত আগস্ট মাসে ইসরায়েলি প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু সম্ভাবনার কথা বলেছিলেন। তিনি দাবি করেছিলেন, আমরা ইতিহাসের বদলে যাওয়া প্রত্যক্ষ করতে যাচ্ছি। উপসাগরীয় পরাশক্তির সঙ্গে সম্পর্ক স্বাভাবিক হলে ইসরায়েল বাণিজ্য ও প্রতিরক্ষায় সুবিধা পাবে। এই অঞ্চলে যে ঐতিহাসিক একত্রীকরণ চেয়ে আসছিল দেশটি, তা অর্জিত হবে।

এর আগে কয়েকটি আরব দেশ তাদের সঙ্গে সম্পর্ক স্বাভাবিক করেছে।

গত সপ্তাহে জর্দানের আম্মানে মার্কিন অ্যাসিস্ট্যান্ট সেক্রেটারি অব স্টেট বারবারা লিফের বৈঠকে ফিলিস্তিনিদের দাবি চূড়ান্ত করা হয়েছে। যুক্তরাষ্ট্রের মধ্যস্থতায় আলোচনায় উপস্থাপিত দাবিগুলোর মধ্যে রয়েছে- ইসরায়েলি নিয়ন্ত্রণে থাকা পশ্চিমের একাংশ ফিলিস্তিনি কর্তৃপক্ষের হাতে তুলে দেওয়া, পশ্চিম তীরে ইসরায়েলি বসতি স্থাপন পুরোপুরি বন্ধ করা, ফিলিস্তিনি কর্তৃপক্ষকে সৌদি আরবের আর্থিক সহায়তা পুনরায় চালু করা, জেরুজালেমে ফিলিস্তিনের জন্য মার্কিন দূতাবাস পুনরায়  চালু করা, মার্কিন মধ্যস্থতায় ২০১৪ সালে বন্ধ হয়ে যাওয়া ইসরায়েল-ফিলিস্তিন শান্তি আলোচনা পুনরায় শুরু করা।

এসব দাবি সৌদি-ইসরায়েল সম্পর্ক স্বাভাবিকীকরণের বিষয়ে ফিলিস্তিনের সরকারি ও প্রকাশ্যে অবস্থান থেকে অনেক দূরবর্তী। আনুষ্ঠানিকভাবে তারা বলছে, একটি স্বাধীন রাষ্ট্র হিসেবে গড়ে ওঠার সুযোগ না থাকলে তারা এমন চুক্তি প্রত্যাখ্যান করবে।

রিয়াদে আলোচনায় অংশ নেওয়া ফিলিস্তিনি কর্মকর্তাদের মধ্যে প্রেসিডেন্ট মাহমুদ আব্বাসের ঘনিষ্ঠ দুজন রয়েছেন। তারা হলেন গোয়েন্দা প্রধান মাজেদ ফারাজ ও প্যালেস্টাইন লিবারেশন অর্গানাইজেশনের (পিএলও) সাধারণ সম্পাদক হুসেইন আল-শেখ। তারা বুধবার সৌদি আরবের জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা মুসায়েদ আল-আইবানের সঙ্গে বৈঠক করেছেন। 

মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন সৌদি-ইসরায়েল চুক্তিকে আগামী বছর নির্বাচনের আগে নিজের মেয়াদকালের পররাষ্ট্রনীতির বড় সাফল্য হিসেবে ভোটারদের সামনে তুলে ধরতে চান।

সূত্র : বিবিসি

LEAVE A REPLY