গ্রামীণফোনের লোগো। ছবি: সংগৃহীত
পুঁজিবাজারে তালিকাভুক্ত টেলিযোগাযোগ খাতের কম্পানি গ্রামীণফোন লিমিটেডের মুনাফা কমেছে। চলতি বছরের জুলাই থেকে সেপ্টেম্বর প্রান্তিকের অনিরীক্ষিত আর্থিক প্রতিবেদনে এই চিত্র উঠে এসেছে।
চলতি বছরের তৃতীয় প্রান্তিকে কর-পরবর্তী নিট মুনাফা হয়েছে ৭৪৭ কোটি ১৫ লাখ টাকা, যা ২০২২ সালের একই সময়ে ছিল ৯০৭ কোটি ৬৬ লাখ টাকা। তাতে কম্পানিটির শেয়ারপ্রতি আয় (ইপিএস) হয়েছে ৫ টাকা ৫৩ পয়সা, যা ২০২২ সালের একই সময়ে ছিল ৬ টাকা ৭২ পয়সা।
অর্থাৎ কম্পানিটির মুনাফা কমেছে ১৬০ কোটি টাকা। তাতে ইপিএসও কমেছে। মুনাফা কমার প্রান্তিকে কম্পানিটির শেয়ারপ্রতি নিট সম্পদমূল্য (এনএভিপিএস) দাঁড়িয়েছে ৪৪ টাকা ৮৭ পয়সা।
আর চলতি বছরের তিন প্রান্তিক অর্থাৎ জানুয়ারি থেকে সেপ্টেম্বর সময়ে কম্পানির কর-পরবর্তী প্রকৃত মুনাফা হয়েছে দুই হাজার ৭২০ কোটি ৬৩ লাখ টাকা, যা আগের বছরের একই সময়ে ছিল দুই হাজার ৬৩৮ কোটি ১২ লাখ টাকা।
অর্থাৎ তিন প্রান্তিক মিলে কম্পানির মুনাফা বেড়েছে। ফলে তিন প্রান্তিকে কম্পানিটির শেয়ারপ্রতি আয় (ইপিএস) হয়েছে ২০ টাকা ১৫ পয়সা, যা ২০২২ সালের একই সময়ে ছিল ১৯ টাকা ৫৪ পয়সা।
তবে চলতি বছরের প্রথম ৯ মাসে ১১ হাজার ৮৪৫ কোটি টাকা রাজস্ব আয় করেছে গ্রামীণফোন, যা আগের বছরের একই সময়ের তুলনায় ৪.৯ শতাংশ বেশি। তৃতীয় প্রান্তিকে ৭.৬১ লাখ নতুন গ্রাহক গ্রামীণফোনের সঙ্গে যুক্ত হয়েছেন।
ফলে বছরের প্রথম ৯ মাস শেষে গ্রামীণফোনের গ্রাহকসংখ্যা দাঁড়িয়েছে আট কোটি ২০ লাখ। গ্রামীণফোনের মোট গ্রাহকের ৫৭.৯ শতাংশ বা চার কোটি ৭৫ লাখ গ্রাহক ইন্টারনেট সেবা ব্যবহার করছেন। গতকাল এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়েছে।
গ্রামীণফোনের প্রধান নির্বাহী ইয়াসির আজমান বলেন, সামষ্টিক অর্থনীতির প্রতিকূল পরিবেশ সত্ত্বেও ডাটা সেগমেন্টসহ রাজস্ব ও ইবিআইটিডিএ উভয় ক্ষেত্রে প্রবৃদ্ধির কারণে ২০২৩ সালের তৃতীয় প্রান্তিকে ধারাবাহিক প্রবৃদ্ধি অর্জন করা সম্ভব হয়েছে। গ্রামীণফোনের প্রধান আর্থিক কর্মকর্তা ইয়েন্স বেকার বলেন, তৃতীয় প্রান্তিকে বছরপ্রতি ৫.৭ শতাংশ ইবিআইটিডিএ প্রবৃদ্ধি হয়েছে।
জ্বালানির মূল্যবৃদ্ধি, মূল্যস্ফীতিসহ সামষ্টিক অর্থনীতির ক্ষেত্রে নানা প্রতিকূলতার মধ্যে ৬১.৯ শতাংশ শক্তিশালী ইবিআইটিডিএ মার্জিন বজায় রাখা সম্ভব হয়েছে। আগের প্রান্তিকে ৫.৬ শতাংশ প্রবৃদ্ধির পরে বছরপ্রতি মোট রাজস্ব বেড়েছে ৬.৩ শতাংশ। সাবস্ক্রিপশন ও ট্রাফিক রাজস্বে ৬ শতাংশ প্রবৃদ্ধিই মূলত মোট রাজস্বে ভূমিকা রেখেছে। ১৮.২ শতাংশ মার্জিন নিয়ে তৃতীয় প্রান্তিকে কর-পরবর্তী নিট মুনাফা দাঁড়িয়েছে ৭৪৭.২ কোটি টাকা।
তৃতীয় প্রান্তিক শেষে ফোরজি সাইটের সংখ্যা উন্নীত হয়েছে ২১ হাজারে, যার মাধ্যমে ৯৭.৯ শতাংশ মানুষকে ফোরজি কাভারেজের সেবা দেওয়া হচ্ছে। ২০২৩ সালের প্রথম ৯ মাসে গ্রামীণফোন ৯ হাজার ৫১৭ কোটি টাকা সরকারি কোষাগারে জমা দিয়েছে, যা প্রতিষ্ঠানের মোট রাজস্বের ৮০ শতাংশ।