নয়াপল্টন-কাকরাইল রণক্ষেত্র

বিএনপির মহাসমাবেশকে কেন্দ্র করে শনিবার রাজধানীতে ব্যাপক সংঘাত ও সহিংসতা হয়েছে। পুলিশ ও বিএনপির নেতাকর্মীদের মধ্যে দফায় দফায় পালটাপালটি ধাওয়া ও সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে; যা নয়াপল্টন, পল্টন, বিজয়নগর, ফকিরাপুল, রাজারবাগ, শান্তিনগর, কাকরাইলসহ বিভিন্ন এলাকায় ছড়িয়ে পড়ে। দুপুর সাড়ে ১২টার পর থেকে শুরু হয়ে থেমে থেমে তা চলে সন্ধ্যা ৬টা পর্যন্ত। মুহুর্মুহু টিয়ার গ্যাস, রাবার বুলেট ও সাউন্ড গ্রেনেড নিক্ষেপ এবং লাঠিচার্জে এসব এলাকা যেন রণক্ষেত্রে পরিণত হয়। 

এ সময় এক পুলিশ কনস্টেবলসহ দুজন নিহত হয়েছেন। নিহত আরেকজন মুগদা থানা যুবদলের ৭নং ওয়ার্ডের এক নম্বর ইউনিটের সভাপতি বলে বিএনপির পক্ষ থেকে দাবি করা হয়। তার নাম শামীম মোল্লা। এছাড়া অন্তত ১৫ সাংবাদিক, ১০০ পুলিশ ও ২৫ আনসার সদস্য এবং বিএনপি নেতাকর্মীসহ তিন শতাধিক আহত হয়েছেন। 

যদিও বিএনপি বলেছে, দলটির সহস্রাধিক নেতাকর্মী আহত হয়েছেন। বিক্ষুব্ধ নেতাকর্মীরা প্রধান বিচারপতির বাসভবনসহ কয়েকটি পুলিশ বক্সে হামলা চালিয়েছেন। এছাড়া পুলিশ হাসপাতাল প্রাঙ্গণে থাকা অ্যাম্বুলেন্সসহ সাতটি যানবাহন, ফায়ার সার্ভিসের গাড়ি, বিআরটিসির বাসসহ বিভিন্ন জায়গায় অগ্নিসংযোগ করা হয়। এমন পরিস্থিতিতে কয়েক ঘণ্টা চলার পর শেষ পর্যন্ত পণ্ড হয়ে যায় বিএনপির মহাসমাবেশ।

আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি অবনতির সঙ্গে যারা জড়িত, তাদের বিরুদ্ধে যথাযথ আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে বলে জানিয়েছেন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল। অন্যদিকে বিএনপির অভিযোগ, বিনা কারণে শান্তিপূর্ণ কর্মসূচিতে আসা দলীয় নেতাকর্মীদের ওপর আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী ও আওয়ামী লীগের নেতাকর্মী মিলে হামলা করে। এর প্রতিবাদে আজ সারা দেশে সকাল-সন্ধ্যা হরতালের ঘোষণা করে দলটি। একই কর্মসূচি (হরতাল) পালন করবে গণতন্ত্রমঞ্চ, জামায়াতসহ বিভিন্ন দল ও জোট।

বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর রাতে এক বিবৃতিতে জানান, শান্তিপূর্ণ মহাসমাবেশে পুলিশ ও আওয়ামী লীগের সন্ত্রাসীদের পরিকল্পিত তাণ্ডব ও সশস্ত্র হামলা নজিরবিহীন ও ন্যক্কারজনক। এ ঘটনায় একজন নিহতসহ সহস্রাধিক নেতাকর্মী আহত হয়েছেন। এমনকি পুলিশের টিয়ার গ্যাস ও গুলিতে মঞ্চে থাকা সিনিয়র নেতারাও আহত হন। গ্রেফতার করা হয় তিন শতাধিক নেতাকর্মীকে।

ঘটনার সূত্রপাতের বিষয়ে প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, পূর্বঘোষিত নয়াপল্টনের মহাসমাবেশে অংশ নিতে এদিন ভোর থেকে নয়াপল্টনে আসতে শুরু করেন বিএনপি ও অঙ্গ-সহযোগী সংগঠনের নেতাকর্মীরা। সকাল ১০টার আগেই একদিকে আরামবাগ, অন্যদিকে মৎস্য ভবন, পল্টন মোড়, শান্তিনগর মোড় পর্যন্ত সারা দেশ থেকে আসা নেতাকর্মীদের পদচারণায় পূর্ণ হয়ে যায়। বেলা ১১টার দিকে মগবাজারের দিক থেকে আসা আওয়ামী লীগ ও তাদের সহযোগী সংগঠনের দুটি মিছিল কাকরাইল পার হওয়ার সময় মূলত সংঘর্ষের সূত্রপাত হয়। 

