গাজা এখন বিশ্বের ‘সবচেয়ে বড় কারাগার’

মানবাধিকার সংস্থা ও ফিলিস্তিনিরা গাজাকে এখন বিশ্বের সবচেয়ে বড় উন্মুক্ত কারাগার হিসাবে আখ্যা দিয়েছে। জাতিসংঘ ও মানবাধিকার সংস্থার আহবান সত্ত্বেও ২০০৭ সাল থেকে অঞ্চলটি অবরোধ করে রেখেছে ইসরাইল।

এই অবরোধ ফিলিস্তিনি বেসামরিক নাগরিকদের ওপর এক ভয়াবহ প্রভাব ফেলেছে। স্বাভাবিক চলাচলের ক্ষেত্রেও কঠোর নিষেধাজ্ঞার সম্মুখীন গাজাবাসী। এমনকি এই অঞ্চলে ঢোকা ও বের হওয়ার ওপরও আছে নিষেধাজ্ঞা। বিবিসি।

জীবন সংকট অথবা জরুরি চিকিৎসার প্রয়োজন ছাড়া খুব কম ক্ষেত্রে তাদের চলাচলের অনুমতি দেওয়া হয়। চলাচলের যারা সুযোগ পান তাদের মধ্যে রয়েছে হাতেগোনা কয়েকজন ব্যবসায়ী।

আর এসব কারণেই মানবাধিকার সংস্থা হিউম্যান রাইটস ওয়াচ গাজার অবস্থাকে ‘একটি উন্মুক্ত কারাগার’-এর সঙ্গে তুলনা করেছে।

ইসরাইলের পাশাপাশি মিসরও এই অঞ্চলের ওপর নিয়ন্ত্রণ আরোপ করে রেখেছে।

রেড ক্রসের আন্তর্জাতিক কমিটি এই অবরোধকে বেআইনি ও জেনেভা কনভেনশনের লঙ্ঘন বলে মনে করে। অবরোধের ফলে গাজার অর্থনীতিও পতনের দ্বারপ্রান্তে। এই অঞ্চলের আমদানি ও প্রায় সব রপ্তানিও সীমিত।

বিশ্বব্যাংকের মতে, অঞ্চলটিতে বেকারত্বের হার ৪০ শতাংশ ছাড়িয়ে গেছে। গাজায় ৬৫ শতাংশের বেশি মানুষ দারিদ্র্যসীমার নিচে বাস করে বলে জানিয়েছে জাতিসংঘ। বিশ্ব খাদ্য কর্মসূচি তথ্যানুযায়ী, এই অঞ্চলের মোট জনসংখ্যার ৬৩ শতাংশের খাদ্য ‘অনিরাপদ’।

গাজায় বসবাসকারী অর্ধেক ফিলিস্তিনির বয়স ১৯ বছরের কম। জাতিসংঘের একটি প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, এই অঞ্চলের একটি প্রজš§ ক্রমাগত সহিংসতার মধ্যে থেকে বেড়ে উঠছে ব্যাপক মানসিক স্বাস্থ্য সমস্যা নিয়ে।

গাজা বিশ্বের সবচেয়ে ঘনবসতিপূর্ণ অঞ্চলগুলোর মধ্যে একটি। এই অঞ্চলের তেইশ লাখ বাসিন্দা আনুমানিক ৩৬০ বর্গকিলোমিটারজুড়ে বসবাস করে। গাজায় জনসংখ্যার ঘনত্ব প্রতি বর্গকিলোমিটারে নয় হাজারের বেশি।

বিদ্যুৎ বিভ্রাট গাজার একটি নিত্যদিনের ঘটনা। এই অঞ্চলের বেশির ভাগ বাড়িতে দিনে মাত্র তিন ঘণ্টা বিদ্যুৎ থাকে বলে জানিয়েছে জাতিসংঘের মানবিক সংগঠন ওসিএইচএ। আর তাদের বেশির ভাগ বিদ্যুৎই আসে ইসরাইল থেকে। গাজার বাসিন্দারা পানি ঘাটতিতেও ভোগে। গাজায় সীমান্ত বরাবর ইসরাইলের একটি প্রতিরক্ষা অঞ্চল থাকায় এর একটি বড় অংশজুড়ে কোনো আবাসন নির্মাণ অথবা  চাষাবাদের কাজ করা যায় না। 

LEAVE A REPLY