হারার পর ভালো উইকেটে খেলতে না পারার হাহাকার নাজমুলের

অনুমান করা যাচ্ছিলো যে ম্যাচের পর ভারতীয় সাংবাদিকরা নাসুম আহমেদের ওয়াইড বল নিয়েই পড়বেন। তাঁরা পড়লেনও। ৯৭ রানে থাকা বিরাট কোহলি যখন ছক্কায় সেঞ্চুরিতে পৌঁছাতে মরিয়া, তখন বাংলাদেশের বাঁহাতি স্পিনারের লেগস্টাম্পের বাইরে বল দেওয়া ইচ্ছাকৃত কিনা, তা নিয়ে আলোচনাও শুরু হয়ে গিয়েছিল ডেলিভারিটার পর থেকেই।

ম্যাচের পর সংবাদ সম্মেলনে আসা নাজমুল হোসেন শান্ত’র তাই এই নিয়ে প্রশ্নের মুখে পড়া অবধারিতই ছিল।

সাকিব আল হাসানের চোটে এই ম্যাচে বাংলাদেশকে নেতৃত্ব দেওয়া বাঁহাতি ব্যাটার অবশ্য আলোচনাটি সেখানেই থামিয়ে দিলেন, ‘না, না, একদমই ইচ্ছাকৃত নয়। আমরা সবসময়ই উপযুক্ত ক্রিকেট খেলার চেষ্টা করি।’

যদিও আরো বিস্ময়কর ঘটনা ছিল আম্পায়ার রিচার্ড কেটেলবরোর সেটিকে ওয়াইডই ঘোষণা না করা! ওয়াইড দেওয়া না দেওয়াতে অবশ্য বাংলাদেশের নিয়তি বদলানোর কোনো সুযোগই ছিল না। বরং বাংলাদেশকে নিয়ে ছেলেখেলা করে পাওয়া ভারতের জয়ের দিনে আরেকবার নিজেদের ব্যাটিংয়ের কঙ্কাল বেরিয়ে যেতে দেখেছেন নাজমুলরা।

ম্যাচের পর ম্যাচ যাচ্ছে কিন্তু জেতার মতো উপযুক্ত পারফরম্যান্সের খবর নেই। ব্যাটিংয়ের এই অন্ধকার পেরিয়ে আলোর মুখ দেখার উপায়টি তাহলে কী? নাজমুলের জবাব দেশের ক্রিকেট কাঠামোর গলদও উন্মুক্ত করে দিচ্ছে আরেকবার, ‘প্রথমত আমাদের ভালো উইকেটে ম্যাচ খেলা এবং অনুশীলন করা উচিত। এরকম (পুনের মহারাষ্ট্র ক্রিকেট অ্যাসোসিয়েশন স্টেডিয়ামের) স্পোর্টিং উইকেটে আমরা সচরাচর খেলার সুযোগ পাই না।’

বহুজাতিক আসরে খেলতে গিয়ে ব্যাটিংয়ে ভেঙে পড়ার ঘটনা আগেও আছে বাংলাদেশের।

স্পোর্টিং উইকেটে খেলার সুযোগ পাওয়ার আকুতিও নতুন নয়। কিন্তু এই বিশ্বকাপে এসেও সেই আকুতি অপরিবর্তিত রয়ে গেছে। অবশ্য ব্যাটারদের নিজেদের মেলে ধরতে না পারার পেছনে মানসিক সমস্যাও দেখলেন সাকিবের ডেপুটি, ‘আমার মনে হয়, স্কিলের চেয়ে আমাদের মানসিকতা ও দায়িত্ব নেওয়ার জায়গাটিই বড়। এরকম উঁচু দরের (ভারতের মতো) বোলিং আক্রমণ সামলানোর দক্ষতা আমাদের আছে। আরো দায়িত্ব নিয়ে খেললে ভুলগুলো আমরা কমিয়ে আনতে পারি।

’ রোহিত শর্মা আর শুভমান গিলের পর কোহলিও বাংলাদেশের বোলারদের তুলোধুনো করেছেন।

তবে ব্যাটিং দূর্বলতার কারণে বোলারদের কোনো দোষের জায়গাও দেখেন না নাজমুল, ‘আমি এখানে বোলারদের কোনো দোষ দেখি না। ওরা যথেষ্ট ভালো বোলিংই করছে। এখনও উন্নতির অনেক জায়গা আছে যদিও। কিন্তু ব্যাটাররা আরেকটু রান করে দিতে পারলে ওদের কাজটি সহজ হয়ে যেত।’ ভারতের বিপক্ষেও যে সহজ করে দেওয়া গেল না, তাতেও দুই ওপেনারের দায় দেখলেন নাজমুল।

তানজিদ হাসান তামিম এবং লিটন কুমার দাস ফিফটি করলেও বড় ইনিংস খেলতে পারেননি যে, ‘সত্যি বলতে যে জায়গায় আমাদের সমস্যা হচ্ছিল, সেই টপ অর্ডার আজ ভালো করেছে। তবে যে দু’জন ব্যাটার থিতু হয়ে গিয়েছিল, তাদের লম্বা ইনিংস খেলার দরকার ছিল। কারণ উইকেটটি এমন ছিল যে ওখান থেকে একজন ব্যাটার ১২০-১৩০ রান করে দিলে শেষে ব্যাটারদের কাজ সহজ হতো।’

তা না হওয়ায় বাংলাদেশের আরেকটি একতরফা হার। টানা তিন ম্যাচে এরকম হওয়ার পরও আশা দেখাতে চাইলেন ওপেনার তানজিদ হাসান তামিম, ‘এখনও কিন্তু আমাদের খেলা শেষ হয়নি। সামনে আরো পাঁচটি ম্যাচ আছে। আশা করি ভালো কিছুই হবে।’ প্রত্যেক ম্যাচের পর এরকম বলা হলেও ভালো কিছু হচ্ছে না অবশ্য!

LEAVE A REPLY