আওয়ামী লীগ ও সহযোগী সংগঠনের নেতাকর্মীরা কাকরাইল পার হওয়ার সময় ‘জয় বাংলা’ স্লোগান দিয়ে বায়তুল মোকাররম মসজিদের দক্ষিণ গেটের সামনে সমাবেশের উদ্দেশে যাচ্ছিলেন। এ সময় ভোর থেকে কাকরাইলে অবস্থানরত বিএনপি ও অঙ্গ-সহযোগী সংগঠনের নেতাকর্মীরা উত্তেজিত হন। শুরু হয় দুই পক্ষের মধ্যে পালটাপালটি ধাওয়া। এরপর বেলা সোয়া ১২টার দিকে কাকরাইল মসজিদের সামনে আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীদের বহনকারী একটি বাস ও দুটি পিকআপ দেখে হামলা চালোনো হয়। 

হামলা শুরু হলে বাস ও পিকআপ থেকে নেমে দৌড়ে স্থান ত্যাগ করেন আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীরা। ওই সময় তাদের লাঠি হাতে ধাওয়া দেন বিএনপির কর্মীরা। সেখানে উত্তেজনাকর পরিস্থিতির সৃষ্টি হয়। উপস্থিত পুলিশ সদস্যরা বিএনপির কর্মীদের সরিয়ে দেওয়ার চেষ্টা করেন। এরপরই পুলিশ ও বিএনপি নেতাকর্মীদের মধ্যে পালটাপালটি ধাওয়া এবং কাঁদানে গ্যাসর শেল নিক্ষেপের ঘটনা ঘটে। এ থেকেই শুরু হয় সংঘর্ষ। পরে তা ছড়িয়ে পড়ে বিভিন্ন স্থানে।

পুলিশ জানিয়েছে, রাজধানীর ফকিরাপুল চার রাস্তার মোড়ে হামলার শিকার হয়ে এক পুলিশ কনস্টেবল নিহত হয়েছেন। তার নাম আমিনুল ওরফে পারভেজ। বাড়ি মানিকগঞ্জের দৌলতপুরে। তিনি ডিএমপির কাউন্টার টেরোরিজম অ্যান্ড ট্রান্সন্যাশনাল ক্রাইম ইউনিটে কর্মরত ছিলেন। এদিন বিকাল সোয়া ৪টার দিকে মুমূর্ষু অবস্থায় ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে এলে কর্তব্যরত চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন। 
ঢাকা মেডিকেলের জরুরি বিভাগের আবাসিক সার্জন ডা. মোহাম্মদ আলাউদ্দিন জানান, মৃত অবস্থায়ই ওই পুলিশ সদস্যকে হাসপাতালে নিয়ে আসা হয়েছিল। তার মাথায় গুরুতর আঘাত রয়েছে। আমরা ইসিজি করার পর নিশ্চিত হয়ে তাকে মৃত ঘোষণা করেছি।

নিহত পুলিশ সদস্যকে হাসপাতালে নিয়ে আসা রায়হান রাবদি নামে এক যুবক জানান, ফকিরাপুল মোড়ে পুলিশের ওপর যখন হামলা হয়, তখন ওই পুলিশ সদস্যসহ ৪ পুলিশ একটি ভবনে ঢুকে পড়েন। ভয়ে তাদের সঙ্গে ভবনটিতে ঢোকেন রায়হান। সেখান থেকে হঠাৎ ওই পুলিশ সদস্য বাইরে বেরিয়ে যান। তখনই তার ওপর হামলা চালান কয়েকজন। পরে তিনি অন্য পুলিশের সহায়তায় ওই পুলিশ সদস্যকে হাসপাতালে নিয়ে আসেন।

সরেজমিন দেখা যায়, বেলা ১টা ৪০ মিনিটের দিকে কাকরাইলে অবস্থিত ডিপ্লোমা ইঞ্জিনিয়ার ইনস্টিটিউশনের ভেতর দুটি গাড়িতে আগুন ধরিয়ে দেন বিএনপি কর্মীরা। পরে পুলিশের জলকামান গাড়ি ও ফায়ার সার্ভিসের মাধ্যমে আগুন নেভানো হয়। এ সময় বিএনপি কর্মীরা তিনটি যাত্রীবাহী বাস ভাঙচুর এবং পুলিশ বক্সে আগুন দেন। 

