‘নিহত কিশোরকে ছাত্রলীগ সাজানোর চেষ্টা চলছে’

আগামী ৫ অক্টোবর কুমিল্লা-চট্টগ্রাম রোডমার্চের আগে ভীতি সৃষ্টি করতে মিরসরাইয়ে শুক্রবার রাতে প্রস্তুতি সভায় আওয়ামী লীগ ও অঙ্গ সংগঠনের নেতাকর্মীরা পরিকল্পিতভাবে হামলা করেছে বলে দাবি করেছে বিএনপি। শনিবার চট্টগ্রাম প্রেস ক্লাবে সংবাদ সম্মেলনে এ দাবি জানানো হয়।

বিএনপি নেতারা এ সময় আরও দাবি করেন, ওই ঘটনায় মারা যাওয়া জাহিদ হোসেন রুমন (১৬) ছাত্রলীগের কর্মী নয়। সে কোনো দল করতো না, একটি দোকানে কাজ করে সংসার চালাতো। তার পরিবারের সদস্যরা বিএনপির সমর্থক। আওয়ামী লীগ কর্মীদের হামলায় তার মৃত্যু হয়েছে। তাকে ছাত্রলীগ কর্মী সাজিয়ে বিএনপি নেতাকর্মীদের বিরুদ্ধে মিথ্যা মামলাসহ নানা হয়রানির অপচেষ্টা চালানো হচ্ছে।

সংবাদ সম্মেলনে বক্তব্য রাখেন বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান ও কুমিল্লা-চট্টগ্রাম রোড মার্চের দলনেতা মোহাম্মদ শাহজাহান, বিএনপি চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা ও উত্তর জেলা আহ্বায়ক গোলাম আকবর খোন্দকার, বিভাগীয় সাংগঠনিক সম্পাদক মাহবুবের রহমান শামীম, কেন্দ্রীয় সহপ্রচার সম্পাদক বেলাল আহমেদ, কেন্দ্রীয় নির্বাহী সদস্য ব্যারিস্টার মীর মোহাম্মদ হেলাল উদ্দিন, উত্তর জেলা যুগ্ম আহ্বায়ক নুরুল আমিন চেয়ারম্যান।

মোহাম্মদ শাহজাহান বলেন, রুমনকে ছাত্রলীগ কর্মী বলে দাবি করা হয়েছে। কিন্তু আমরা পারিবারিক সূত্রে যতটুকু জানতে পেরেছি, সে ছাত্রলীগ করতো না। ক্লাস সেভেন পর্যন্ত পড়ালেখা করেছে। ক্লাস সেভেন পাস কেউ যদি ছাত্রলীগ হয়, তাহলে ভবিষ্যতে তারা প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদেরও ছাত্রলীগ বলে আখ্যায়িত করবে। মিরসরাইয়ে বিএনপি নেতা নুরুল আমিন চেয়ারম্যানের বাড়িতে রোডমার্চের প্রস্তুতি সভার শুরুতে তারা বাধা দিয়েছে, হামলা করেছে। শেষেও হামলা করেছে। নুরুল আমিন চেয়ারম্যানসহ দুই নেতার বাড়িতে হামলা ও অগ্নিসংযোগ করা হয়েছে।

তিনি বলেন, আমরা এরইমধ্যে ঘোষণা দিয়েছি সভা-সমাবেশের জন্য পুলিশ থেকে আর অনুমতি নেব না। অবৈধভাবে সভা-সমাবেশ করব। ৫ অক্টোবরের যে সমাবেশ হবে সেটারও অনুমতি নেব না। পুলিশের কাছে অনুমতি চাইব, তারা অনুমতি দিলে সভা-সমাবেশ করব, না দিলে করব না- এখন আর সেই দিন নেই। আমরা অনেক সহ্য করেছি।আমরা পুলিশকে অবহিত করব। তারা বুঝবে কি করবে। তাদের দায়িত্ব যদি তারা পালন করে- ঠিক আছে। আর যদি না করে সরকারের পক্ষ অবলম্বন করে তাহলে সেটার জবাব দিতে হবে।

তিনি আরও জানান, ৫ অক্টোবরের রোডমার্চের আগে ভীতি ছড়াতে মিরসাইয়ে বিএনপির রোডমার্চের প্রস্তুতি সভায় হামলা করা হয়েছে। এসব করে কোনো লাভ হবে না। রোডমার্চ বন্ধ হবে না।

গোলাম আকবর খোন্দকার বলেন, মিরসরাইয়ে দীর্ঘদিন ধরে বিএনপি নেতাকর্মীদের ওপর হামলা চালাচ্ছে আওয়ামী লীগ। শুক্রবারের হামলায় এক দোকান কর্মচারী মারা গেছে। এ হামলায় বিএনপির অন্তত ১০ নেতাকর্মী আহত হয়েছেন। ঘর-বাড়িতে হামলা ও অগ্নিসংযোগ করা হয়েছে।

নুরুল আমিন চেয়ারম্যান বলেন, আমার বাড়িতে রোডমার্চের প্রস্তুতি সভার শেষ পর্যায়ে স্থানীয় অওয়ামী লীগ ও অঙ্গ-সংগঠনের লোকজন অতর্কিত হামলা চালায়। আমাদের নেতাকর্মীরা আত্মরক্ষার চেষ্টা করেছে। এর মধ্যেই তাদের (আওয়ামী লীগের) হামলায় এক দোকান কর্মচারী মারা গেছে। আমাদের ওপর যখন হামলা হচ্ছিল তখন ছেলেটি ভিডিও ধারণ করছিল। এটা দেখতে পেয়ে আওয়ামী লীগের ছেলেরা তার ওপর হামলা করে। সে লাফ দিয়ে পুকুরে পড়ে যায়। এরপর আমরা শুনেছি সে মারা গেছে। তার পরিবার বিএনপিকে সমর্থন করে। কিন্তু তাকে এখন ছাত্রলীগ সাজিয়ে আমাদের হয়রানি করার চেষ্টা করা হচ্ছে।

LEAVE A REPLY