দুদকের মামলায় পাপিয়ার জামিন, মুক্তিতে বাধা থাকছে না।

শামীমা নূর পাপিয়া

জ্ঞাত আয়বহির্ভূত সম্পদ অর্জনের মামলায় যুব মহিলা লীগের বহিষ্কৃত নেত্রী শামীমা নূর পাপিয়াকে জামিন দিয়েছেন হাইকোর্ট।
তাঁর নিয়মিত জামিন প্রশ্নে রুল দিয়ে বুধবার (১ নভেম্বর) বিচারপতি মো. নজরুল ইসলাম তালুকদার ও বিচারপতি মোহাম্মদ আলীর হাইকোর্ট বেঞ্চ তাঁকে ছয় মাসের জামিন দেন।

আদালতে জামিন আবেদনের পক্ষে শুনানি করেন আইনজীবী রবিউল আলম বুদু ও আইনজীবী মোহাম্মদ হোসেন। দুর্নীতি দমন কমিশন -দুদকের পক্ষে শুনানি করেন জ্যেষ্ঠ আইনজীবী মো. খুরশীদ আলম খান।

পরে খুরশীদ আলম খান সাংবাদিকদের বলেন, ‘মামলাটি সাক্ষ্যগ্রহণ পর্যায়ে রয়েছে। নারী এবং দীর্ঘদিন কারাগারে থাকার যুক্তিতে জামিন চাওয়া হয়েছিল। আদালত ছয় মাসের অন্তর্বর্তী জামিন দিয়েছেন।’

পাপিয়ার জামিন স্থগিত চেয়ে আপিল বিভাগে আবেদন করা হবে কি না জানতে চাইলে এ আইনজীবী কালের কণ্ঠকে বলেন, ‘কমিশনকে (দুদক) জামিনের বিষয়টি জানিয়েছি।

সিদ্ধান্ত আসলে অবশ্যই জামিন স্থগিত চেয়ে আবেদন করা হবে।’

পাপিয়ার আইনজীবী রবিউল আলম বুদু বলেন, ‘অস্ত্র আইনসহ অন্য সব মামলায় পাপিয়া জামিনে আছেন। এ মামলাটিতেই তার জামিন পাওয়া বাকি ছিল। আজ হাইকোর্ট তাকে জামিন দেওয়ায় তার কারামুক্তিতে আর কোনো বাধা থাকছে না।

নরসিংদী জেলা যুব মহিলা লীগের বহিষ্কৃত সাধারণ সম্পাদক শামীমা নূর পাপিয়া ও তাঁর স্বামী মফিজুর রহমান ওরফে সুমনকে ২০২০ সালের ২২ ফেব্রুয়ারি গ্রেপ্তার করে র‍্যাব। পাপিয়া, তার স্বামী সুমন চার সহযোগীসহ বিদেশে পাড়ি জমানোর চেষ্টা করছিলেন। তখন হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে উড্ডয়নের জন্য অপেক্ষমাণ বিমান থেকে নামিয়ে এনে তাদের গ্রেপ্তার করা হয়। পরে জ্ঞাত আয়বহির্ভূত সম্পদ অর্জনের অভিযোগে ওই বছরের ৪ আগস্ট তাঁদের বিরুদ্ধে মামলা করেন দুদকের উপপরিচালক শাহীন আরা মমতাজ। তদন্ত শেষে ২০২১ সালের ৩০ মার্চ তাদের বিরুদ্ধে আদালতে অভিযোগপত্র জমা দেয় দুদক।

পাপিয়া ও তার স্বামী সুমনের বিরুদ্ধে পাঁচ কোটি ৮৪ লাখ ১৮ হাজার ৭৮৪ টাকার জ্ঞাত আয়বহির্ভূত অবৈধ সম্পদ অর্জনের অভিযোগ আনা হয় অভিযোগপত্রে। পরে ওই বছর ৩০ নভেম্বর এ মামলায় অভিযোগ গঠন করে বিচার শুরুর আদেশ দেন ঢাকার বিশেষ জজ আদালত-৩-এর বিচারক।

ধরা পড়ার পর পাপিয়াকে নরসিংদী যুব মহিলা লীগের সাধারণ সম্পাদকের পদ থেকে বহিষ্কার করা হয়। সেই সময় পাপিয়া ও তার স্বামীর বিরুদ্ধে বিমানবন্দর থানায় বিশেষ ক্ষমতা আইনে একটি, শেরেবাংলানগর থানায় অস্ত্র ও বিশেষ ক্ষমতা আইনে দুটি আলাদা মামলা করে র‌্যাব। পরে পুলিশের অপরাধ তদন্ত বিভাগ-সিআইডি পাপিয়া, তাঁর স্বামী ও সহযোগীদের বিরুদ্ধে গুলশান থানায় অর্থপাচার প্রতিরোধ আইনে একটি মামলা করে। এখন পর্যন্ত অবৈধ অস্ত্র রাখার মামলায় পাপিয়া ও তার স্বামীকে ২০ বছরের সশ্রম কারাদণ্ড দিয়েছেন আদালত।

LEAVE A REPLY