আরও দেখা যায়, সংঘর্ষের একপর্যায়ে বিএনপি নেতাকর্মীরা কাকরাইল থেকে একটু পিছু হটে নাইটেঙ্গেল মোড়ের দিকে অবস্থান নেয়। এ সময় পুলিশ সদস্যরা ডিপ্লোমা ইঞ্জিনিয়ার ইনস্টিটিউশনের ভবনের সামনে দাঁড়িয়ে কাঁদানে গ্যাস, সাউন্ড গ্রেনেড ও রাবার বুলেট নিক্ষেপ করে। বেলা দেড়টার দিকে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে কাকরাইল মোড়ে দাঁড়িয়ে পুলিশ রাবার বুলেট, কাঁদানে গ্যাস ও সাউন্ড গ্রেনেড নিক্ষেপ করে। অন্যদিকে বিএনপি কর্মীরা উইলস লিটল ফ্লাওয়ার স্কুলের সামনে দাঁড়িয়ে পুলিশকে লক্ষ্য করে ইটপাটকেল নিক্ষেপ করে। 

প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, বিএনপি নেতাকর্মীরা কাকরাইল মোড় থেকে মিন্টু রোডের কাছাকাছি থাকা যাত্রীবাহী বাস ভাঙচুর করলে পুলিশ অ্যাকশনে যায়। ওইসময় বিএনপি কর্মীদের সরিয়ে দিতে পুলিশ লাঠিচার্জ, কাঁদানে গ্যাস ও সাউন্ড গ্রেনেড নিক্ষেপ করে। পরে বিজিবি মোতায়েন করা হলে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আসে। এর আগে বেলা ১১টার দিকেও কাকরাইল মোড়ে আওয়ামী লীগ ও বিএনপি নেতাকর্মীদের মধ্যে সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে। এ সময়ও বেশ কয়েকটি যাত্রীবাহী বাসও ভাঙচুর করা হয়। সংঘর্ষে দুই পক্ষের কিছু লোক আহত হন এবং বেশ কয়েকটি গাড়ি ভাঙচুর করা হয়। এ সময় আশপাশের এলাকায় আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়ে। সাধারণ মানুষকে দৌড়ে পালাতে দেখা যায়।

এ বিষয়ে ডিএমপির গোয়েন্দা বিভাগের (ডিবি) অতিরিক্ত কমিশনার মোহাম্মদ হারুন অর রশীদ বলেন, সমাবেশগুলো নিয়মতান্ত্রিকভাবে করার কথা, ডিএমপি কমিশনারের কাছ থেকে তারা এমন শর্তেই অনুমতি নিয়েছেন। কিন্তু হঠাৎ করে পুলিশের ওপর বিএনপি নেতাকর্মীরা প্রথমে ইটপাটকেল নিক্ষেপ করেন। এরপর আমরা তাদের সরিয়ে দিই। 

বিএনপি নেতাকর্মীরা কাকরাইলে আইডিইবি ভবনে আগুন দেন, চিফ জাস্টিসের ভবনে ভাঙচুর করেন। আমরা তাদের সরিয়ে দিয়েছি। মতিঝিলে জামায়াতের মহাসমাবেশ প্রসঙ্গে জানতে চাইলে তিনি বলেন, জামায়াত শান্তিপূর্ণ সমাবেশ করলে আমরা কিছু বলছি না; কিন্তু সেখানেও তারা পুলিশের ওপর ইটপাটকেল নিক্ষেপ করেছেন। সরকারি ভবনে আগুন, বাসে আগুন দিয়ে যারা এমন ঘটনা ঘটিয়েছেন, তদন্ত করে তাদের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হবে বলেও জানান ডিবিপ্রধান।

ফায়ার সার্ভিস ও সিভিল ডিফেন্স অধিদপ্তরের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা শাহজাহান সিকদার জানান, রাজনৈতিক দলের কর্মসূচিকে ঘিরে শনিবার ২২টি স্থানে অগ্নিসংযোগের ঘটনা ঘটেছে। এর মধ্যে ১২টি দুর্ঘটনায় আগুন নেভানোর কাজ করেছে ফায়ার সার্ভিস। বিকাল ৫টায় শাজাহানপুর ফ্লাইওভারের নিচে অগ্নিনির্বাপণ শেষে ফিরে যাওয়ার পথে ফায়ার সার্ভিসের একটি পানিবাহী গাড়ি ভাঙচুর করে তাতে আগুন দেয় উচ্ছৃঙ্খল জনতা। 
তারা অগ্নিনির্বাপণ কর্মীদের মারধর করে। এ সময় ফায়ার সার্ভিসের একজন কর্মকর্তা এবং একজন ড্রাইভার আহত হন। অহতরা হলেন খিলগাঁও ফায়ার স্টেশনের সিনিয়র স্টেশন অফিসার আরিফুল ইসলাম এবং একই স্টেশনের ড্রাইভার শরিফুল ইসলাম। 

