বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ কমলেও ঘাটতির সৃষ্টি হয়নি : অর্থমন্ত্রী

অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামাল। (ফাইল ছবি)

বর্তমানে বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভের পরিমাণ পূর্বের তুলনায় কমে এলেও কোনো ঘাটতি পরিস্থিতি সৃষ্টি হয়নি বলে জানিয়েছেন অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামাল। তিনি বলেছেন, আন্তর্জাতিক বাজারে জ্বালানি তেলসহ বিভিন্ন পণ্যের মূল্যবৃদ্ধির ফলে আমদানি ব্যয় বৃদ্ধিসহ রেমিট্যান্সের পরিমাণ কমেছে। গত ১২ অক্টোবর পর্যন্ত স্থিতির ভিত্তিতে দেশে বর্তমানে গ্রস রিজার্ভের পরিমাণ ২১ হাজার ১১৬ মিলিয়ন মার্কিন ডলার।

আজ মঙ্গলবার জাতীয় সংসদ অধিবেশনে প্রশ্নোত্তর পর্বে তিনি এ তথ্য জানান।

সরকারদলীয় সংসদ সদস্য কাজিম উদ্দিন আহম্মেদের প্রশ্নের লিখিত জবাবে অর্থমন্ত্রী আরো বলেন, ‘কভিড-১৯ পরবর্তী বৈশ্বিক অর্থনৈতিক মন্দা এবং ইউক্রেন-রাশিয়া যুদ্ধজনিত আন্তর্জাতিক পণ্য সরবরাহের অনিশ্চয়তার কারণে সৃষ্ট দেশের বহিঃখাতের চাপ মোকাবেলা করে বৈদেশিক মুদ্রা রিজার্ভের সন্তোষজনক স্থিতি বজায় রাখতে বাংলাদেশ ব্যাংক কিছু পদক্ষেপ নিয়েছে।’

তিনি বলেন, ‘পদক্ষেপসমূহের মধ্যে বৈদেশিক মুদ্রার বিনিময় হারকে অধিকতর বাজারমুখীকরণ ও একাধিক হারের পরিবর্তে একক হারের দিকে ধাবিত হওয়ার জন্য পর্যায়ক্রমিক পদক্ষেপ গ্রহণ করা হয়েছে। আমদানীকৃত পণ্যের মূল্যের সঠিকতা যাচাইয়ের নিমিত্তে সার্কুলার জারি করা হয়েছে। এগুলো প্রতিপালনে প্রতিনিয়ত তদারকি চলছে।

অপ্রত্যাশিত রপ্তানি আয় নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যে প্রত্যাবাসনের জন্য ব্যাংকগুলোকে নির্দেশনা প্রদানের সার্কুলার জারি করা হয়েছে উল্লেখ করে মুস্তফা কামাল বলেন, ‘আর সরকারি বৈধ পথে প্রেরিত রেমিট্যান্সের বিপরীতে ২.৫ শতাংশ হারে প্রণোদনা প্রদান করেছে। এ ছাড়া আমদানির-রপ্তানির ক্ষেত্রে আন্ডার-ইনভয়েসিং ও ওভার-ইনভয়েসিং বন্ধের জন্য কার্যকর মনিটরিং ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়েছে।’

সরকারদলীয় সংসদ সদস্য বেনজীর আহমদের প্রশ্নের জবাবে অর্থমন্ত্রী বলেন, ‘বর্তমান সরকারের আমলে অথনৈতিকভাবে বাংলাদেশের প্রভূত অগ্রগতি সাধিত হয়েছে। প্রায় ১৫ বছরের পথপরিক্রমায় আমরা ইতিমধ্যে নিম্ন আয়ের দেশ হতে মধ্যম আয়ের দেশে উত্তীর্ণ হয়েছি এবং স্বল্পোন্নত দেশ হতে উন্নয়নশীল দেশে উত্তরণের যোগ্যতা অর্জন করেছি।

বর্তমান সরকারের আমলে ২০০৯ থেকে ২০২২ সালে গড়ে ৬.৩৬ শতাংশ হারে প্রবৃদ্ধি অর্জিত হয়েছে। যেখানে উন্নয়নশীল দেশসমূহের গড় প্রবৃদ্ধি হয়েছে ৫.১ শতাংশ। একই সময়ে মাথাপিছু জিএনআই গড়ে ৯ শতাংশ হারে বৃদ্ধি পেয়েছে।’

বিরোধী দল জাতীয় পার্টির সৈয়দ আবু হোসেনের প্রশ্নের জবাবে অর্থমন্ত্রী বলেন, ‘গত ২০২২-২৩ অর্থবছরে রাজস্ব আদায়ের লক্ষ্যমাত্রা অর্জিত হয়নি। চলতি অর্থবছরে (২০২৩-২৪) অভ্যন্তরীণ সম্পদ হতে জাতীয় রাজস্ব বোর্ড অংশ রাজস্ব আদায়ের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে চার লাখ ৩০ হাজার কোটি টাকা এবং স্ট্যাম্প শুল্ক বাবদ অভ্যন্তরীণ সম্পদ বিভাগের নিজস্ব লক্ষ্যমাত্রা ১৩ হাজার ৬১৭.৫৭ কোটি টাকা।

অর্থাৎ অভ্যন্তরীণ সম্পদ বিভাগের মোট রাজস্ব লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়েছে চার লাখ ৪৩ হাজার ৬১৭.৫৭ কোটি টাকা।’

আওয়ামী লীগের এম আবদুল লতিফের প্রশ্নের জবাবে মুস্তফা কামাল বলেন, ‘বাংলাদেশের মানবসম্পদ উন্নয়নে ২০২৩ সালে জাপান আর্থিক অনুদান প্রদান করেছে। অনুদানের পরিমাণ ৪৭২ মিলিয়ন জাপানিজ ইয়েন (আনুমানিক ৩.৩৮ মিলিয়ন মার্কিন ডলার)।’

একই দলের সংসদ সদস্য নূরুন্নবী চৌধুরীর প্রশ্নের জবাবে অর্থমন্ত্রী বলেন, ‘বর্তমানে দেশে ট্যাক্স আইডেন্টিফিকেশন নম্বরধারীর সংখ্যা ৯৩ লাখ ৪৬ হাজার ৮৬৯ জন (সেপ্টেম্বর পর্যন্ত)। আয়কর আইন অনুযায়ী স্পষ্ট ট্যাক্স নির্ধারণ বাতিল করা হয়েছে।’

LEAVE A REPLY