গণমাধ্যমে মার্কিন ভিসানীতি : ১৯০ বিশিষ্ট নাগরিকের নিন্দা

যুক্তরাষ্ট্রের রাষ্ট্রদূত পিটার হাস। ফাইল ছবি

গণমাধ্যমের ওপর ভিসানীতি প্রয়োগ নিয়ে ঢাকায় যুক্তরাষ্ট্রের রাষ্ট্রদূত পিটার হাসের বক্তব্যে হতাশা ও উদ্বেগ প্রকাশ করে নিন্দা জানিয়েছেন দেশের ১৯০ জন বিশিষ্ট নাগরিক। শনিবার (৩০ সেপ্টেম্বর) এক বিবৃতিতে তারা ওই নিন্দা জানান। বিবৃতিতে যুক্তরাষ্ট্রের রাষ্ট্রদূতের বক্তব্যে সম্পাদক পরিষদের উদ্বেগ জানিয়ে লেখা চিঠির বিষয়টিও উল্লেখ করা হয়।

বিবৃতিতে লেখক, অধিকারকর্মী, সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের নেতা, বীর মুক্তিযোদ্ধা, শহীদ বুদ্ধিজীবী পরিবারের সদস্য, যুদ্ধাপরাধবিরোধী প্রচারক, সাংবাদিক, সাংস্কৃতিককর্মীসহ মোট ১৯০ জন বিশিষ্ট নাগরিক সই করেছেন।

তাদের মধ্যে রয়েছেন সাংবাদিক শাহরিয়ার কবির, নাট্যজন রামেন্দু মজুমদার, অধ্যাপক মুনতাসীর মামুন, শহীদ জায়া শিক্ষাবিদ শ্যামলী নাসরিন চৌধুরী, কথাশিল্পী অধ্যাপক মুহম্মদ জাফর ইকবাল, শহীদ জায়া সালমা হক, বীর মুক্তিযোদ্ধা বিচারপতি শামসুদ্দিন চৌধুরী মানিক, আইনজীবী ও বাংলাদেশ হিন্দু বৌদ্ধ খ্রিস্টান ঐক্য পরিষদের সাধারণ সম্পাদক রানা দাশগুপ্ত, চলচ্চিত্র নির্মাতা নাসির উদ্দীন ইউসুফ, ক্যাপ্টেন (অব.) আলমগীর সাত্তার বীরপ্রতীক, চিকিৎসক আমজাদ হোসেন, বীর মুক্তিযোদ্ধা চিকিৎসক নূরন নবী, অধ্যাপক শিল্পী আবুল বারক আলভী, অধ্যাপক মেজবাহ কামাল, চিকিৎসক শেখ বাহারুল আলম, চিকিৎসক ইকবাল কবীর, বীর মুক্তিযোদ্ধা সমাজকর্মী সুব্রত চক্রবর্ত্তী, বীর মুক্তিযোদ্ধা ভূতত্ত্ববিদ মকবুল-ই এলাহী চৌধুরী, অধ্যাপক আবদুল গাফ্ফার, কবি জয়দুল হোসেন, সমাজকর্মী কাজী লুৎফর রহমান, সমাজকর্মী কামরুননেসা মান্নান, আইনজীবী আজাহার উল্লাহ ভূঁইয়া, নির্মল রোজারিও, সভাপতি বাংলাদেশ খ্রিস্টান অ্যাসোসিয়েশন, ভিক্ষু সুনন্দপ্রিয়, সাধারণ সম্পাদক বুড্ডিস্ট ফেডারেশন। স্থান সীমাবদ্ধতা বিবেচনা করে কিছু নাম উল্লেখ করা হয়েছে।

বিবৃতিতে বলা হয়, গণমাধ্যমে ভিসানীতি প্রয়োগের ঘোষণা যুক্তরাষ্ট্রের ঘোষিত গণমাধ্যমের স্বাধীনতা নীতির পরিপন্থী। বাংলাদেশে সচেতনতা সৃষ্টিতে গণমাধ্যম একটি বড় ভূমিকা রেখেছে।

উগ্রবাদী শক্তি, জঙ্গি, জামায়াতে ইসলামীর মতো যুদ্ধাপরাধীর দল, সন্ত্রাসী, যা প্রগতিশীল ও ধর্মনিরপেক্ষ শক্তিগুলোকে নির্মূল করতে চায়, তাদের বিরুদ্ধে সচেতনতা তৈরিতে সোচ্চার ভূমিকা রেখেছে বাংলাদেশের গণমাধ্যম। এর ফলে বাংলাদেশ তালেবানের মতো একটি রাষ্ট্রে পরিণত হয়নি।

বিবৃতিতে আরো বলা হয়, গণমাধ্যমের ওপর ভিসানীতি নিয়ে হাসের বক্তব্যটি কট্টরপন্থী ও স্বাধীনতাবিরোধীরা স্বাগত জানিয়েছে। এই স্বাগত জানানো পক্ষটি অন্যান্য নীতিতে পশ্চিমাদের নিন্দা করে, মুক্তচিন্তকদের শত্রু মনে করে এবং ১৯৭১ সালে যুদ্ধাপরাধীদের দায়মুক্তির পক্ষে।

রাষ্ট্রদূত হাসের বক্তব্যকে জামায়াতে ইসলামীর মুখপাত্র হিসেবে পরিচিত ‘বাঁশের কেল্লা’ নামের ফেসবুক পেজ থেকে স্বাগত জানিয়ে পোস্ট করা হয়েছে। যেখানে হাসকে ‘একজন সত্যিকারের বন্ধু’ বলে উল্লেখ করা হয়েছে। অতীতে এই পেজে ব্লগার ও মুক্তচিন্তকদের হত্যার পক্ষে নানা বক্তব্য প্রচার করা হয়েছে। ফলে এই পেজে হাসের বিবৃতি নিয়ে উল্লাস আসলে ধর্মনিরপেক্ষ নাগরিকদের জন্য নিগূঢ় বার্তা দেয়।

LEAVE A REPLY