বিএনপির সমাবেশ পণ্ড : পুলিশের ছোড়া কাঁদানে গ্যাসের ধোঁয়া ও সাউন্ড গ্রেনেডের বিকট শব্দের মধ্যে নয়াপল্টনে বিএনপির মহাসমাবেশের মঞ্চ থেকে চলে যেতে বাধ্য হন কেন্দ্রীয় নেতারা। কাঁদানে গ্যাসের কারণে সমাবেশস্থলে কারও পক্ষে টিকে থাকা সম্ভব ছিল না। এতে সমাবেশ পণ্ড হয়ে যায়। ৩টার দিকে নয়াপল্টন কার্যালয়ের ভেতরে যান নেতারা। এর আগে বেলা ২টার দিকে মহাসমাবেশস্থলের মঞ্চ থেকে বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর নেতাকর্মীদের উদ্দেশে বলেন, ‘কারও উসকানিতে পা দেবেন না, দয়া করে বসে যান। 

শান্তিপূর্ণ সমাবেশ নস্যাৎ করতে চায় সরকার। মির্জা ফখরুল যখন এ আহ্বান জানাচ্ছিলেন, তখন কাকরাইলের দিক থেকে কাঁদানে গ্যাসের ধোঁয়া আসছিল। তবে মহাসমাবেশের কার্যক্রম বন্ধ করা হয়নি। এ সময় মঞ্চ থেকে ঢাকা মহানগর দক্ষিণ বিএনপির আহ্বায়ক আবদুস সালাম নেতাকর্মীদের উদ্দেশে বলেন, ‘দু-একটা পটকায় ভয় পাবেন না। গুলি হলে হবে।’ 

এরপর বিএনপি নেত্রী সেলিমা রহমান বক্তব্য দেন। তার বক্তব্যের পর বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য আমির খসরু মাহমুদ চৌধুরী বক্তব্য দেওয়া শুরু করেন। তার বক্তব্যের শেষদিকে এসে মাইক বন্ধ হয়ে যায়। তখন বেলা আড়াইটা। এর আগে বক্তব্যে তিনি বলেন, শান্তিপূর্ণ জনসভায় গোলাগুলি করছে তারা। আমির খসরুর বক্তব্যের সময়ও বিকট শব্দ শোনা যাচ্ছিল। 

কাকরাইলের দিক থেকে এই শব্দ যখন আসছিল, তখন মহাসমাবেশস্থলে উত্তেজনাকর পরিস্থিতি সৃষ্টি হয়। একপর্যায়ে টিয়ার গ্যাসের ধোঁয়া বিএনপির মঞ্চের দিকে আসতে থাকে। সোয়া ২টায় বিদ্যুৎ চলে গেলে বন্ধ হয়ে যায় মাইক। বেলা পৌনে ৩টায় একটি ভ্যানে করে রক্তাক্ত এক ব্যক্তিকে বিএনপির মঞ্চের সামনে আনা হয়। তখন উত্তেজনা আরও বেড়ে যায়। একপর্যায়ে বিএনপি নেত্রী নিপুণ রায়, আমিনুল হক, ইশরাক হোসেনসহ নেতাকর্মীরা লাঠিসোঁটা হাতে কাকরাইলের দিকে যেতে থাকেন। তখন সমাবেশস্থলে কাঁদানে গ্যাস ছড়িয়ে পড়ে। 

এমন পরিস্থিতিতে ধীরে ধীরে মঞ্চ ছাড়তে বাধ্য হন নেতাকর্মীরা। পরে মঞ্চে এসে বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর হ্যান্ডমাইকে সারা দেশে রোববার (আজ) সকাল-সন্ধ্যা হরতালের কর্মসূচি ঘোষণা করে বলেন, গুলি-কাঁদানে গ্যাস, সাউন্ড গ্রেনেডে অনেক নেতাকর্মী আহত হন। শান্তিপূর্ণ কর্মসূচিতে পুলিশ ও আওয়ামী লীগ সন্ত্রাসীদের হামালার প্রতিবাদে হরতাল কর্মসূচি পালিত হবে। 

বিজয়নগর : বিজয়নগরে পুলিশ ও বিএনপির মধ্যে ইটপাটকেল ছোড়াছুড়ি হয়েছে। বিকাল পৌনে ৩টার দিকে এ ঘটনা ঘটে। পরে সংঘর্ষে রূপ নেয়। একপর্যায়ে রাস্তায় আগুন ধরিয়ে দেওয়া হয়। পরে পুলিশ সেখানে কাঁদানে গ্যাসের শেল ছুড়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে।

মতিঝিল, আরামবাগ ও শাপলা চত্বর : প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, সমাবেশ শুরুর আগে মিছিলসহ আরামবাগ মোড়ে বিএনপির একটি গ্রুপ অবস্থান নেয়। পাশেই ছিল পুলিশের টিমের বড় অবস্থান। মিছিল থেকে নানা স্লোগান দিতে থাকেন বিএনপি কর্মীরা। পুলিশ বারবার সরে যেতে বলে, বাধা উপেক্ষা করে বিএনপি কর্মীরা সামনে গেলে উত্তপ্ত পরিস্থিতি তৈরি হয়। পরে পুলিশ সরে এলে পরিস্থিতি স্বাভাবিক হয়। 

