হামাসের সব সদস্যকে মরতে হবে, হুমকি নেতানিয়াহুর

ছবি: সংগৃহীত

ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু বলেছেন, হামাসের প্রত্যেক সদস্যই এখন একজন মৃত মানুষ। তিনি বলেছেন, হামাসের সব সদস্যকে মরতে হবে। বুধবার প্রধান রাজনৈতিক প্রতিদ্বন্দ্বী সেনাবাহিনীর সাবেক প্রধান বেনি গ্যান্টজের সঙ্গে যুদ্ধকালীন জরুরি সরকার গঠনের পর তিনি এ হুমকি দেন। 

ফিলিস্তিনের স্বাধীনতাকামী গোষ্ঠী হামাস ও ইসরায়েলের মধ্যকার যুদ্ধ ষষ্ঠ দিনে গড়িয়েছে।

গাজায় মৃতের সংখ্যা বেড়ে এক হাজার ২০০-এ দাঁড়িয়েছে। ফিলিস্তিনের স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় বলছে, শনিবার হামাস যোদ্ধাদের বিধ্বংসী হামলার প্রতিশোধ হিসেবে ইসরায়েল ওই এলাকায় বিমান হামলা শুরু করে। এর পর থেকে এক হাজার ২০০ জন ফিলিস্তিনি মারা গেছে। ইসরায়েল ও ফিলিস্তিন উভয় পক্ষের মোট মৃতের সংখ্যা দুই হাজার ৫০০-এ দাঁড়িয়েছে।

স্থানীয় সময় বুধবার গাজায় অভিযান চালাতে প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু তার প্রধান রাজনৈতিক প্রতিদ্বন্দ্বী সেনাবাহিনীর সাবেক প্রধান বেনি গ্যান্টজের সঙ্গে যুদ্ধকালীন জরুরি সরকার গঠন করেছেন। গাজা উপত্যকা থেকে হামাসের হামলার পরিপ্রেক্ষিতে নতুন মন্ত্রিসভার ঘোষণা এসেছে। দুই নেতা একমত হয়েছেন, নতুন সরকার শুধু সংঘাতসংক্রান্ত সরকারি সিদ্ধান্ত নেবে। 

ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু বলেছেন, ‘প্রত্যেক হামাস সদস্যই মৃত ব্যক্তি।

হামাসের সব সদস্যকে হত্যা করা হবে।’ বেনি গ্যান্টজও ইসরায়েলি নাগরিকদের বলেছেন, ইসরায়েলের নবগঠিত সরকার একত্রিত এবং হামাস নামক এই গোষ্ঠীকে পৃথিবীর বুক থেকে মুছে ফেলতে তারা প্রস্তুত। এদিকে মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন বলেছেন, তিনি নেতানিয়াহুর সঙ্গে কথা বলেছেন এবং স্পষ্ট করে বলেছেন, ইসরায়েলকে অবশ্যই যুদ্ধের নিয়ম মেনে কাজ করতে হবে। বাইডেন আরো বলেছেন, তিনি ইসরায়েলি জনগণের ক্ষোভ এবং হতাশা বুঝতে পেরেছেন। তবে ইসরায়েলকে জেনেভা কনভেনশনের নীতিগুলো মেনে চলার আহ্বান জানিয়েছেন।

এর সঙ্গে ইরানকেও সতর্ক করেছেন বাইডেন।

এর আগে ইসরায়েলের প্রতিরক্ষা বাহিনী বলেছিল, হামাসের বন্দুকধারীরা এক হাজার ২০০ ইসরায়েলিকে হত্যা করেছে এবং মৃতের সংখ্যা আরো বাড়তে পারে বলে ধারণা করা হচ্ছে। ফিলিস্তিনের অবরুদ্ধ গাজা ভূখণ্ডের বিভিন্ন স্থানে সিরিজ বিমান হামলা চালাচ্ছে ইসরায়েল। এতে এক ঘণ্টায় কমপক্ষে ৫১ জন ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছে। আহতের সংখ্যা দাঁড়িয়েছে পাঁচ হাজার ৬০০ জনে। হতাহতের সংখ্যা বাড়ার কারণে গাজাজুড়ে হাসপাতালগুলো সমস্যায় পড়েছে। জনপদটির বহু এলাকা পরিণত হয়েছে ধ্বংসস্তূপে। ইসরায়েলের প্রায় বিরতিহীন বিমান ও গোলার হামলা থেকে বাঁচতে অনেক ফিলিস্তিনি গাজার বিভিন্ন হাসপাতালে আশ্রয় নিয়েছে। 

এদিকে ইসরায়েলি প্রতিরক্ষামন্ত্রী ইয়োআভ গালান্ত সেনাদের স্থল অভিযানের প্রস্তুতির কথা জানিয়ে হামাসকে গুঁড়িয়ে দেওয়ার হুমকি দিয়েছেন। ইসরায়েলি প্রতিরক্ষামন্ত্রী ইয়োআভ গালান্ত বলেছেন, তিনি সেনাদের ওপর থেকে সব বিধি-নিষেধ তুলে নিয়েছেন। তিনি বলেন, গাজা কখনোই আর আগের অবস্থায় ফিরে আসবে না। ইসরায়েলি অবরোধের কারণে জ্বালানির অভাবে গাজার একমাত্র বিদ্যুৎকেন্দ্রটি স্থানীয় সময় গতকাল বুধবার বিকেলে বন্ধ হয়ে গেছে। এতে কার্যত বিদ্যুৎহীন হয়ে পড়েছে পুরো অঞ্চল। গত শনিবার (৭ অক্টোবর) ইসরায়েলের ভূখণ্ডে রকেট হামলা চালায় হামাস। মাত্র ২০ মিনিটে পাঁচ হাজারের মতো রকেট ছোড়ে তারা। ইসরায়েলের সুরক্ষাবলয় ভেদ করে তারা অনুপ্রবেশ ঘটায়। তার পর থেকে সংঘর্ষ অব্যাহত রয়েছে। 

সূত্র : বিবিসি

LEAVE A REPLY