নতুন মায়ের প্রয়োজন সুষম খাবার

প্রতীকী ছবি

প্রসবকালে মায়ের শরীরের ওপর দিয়ে বাড়তি চাপ বয়ে যায়। সেটিকে পূরণ করার জন্য প্রসব-পরবর্তী সময়ে মাকে বেশি করে পুষ্টিকর খাবার খেতে দেওয়া উচিত। সন্তান জন্ম দেওয়ার পর মায়ের স্বাভাবিক অবস্থায় ফিরে আসতে বেশ কিছুটা সময় লাগে। মায়ের নানা ঘাটতি পূরণ করতে সচেষ্ট থাকতে হবে।

উৎকৃষ্ট বুকের দুধ উৎপাদনের জন্য মায়ের সুষম খাদ্যতালিকার কোনো বিকল্প নেই। বুকের দুধের গুণগত মান বজায় রাখার জন্য যেসব খাবার খেতে হবে— বুকের দুধে থায়ামিন, রিবোফ্লাভিন, ভিটামিন বি ৬, ভিটামিন বি ১২, ভিটামিন এ, আয়োডিন ও সেলেনিয়ামের মাত্রা কতটা থাকবে তা মায়ের খাবারে কতটা আছে, সেটি দ্বারা প্রভাবিত হয়। অর্থাৎ মায়ের দেহে এই উপাদানগুলোর ঘাটতি থাকলে বুকের দুধে এই উপাদানগুলোর ঘাটতি দেখা যায়।

থায়ামিন : দানাশস্য, গরুর মাংস, ফুলকপি, কলিজা, ডালজাতীয় খাবার, ডিম ও আলু।

রাইবোফ্লাভিন : ডিম, দুধ, মাংস, দানাশস্য ও বাদাম।

ভিটামিন বি ৬ : দুধ, ডিম, কলিজা, মাংস, শাক ও ছোলা।

ভিটামিন বি ১২ : দুধ ও দুধজাতীয় খাবার, কলিজা, ডিম ও মাংস।

ভিটামিন এ : মিষ্টিকুমড়া, গাজর, গাঢ় সবুজ শাক- সবজি ও কলিজা।

আয়োডিন : আয়োডিনযুক্ত লবণ, সামুদ্রিক মাছ।

সেলেনিয়াম : ডাল, বাদাম, কলা, মাশরুম, ডিম ইত্যাদি খাবার মাকে পর্যাপ্ত পরিমাণে খেতে হবে, যেন বুকের দুধে এগুলোর ঘাটতি তৈরি না হয়।

* দেহের চাহিদামতো শর্করা, প্রোটিন ও ফ্যাটজাতীয় খাবার গ্রহণ করতে হবে।      

* পর্যাপ্ত পানি পান করতে হবে এবং পানি বিদ্যমান এমন ফল ও শাক-সবজি খেতে হবে। বাচ্চাকে দুধ পান করানোর আগে পানি বা তরল যেকোনো পদার্থ দুগ্ধদানকারী মায়ের পান করা উত্তম।

এতে বেশি দুধ নির্গত হয়। 

* সকাল ১০টা থেকে বিকেল ৩টা পর্যন্ত সময়ের মধ্যে ২০ থেকে ৩০ মিনিট সময় সূর্যের আলোতে বসা উচিত, যা ভিটামিন-ডি তৈরিতে সাহায্য করবে।

* মায়ের খাবার তালিকায় ওমেগা-৩ ফ্যাটি এসিডসমৃদ্ধ খাবার যেমন : বাদাম, সামুদ্রিক মাছ ইত্যাদি রাখতে হবে, যা শিশুর মানসিক বিকাশ ও ব্রেন ডেভেলপমেন্টে সাহায্য করবে।                            

* শিশুর স্বাভাবিক বৃদ্ধি ও মানসিক বিকাশ ঠিক রাখতে মাকে আয়োডিনযুক্ত খাবার খেতে হবে।      

* স্তন্যদানকারী মায়ের অনেক সময় কোষ্ঠকাঠিন্য দেখা দিতে পারে, তা এড়াতে ফাইবারসমৃদ্ধ খাবার তালিকায় সংযুক্ত করতে হবে।

* রসুন, আদা, মেথি, মৌরি, কালিজিরা ইত্যাদি বুকের দুধ তৈরির ক্ষেত্রে ভালো ভূমিকা রাখে।

* অতিরিক্ত চিনি বা লবণযুক্ত খাবার এড়িয়ে চলতে হবে।

* ডুবো তেলে ভাজা বা বাইরের ফাস্টফুড এড়িয়ে চলতে হবে।

* পরিমিত পরিমাণে চা-কফি গ্রহণ করতে হবে।

পরামর্শ দিয়েছেন
পুষ্টিবিদ নাহিদা আহমেদ
ফরাজী ডায়াগনস্টিক ও হাসপাতাল, ঢাকা।

LEAVE A REPLY