এদিকে, আগে থেকেই শাপলা চত্বরের প্রবেশমুখ বন্ধ করে রাখে পুলিশ। প্রতিটি ব্যারিকেডের পাশেই ছিল বিপুলসংখ্যক পুলিশ। অপর পাশে নয়া পল্টনমুখী ছিল বিএনপির নেতাকর্মীদের অবস্থান। শাপলা চত্বরের প্রায় প্রতিটি গলির মুখে জামায়াতের নেতাকর্মীদের দেখা গেছে। শাপলা চত্বরের কয়েকটা গলিপথে ধাওয়া-পালটাধাওয়া হয়েছে। এ সময় মিজানুর রহমান নামে জামায়াতের এক কর্মীকে আটক করা হয়।

পুলিশ হাসপাতাল চত্বরে যানবাহনে আগুন : সমাবেশকে ঘিরে রাজারবাগ কেন্দ্রীয় পুলিশ হাসপাতালে অগ্নিকাণ্ডের ঘটনা ঘটেছে। দুষ্কৃতকারীরা হাসপাতাল চত্বরে ঢুকে সাতটি গাড়িতে আগুন দিয়েছে। এর মধ্যে একটি অ্যাম্বুলেন্স, একটি মাইক্রোবাস ও পাঁচটি মোটরসাইকেল রয়েছে। এ সময় হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রোগী ও স্বজনদের মাঝে আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়ে। ঘণ্টাখানেক পরে পরিবেশ শান্ত হয়। 

শনিবার বিকাল সোয়া ৩টায় লাগা আগুন নিয়ন্ত্রণে ফায়ার সার্ভিসের দুটি ইউনিট কাজ করে। অগ্নিকাণ্ডের বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন ফায়ার সার্ভিস নিয়ন্ত্রণ কক্ষের ডিউটি অফিসার রাফি আল ফারুক। তিনি বলেন, আমরা বিকাল ৩টা ১৫ মিনিটে রাজারবাগ কেন্দ্রীয় পুলিশ হাসপাতালে আগুন লাগার সংবাদ পাই। ঘটনাস্থলে আমাদের দুটি ইউনিট গিয়ে আগুন নিয়ন্ত্রণে আনে। 

এ বিষয়ে ডিএমপির মিডিয়া অ্যান্ড পাবলিক রিলেশনস বিভাগের উপপুলিশ কমিশনার মো. ফারুক হোসেন বলেন, রাজারবাগে পুলিশ হাসপাতালে আগুন দিয়েছে বিএনপি-জামায়াত। তাদের হামলায় এক পুলিশ সদস্য নিহত হয়েছেন। আহত হয়েছেন ৪১ জন। তাদের মধ্যে রাজারবাগ পুলিশ হাসপাতালে ২২ জন এবং ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ১৯ জন চিকিৎসাধীন আছেন।

প্রধান বিচারপতির বাসভবনের ফটকে হামলা : কাকরাইল মোড়ে প্রধান বিচারপতির বাসভবনের ফটকে হামলার ঘটনা ঘটেছে। বৃহস্পতিবার দুপুর ১টার দিকে এ ঘটনার সূত্রপাত। প্রধান বিচারপতির বাসভবনের গেটে দুর্বৃত্তরা ভাঙচুর চালিয়েছে। গেট ভেঙে তারা ভেতরেও ঢুকে পড়ে। পরে পুলিশ ঘটনাস্থলে গেলে পুলিশের সঙ্গে ধাওয়া-পালটাধাওয়া হয়। 

একপর্যায়ে হামলাকারীরা পিছু হটে। প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, কাকরাইল মোড় দিয়ে আওয়ামী লীগ নেতাকর্মীরা যাওয়ার সময় বিএনপি কর্মীরা ধাওয়া করে। ধাওয়া-পালটাধাওয়ার একপর্যায়ে আওয়ামী লীগ কর্মীরা প্রধান বিচারপতির বাসভবনে আশ্রয় নেন। বিএনপি কর্মীরা সেখানে গিয়ে হামলা চালান।

১১ প্লাটুন বিজিবি মোতায়েন : বিজিবি সদর দপ্তর জানায়, নিরাপত্তার স্বার্থে শনিবার রাত থেকে রাজধানীতে ১১ প্লাটুন বিজিবি মোতায়েন করা হয়েছে। এদের মধ্যে রমনায়-১, মতিঝিল-২ ও পল্টনে-২ প্লাটুন, সচিবালয়ে-২ ও প্রধান বিচারপতির বাসভবনের সামনে ৪ প্লাটুন বিজিবি মোতায়েন করা হয়েছে। 
এর আগে শনিবার রাজধানীতে ১০ প্লাটুন বর্ডার গার্ড বাংলাদেশ (বিজিবি) বিভিন্ন স্থানে মোতায়েন করা হয়। 
কাকরাইলে প্রধান বিচারপতির বাসভবন ঘিরে বিএনপির নেতাকর্মীদের সঙ্গে পুলিশের সংঘর্ষের পর ওই এলাকায় বিজিবি সদস্যরা টহল দেওয়া শুরু করে। বেশ কয়েকটি গাড়ি নিয়ে বিজিবি সদস্যদের সেখানে অবস্থান নিতে দেখা গেছে। এর আগে ওই এলাকায় বিএনপি নেতাকর্মীদের সঙ্গে পুলিশের সংর্ঘষ হয়।

