প্রতিটি বাজার মনিটরের নির্দেশ প্রধানমন্ত্রীর

ফাইল ছবি

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, বাজারে কোনো জিনিসের অভাব নেই। মাঝে মাঝে কৃত্রিম উপায়ে কিছু মূল্য বাড়ানো হয়, ইচ্ছা করে বাড়ানো হয়। অনেক সময় গোডাউনে রেখে দিয়ে মূল্য বাড়ানো হয়। কিন্তু পদক্ষেপ নিলেই সেটা আবার কমে আসে।

প্রতিটি বাজার মনিটরের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। গতকাল বৃহস্পতিবার জাতীয় সংসদের ২৪তম অধিবেশনের সমাপনী বক্তব্যে প্রধানমন্ত্রী এসব কথা বলেন। 

প্রয়োজনের তুলনায় অতিরিক্ত খাদ্য মজুদ আছে জানিয়ে সরকারপ্রধান বলেন, ‘আমি জানি এখন এমন একটা সময়—মুদ্রাস্ফীতি, যখন কিছু মানুষের অবশ্যই কিছু কষ্ট হচ্ছে, তবে জিনিসের কিন্তু অভাব নেই, এটাই আমি বলতে পারি। উৎপাদনে কিন্তু ঘাটতি নেই এবং উৎপাদনের যে জাগয়া দরকার, আমরা কিন্তু সব ব্যবস্থা নিচ্ছি।

’ 

তিনি বলেন, ‘এরই মধ্যে বাণিজ্যমন্ত্রীকে বলেছি প্রত্যেকটা বাজার মনিটর করতে, দেখতে।’

ডেপুটি স্পিকার শামসুল হক টুকুর সভাপতিত্বে অধিবেশনে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেন, ‘অস্বাভাবিক মূল্যবৃদ্ধি যাতে না হয় তার জন্য আমরা বিভিন্ন পদক্ষেপ এরই মধ্যে নিয়েছি। মূল্যস্ফীতি নিয়ন্ত্রণের জন্য আন্তর্জাতিকভাবে অন্যান্য দেশ যেভাবে পদক্ষেপ নিয়েছে, আমরাও সেখানে যথেষ্ট সজাগ, পদক্ষেপ নিয়েছি।’

প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘ডলার সংকটও স্বাভাবিক হবে।এটা শুরু হয়েছে ইউক্রেন যুদ্ধের পর। ডলার সংকটটা যাতে কমে সেই ব্যবস্থা আমরা নিয়েছি। নির্দেশ দিয়েছি আমদানির ক্ষেত্রে বা এলসি খোলার ক্ষেত্রে আন্তর্জাতিক বাজারমূল্য যাচাই, ব্লুমবার্গের যে মূল্য প্রদর্শন করা হয় সেই মূল্যর সঙ্গে সামঞ্জস্য থাকে, সেটা যাচাই করেই কিন্তু এলসি খোলার ব্যবস্থা নেওয়া হবে। আগে যেমন ইচ্ছামতো খোলা হতো, দামের কোনো কোনোটা অতিমূল্য, কোনোটা অবমূল্যায়ন করে করা হতো, সেটার আর সুযোগ এখন নেই।’ 

তিনি বলেন, ‘ভারতের সঙ্গে আমরা যে কেনাবেচা করব, নিজস্ব অর্থে এই লেনদেনটা করব, ডলারে না।

এতে আমাদের ডলারে চাপটা কমে যাবে।’

নির্বাচন নিয়ে নানামুখী ষড়যন্ত্র চলছে উল্লেখ করে সংসদ নেতা ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, ‘দীর্ঘ সংগ্রামের মধ্য দিয়ে মানুষের ভোট ও ভাতের অধিকার ফিরিয়ে দিতে পেরেছি। আজকে যখন সুষ্ঠুভাবে নির্বাচনগুলো করছি, তখনই আবার নির্বাচন নিয়ে প্রশ্ন তোলা হয়। এর অর্থটা কী?’

শেখ হাসিনা বলেন, ‘জনগণের ভোটের অধিকার, জনগণের ভাতের অধিকারের জন্য আন্দোলন করেছি আমরা। রাজপথে ছিলাম, মানুষের অধিকার প্রতিষ্ঠার জন্য রক্ত দিয়েছি। সেই রক্তে রঞ্জিত শহীদের তালিকা দেখলে আমাদের আওয়ামী লীগের এবং সহযোগী সংগঠনের নেতাকর্মীদের নামের তালিকাই পাওয়া যাবে। সংগ্রামের মধ্য দিয়ে মানুষের যে ভোটের অধিকার, ভাতের অধিকার ফিরিয়ে দিতে পেরেছি সেটাই সবচেয়ে বড় কথা।’

প্রধানমন্ত্রী বলেন, “কিছু দেশ আমাদের দেশের নির্বাচন আর অবাধ ও নিরপেক্ষ নির্বাচন নিয়ে কথা বলছে। সেসব দেশের কাছে আমার প্রশ্ন, ১৯৭৫ সালের পর বারবার যে নির্বাচনগুলো হয়েছিল, সেই ১৯৭৭ সালে ‘হ্যাঁ/না’ ভোট বা রাষ্ট্রপতি ভোট, ১৯৭৯ সালের সংসদ নির্বাচন, ১৯৮১ সালের নির্বাচন, ১৯৮৬ সালের নির্বাচন, ১৯৯৬ সালের ১৫ ফেব্রুয়ারির নির্বাচন অথবা ২০০১ সালের নির্বাচনে যে সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ড ও অত্যাচার-নির্যাতন, সে সময় তাদের চেতনা কোথায় ছিল? সে সময় তাদের বিবেক কি নাড়া দেয়নি?’

প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘আজকে যখন বাংলাদেশ অর্থনৈতিকভাবে এগিয়ে যাচ্ছে তখনই নির্বাচনটা নিয়ে প্রশ্ন উঠছে। এখন তো উত্তরবঙ্গে কোনো মঙ্গা নেই। গত ১৫ বছরের কাছাকাছি সময়ে এক দিনের জন্যও তো মঙ্গা হয়নি। মানুষের তো খাদ্যের অভাব হয়নি। আমরা তো দেশের মানুষের আর্থ-সামাজিক উন্নয়নে কাজ করে যাচ্ছি। তার শুভ ফলটা তো তৃণমূলের মানুষও পাচ্ছে। প্রতিটি ক্ষেত্রেই আমরা সাফল্য দেখাতে সক্ষম হয়েছি।’ তিনি আরো বলেন, ‘আমরা কথা দিয়েছিলাম শতভাগ বিদ্যুৎ দেব, ঘরে ঘরে আলো জ্বালব। আমরা তো জ্বালাতে পেরেছি। যদিও এর মাঝে ইউক্রেন-রাশিয়ার যুদ্ধ, স্যাংশনস, কাউন্টার স্যাংশনস, তার আগে গেল কভিডের অতিমারি। যেখানে সারা বিশ্ব হিমশিম খাচ্ছে, তার পরও এটুকু বলতে পারি—বাংলাদেশের অর্থনৈতিক অগ্রগতি হচ্ছে। আমরা তো পিছিয়ে নেই।’

LEAVE A REPLY