ফুসফুসে যক্ষ্মা : ঝুঁকিতে যারা, প্রতিরোধের উপায়

যক্ষ্মা হচ্ছে একটি বায়ুবাহিত ব্যাকটেরিয়াজনিত সংক্রামক ব্যাধি, যেটা মাইকোব্যাকটেরিয়াম টিউবারকুলোসিস জীবাণুর সংক্রমণে হয়ে থাকে। এই রোগ শরীরের যেকোনো অংশে হতে পারে। তবে ৮০ শতাংশ যক্ষ্মাই ফুসফুসে হয়ে থাকে এবং এটি সবচেয়ে গুরুতর ও ভীষণ ছোঁয়াচে। পরিবেশদূষণে ফুসফুসে যক্ষ্মা সংক্রমণের হার সবচেয়ে বেশি।

দারিদ্র্য ও অপুষ্টি, যক্ষ্মার হার বাড়ার অন্যতম কারণ।

যেভাবে ছড়ায়

ফুসফুসের যক্ষ্মা আক্রান্ত ব্যক্তির থেকে সুস্থ মানুষের শ্বাস-প্রশ্বাসের মাধ্যমে শরীরের বিভিন্ন অংশে ছড়িয়ে যেতে পারে। হাঁচি-কাশির মাধ্যমে এমনকি কথা বলা থেকেও যক্ষ্মার জীবাণু খুব দ্রুত একজনের কাছ থেকে আরেকজনের ভেতর ছড়াতে পারে।

আক্রান্ত হওয়ার ঝুঁকিতে যারা

* যাদের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা দুর্বল।

* ডায়াবেটিসে আক্রান্ত রোগীদের যক্ষ্মার জীবাণুতে সংক্রমণের ঝুঁকি অনেক বেশি থাকে।

ফুসফুসের যক্ষ্মা রোগের লক্ষণগুলো

* রোগীর ওজন কমতে থাকে, আস্তে আস্তে শরীর দুর্বল হতে থাকে।

* সাধারণত তিন সপ্তাহের বেশি সময় কাশি থাকে।

* খুসখুসে কাশি হয় এবং কখনো কখনো কাশির সঙ্গে রক্ত যায়।

* রাতে ঘাম হয়, বিকেলের দিকে জ্বর আসে, দেহের তাপমাত্রা খুব বেশি বাড়ে না।

পরীক্ষা-নিরীক্ষা

* যক্ষ্মা রোগ নির্ণয়ের জন্য সাধারণত-

* এমটি টেস্ট

* স্পুটাম টেস্ট

* স্মিয়ার টেস্ট

* এক্স-রে

* সিটি স্ক্যান

* কালচার টেস্ট

* এফএনএসি

* বর্তমান যুগের সবচেয়ে আধুনিক জিন এক্সপার্ট পরীক্ষা করা হয়ে থাকে।

রোগের ধরন বুঝে নমুনা হিসেবে—

* রোগীর কফ

* লালা

* হাড়

প্রতিরোধের উপায়

* হাঁচি-কাশির সময় মুখে রুমাল দেওয়া না হলে অন্তত হাত দিয়ে মুখ ঢেকে বা সবার থেকে দূরে গিয়ে কাশি দেওয়া।
* যেখানে-সেখানে থুথু-কফ না ফেলে নির্দিষ্ট স্থানে ফেলে ভালোভাবে জায়গাটি পরিষ্কার করা বা মাটিচাপা দেওয়া।

চিকিৎসা
* যক্ষ্মার চিকিৎসা শুরুর এক মাসের মধ্যে এই জীবাণু ছড়ানোর প্রকোপ কমে যায়।

* সঠিক সময়ে চিকিৎসা নিলে যক্ষ্মা সেরে যায়।

পরামর্শ দিয়েছেন
ডা. মো. সাইদুল হক
সহকারী অধ্যাপক
বারডেম বিইউএইচএস ইউনিভার্সিটি, ঢাকা

LEAVE A REPLY