ফ্লাইওভারে যানবাহনে আগুন : রাজধানীর কাকরাইল-মৌচাক-মালিবাগ ফ্লাইওভারসহ বিভিন্ন জায়গায় বেশ কয়েকটি যানবাহনে আগুন দেওয়ার ঘটনা ঘটেছে। ফায়ার সার্ভিস সদর দপ্তরের কন্ট্রোল রুম জানিয়েছে, কাকরাইল-মৌচাক-মালিবাগ ফ্লাইওভারে কয়েকটি যানবাহনে আগুন দেওয়া হয়েছে। আরও বিভিন্ন জায়গায় গাড়িতে অগ্নিসংযোগের ঘটনা ঘটেছে। যেখানেই সংবাদ পাওয়া যাচ্ছে সেখানেই ফায়ার সার্ভিসের লোকজন গিয়ে আগুন নিভিয়ে ফেলছে। 

ফায়ার সার্ভিসের গাড়িতে আগুন : শাহজাহানপুরে ফায়ার সার্ভিসের একটি গাড়িতেও আগুন দেওয়া হয়েছে। ফায়ার সার্ভিস ও সিভিল ডিফেন্স অধিদপ্তরের মহাপরিচালক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল মো. মাইন উদ্দিন শাহজাহানপুরে এলাকায় ফায়ার সার্ভিসের গাড়িতে আগুনের তথ্য নিশ্চিত করেন। তিনি বলেন, ওই গাড়িতে লাগা আগুন সার্ভিসের লোকরাই নিভিয়ে ফেলেছে।

শ্যামলী : রাজধানীর শ্যামলীতে পুলিশের গাড়িসহ বাসে আগুন ও ভাঙচুরের ঘটনা ঘটেছে। শনিবার দুপুর ১টার দিকে শ্যামলী শিশু পার্কের সামনে ১টি বাস, ১টি মোটরসাইকেলে আগুন দেওয়া হয়েছে। প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, একদল লোক মিছিল নিয়ে এসে ১টি বাস ও ১টি মোটরসাইকেলে আগুন দেয়। তারপর মিছিল নিয়ে টার্নিং পয়েন্টে এসে পুলিশের গাড়িতেও আগুন দেয়। 

এছাড়া পুলিশের গাড়িসহ আরও ৫-৬টি গাড়ি ভাঙচুর করেছে তারা। পরে পুলিশ পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে। ঘটনাস্থল থেকে তিনজনকে আটক করে পুলিশ। ডিএমপির অতিরিক্ত উপপুলিশ কমিশনার (এডিসি) রুবাইয়াত জামান জানান, প্রায় ৩০০ বিএনপি নেতাকর্মী মিছিল নিয়ে এসে বেশ কয়েকটি গাড়ি ভাঙচুর করে। পাশাপাশি অগ্নিসংযোগ করে। 

বিআরটিসির বাসে আগুন, ডিপোতে হামলা : রাজধানীর কমলাপুরে বাংলাদেশ সড়ক পরিবহণ করপোরেশনের (বিআরটিসি) একটি বাসে অগ্নিকাণ্ডের ঘটনা ঘটেছে। পাশাপাশি বিআরটিসি আন্তর্জাতিক বাস ডিপো অফিসে হামলা চালানো হয়েছে। এছাড়া কমলাপুর মোড়ের পুলিশ বক্স, ঢাকা দক্ষিণ সিটির আবর্জনা ব্যবস্থাপনা অফিসসহ একাধিক স্থাপনা ও যানবাহন ভাঙচুরের ঘটনা ঘটেছে। পরে ফায়ার সার্ভিস সদস্যরা ঘটনাস্থলে গিয়ে আগুন নিয়ন্ত্রণে আনে।

প্রত্যক্ষদর্শী বিআরটিসির বাসচালক আবদুল হামিদ বলেন, দুষ্কৃতকারীরা প্রথমে বাসে আগুন দিয়েছে। পরে পুলিশ বক্সে আগুন দিয়েছে। দোকানপাট ভাঙছে। এছাড়া মতিঝিল মডেল স্কুল অ্যান্ড কলেজের সামনে দুটি বাস ও কমলাপুর রেলস্টেশনের ভেতরে থাকা একটি জিপে আগুন দেওয়া হয়েছে। ওই এলাকার পাঁচটি দোকানে ভাঙচুর চালিয়েছে বিএনপির নেতা-কর্মীরা।

ভিডিও দেখে ‘দুষ্কৃতকারীদের’ শনাক্তে নেমেছে র‌্যাব : গণপরিবহণে ভাঙচুর, হামলা এবং অগ্নিসংযোগকারী ‘দুষ্কৃতকারীদের’ শনাক্ত করে আইনের আওতায় আনতে মাঠে নেমেছে র‌্যাব। শনিবার বিকালে র‌্যাব সদর দপ্তরের লিগ্যাল অ্যান্ড মিডিয়া উইংয়ের পরিচালক কমান্ডার খন্দকার আল মইন এ তথ্য জানান। তিনি বলেন, র‌্যাবের গোয়েন্দারা অন্যান্য গোয়েন্দা সংস্থার সঙ্গে সমন্বয় করে গণমাধ্যম থেকে প্রাপ্ত ফুটেজ, সিসি ক্যামেরা ফুটেজসহ সংশ্লিষ্ট তথ্য বিশ্লেষণ করে দুষ্কৃতকারীদের আইনের আওতায় নিয়ে আসতে কাজ করে যাচ্ছে।

আহতদের চিকিৎসা : সংঘর্ষের সময় আহত সাংবাদিক, বিএনপির নেতাকর্মী ও পুলিশসহ শতাধিক ব্যক্তি রাজধানীর বিভিন্ন হাসপাতালে চিকিৎসাধীন আছেন। এছাড়া আহতদের অনেকে বিভিন্ন হাসপাতালে প্রাথমিক চিকিৎসা নিয়ে বাসায় ফিরেছেন। ঢাকা মেডিকেল কলেজ (ঢামেক) হাসপাতালের পরিচালক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল নাজমুল হক বলেন, রাজধানীর বিভিন্ন এলাকা থেকে আহত ১৩০ জন ঢামেক হাসপাতালে চিকিৎসা নিয়েছেন। আহতদের মধ্যে ৩৩ জনকে ভর্তি করা হয়েছে। আহত এক পুলিশ সদস্যের অবস্থা আশঙ্কাজনক। তার মাথায় আঘাত রয়েছে। তাকে পর্যবেক্ষণে রাখা হয়েছে।

পুলিশ জানিয়েছে, আহত ২২ পুলিশ সদস্য রাজারবাগ পুলিশ হাসপাতাল ও ১৯ সদস্য ঢাকা মেডিকেল কলেজ (ঢামেক) হাসপাতালে ভর্তি আছেন। এছাড়া পুলিশের এক সদস্য মারা গেছেন। তার লাশ ঢামেকে রয়েছে।

ঢামেক সূত্রে জানা গেছে, শনিবার রাত ৮টা পর্যন্ত পুলিশসহ আহত ৭৯ জনকে ঢামেক হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। এছাড়া আরও অনেকেই প্রাথমিক চিকিৎসা নিয়েছেন। আহত অন্যদের মধ্যে রয়েছেন সাংবাদিক, পথচারী ও বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের কর্মী। ঢামেক হাসপাতালের পুলিশ ফাঁড়ির ইনচার্জ পরিদর্শক মো. বাচ্চু মিয়া বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।

ঢামেক সূত্রে জানা গেছে, আহতদের মধ্যে রয়েছেন নাসির, সুজন, নওয়াব আলী, জাফর, কালাম, আলামিন প্রধান, রাফিন, মারুফ, এবিএম রাজু, হুমায়ুন কবির, লিয়ন, আকলিমা, সজীব হোসেন, সালেক, সজীব ভূঁইয়া, সাংবাদিক রাফসান, সাংবাদিক মাসুম, বিল্লাল, রুবেল, কালাম, নান্নু, আকরাম, মানিক, রফিকুল ইসলাম, রাজু আহমেদ, কবির, নয়ন, এমদাদুল, আনোয়ার, জমির, হিয়া, রাসেল, রোকসানা, রোমান, আরিন, পুলিশ সদস্য এএসআই সামাদ, নায়েক আব্দুর রাজ্জাক, পুলিশ কনস্টেবল আসাদুজ্জামান, কাইয়ুম, আলী প্রমুখ।

বিএনপি-জামায়াতের ৮৪১ নেতাকর্মী কারাগারে : বিএনপি-জামায়াতের মহাসমাবেশের আগের ২৪ ঘণ্টায় ঢাকায় তাদের ৮৪১ নেতাকর্মীকে গ্রেপ্তার করেছে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী। শনিবার ঢাকার চিফ মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট (সিএমএম) ও চিফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট (সিজেএম) আদালতে গ্রেপ্তার নেতাকর্মীদের হাজির করা হয়। আদালত তাদের সবাইকে কারাগারে পাঠানোর আদেশ দিয়েছেন। 

সিএমএম আদালতের সাধারণ নিবন্ধন শাখা থেকে প্রাপ্ত তথ্যানুযায়ী ঢাকা মহানগর এলাকার বিভিন্ন থানা থেকে মোট ৬৪৬ বিএনপি-জামায়াতের নেতাকর্মীকে বিভিন্ন মামলায় গ্রেপ্তার দেখিয়ে এদিন আদালতে হাজির করা হয়। এছাড়া সন্দেহভাজন হিসাবে ফৌজদারি কার্যবিধি ৫৫ ধারায় ১৭৮ জন এবং ঢাকা জেলার ছয়টি থানা এলাকা থেকে গ্রেফতার ১৭ জনকে কারাগারে পাঠানো হয়েছে।

হরতাল ডেকেছে গণতন্ত্রমঞ্চ, জামায়াতসহ বিভিন্ন দল ও জোট : গণতন্ত্রমঞ্চ, জামায়াতসহ বিভিন্ন দল ও জোট আজ হরতাল ডেকেছে। শনিবার বিকালে জাতীয় প্রেস ক্লাবে গণসমাবেশে এ কর্মসূচি ঘোষণা দেন বিএনপির সঙ্গে যুগপথ আন্দোলনে থাকা গণতন্ত্রমঞ্চের নেতারা। 

ভাসানী অনুসারী পরিষদের আহ্বায়ক শেখ রফিকুল ইসলাম বাবলুর সভাপতিত্বে গণসমাবেশে বক্তব্য দেন জাতীয় সমাজতান্ত্রিক দল-জেএসডির সিনিয়র সহসভাপতি তানিয়া রব, গণসংহতি আন্দোলনের প্রধান সমন্বয়কারী জোনায়েদ সাকি, বিপ্লবী ওয়ার্কার্স পার্টির সাধারণ সম্পাদক সাইফুল হক, নাগরিক ঐক্যের সভাপতি মাহমুদুর রহমান মান্না ও রাষ্ট্র সংস্কার আন্দোলনের প্রধান সমন্বয়ক হাসনাত কাইয়ুমসহ গণতন্ত্রমঞ্চের নেতারা। 

এছাড়াও হরতাল ডেকেছে ১২ দলীয় জোট, জাতীয়তাবাদী সমমনা দল, এলডিপি, নুরুল হক নুর নেতৃত্বাধীন গণঅধিকার পরিষদ ও জামায়াতসহ বিভিন্ন রাজনৈতিক দল ও জোট। হরতালের সমর্থন জানিয়েছে আমার বাংলাদেশ পার্টি-এবি পার্টি ও ববি হাজ্জাজ নেতৃত্বাধীন এনডিএম।

রাতে বিভিন্ন স্থানে বাসে আগুন ও হরতালবিরোধী মিছিল : শনিবার রাতে সাভার, গাজীপুর ও মিরপুরে বাসে আগুন দিয়েছে দুর্বৃত্তরা। এছাড়া মানিকগঞ্জে হরতালবিরোধী মিছিল হয়েছে। মিরপুরের কালশীতে রাত পৌনে ১০টার দিকে ট্রাস্ট ট্রান্সপোর্ট লিমিটেডের একটি বাসে আগুন দেওয়া হয়েছে। পরে ফায়ার সার্ভিস এসে আগুন নেভায়। রাত সাড়ে ৯টার দিকে ঢাকা-আরিচা মহাসড়কের জাদুরচর এলাকায় মৌমিতা পরিবহণের একটি বাসে আগুন দেয় দুর্বৃত্তরা। এছাড়া রাত ৯টার দিকে গাজীপুরের কোনাবাড়ী কলেজ গেট এলাকায় আজমেরি পরিবহণের বাসে ভাঙচুর করে আগুন ধরিয়ে দেওয়া হয়েছে। এদিকে কোনাবাড়ীর সাইনবোর্ড এলাকায় হরতালের সমর্থনে মশাল মিছিল করেছে বিএনপি। মানিকগঞ্জে রাত সাড়ে ৮টায় হরতালবিরোধী মিছিল করেছে জেলা আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীরা।

এদিকে রাজধানীর নায়াপল্টনে বিএনপি অফিসের সামনে গভীর রাতে সিআইডির ক্রাইম সিন ইউনিট অবস্থান নেয়। তারা বিভিন্ন আলামত সংগ্রহ করেছে। পাশেই পল্টন থানা পুলিশের সদস্যরা অবস্থান নেন। পল্টন থানার ওসি সালাউদ্দিন মিয়া বলেন, সিআইডির ক্রাইম সিন ইউনিট বিএনপি অফিসের সামনে রয়েছে।

LEAVE A REPLY