হামাসের ত্রিমুখী হামলার ফাঁদে ইসরাইল

গাজার তলদেশে হামাসের সুড়ঙ্গ (টানেল)। বিশাল ভূগর্ভস্থ গোলকধাঁধা। অস্ত্রের গুদাম ঘর। গত কয়েক দশকে আরও ভয়ংকর হয়ে উঠছে এই আন্ডারওয়ার্ল্ড। ভয় পাচ্ছে ইসরাইলি সেনারাও। এগুলো এতই হুমকিস্বরূপ যে, অতীতের যুদ্ধে ইসরাইলিরা এই কাঠামোটিকে ‘প্রাণঘাতী সুড়ঙ্গ’ বলে অভিহিত করেছিল। শনিবার ওয়াশিংটন পোস্টে প্রকাশিত এক প্রতিবেদনে সামরিক বিশ্লেষকরা বলছেন, হামাসের ত্রিমুখী হামলার ফাঁদে পড়তে পাড়ে ইসরাইল। সুড়ঙ্গে প্রবেশের চেষ্টা করলেই ইসরাইলের ওপর তিন দিক থেকে হামলা করা হতে পারে। হামাস যোদ্ধারা ভাঙা ভবনের ছাদ, ধ্বংসস্তূপের রাস্তা এবং ভূগর্ভস্থ সুড়ঙ্গের ভেতর থেকে গুলি চালাতে পারে। এ আতঙ্কে মাটির নিচের হামাস জালে পা রাখতে চায় না ইসরাইলি সেনারা। নিহত বা বন্দি হওয়ার সম্ভাবনা বেশি থাকায় সম্প্রতি ইসরাইলি সামরিক প্রটোকল নিয়মিত স্থল সেনাদের সুড়ঙ্গে প্রবেশ করতে নিষেধ করেছে। 

ইসরাইলি কর্মকর্তাদের মতে, গাজা উপত্যকাজুড়ে ৩০০ মাইল বিস্তৃত ১ হাজার ৩০০টি টানেল রয়েছে। যার একেকটি ২৫ মাইল দীর্ঘ। সামরিক বাহিনী নেটওয়ার্কটিকে বিশ্বের সবচেয়ে বিস্তৃত ভূগর্ভস্থ জাল হিসেবে বর্ণনা করেছে। যদিও ফিলিস্তিনি চিকিৎসকরা বিষয়টি অস্বীকার করেছেন। ইসরাইলের ইনস্টিটিউট ফর ন্যাশনাল সিকিউরিটি স্টাডিজের সিনিয়র গবেষক কোবি মাইকেল বলেছেন, আমরা নিজেরাই সুড়ঙ্গে প্রবেশ করতে যাচ্ছি না। তবে সেনারা দূর থেকে টানেল ধ্বংসের সম্ভাব্য কৌশল অবলম্বন করার কথা জানায়। সামরিক মুখপাত্ররা বলেছেন, চার সপ্তাহের বোমাবর্ষণে শত শত ভূগর্ভস্থ লক্ষ্যবস্তুতে আঘাত করা হয়েছে। এর প্রতিক্রিয়ায় গাজার কর্মকর্তারা বলছেন, হামলায় হাজার হাজার বেসামরিকদের প্রাণহানি হয়েছে। অন্যান্য বিশ্ব কর্মকর্তারা গাজায় যুদ্ধ বিরতির জন্য চাপ দেওয়ার পর ইসরাইলি প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু বলেছেন, সব জিম্মি ফিরে না আসা পর্যন্ত কোনো সামরিক যুদ্ধ বিরতি হবে না।

গত সপ্তাহে ওয়াশিংটন পোস্টের একটি সাক্ষাৎকারে, বৈরুতে অবস্থিত সিনিয়র হামাস নেতা আলী বারাকা বলেছিলেন, যোদ্ধারা মাটির নিচে, যুদ্ধের জন্য অপেক্ষা করছে। কয়েক দশক ধরে হ্যান্ড টুল দিয়ে খনন করা হামাস টানেলগুলো প্রিকাস্ট কংক্রিট দিয়ে শক্তিশালী করা হয়েছে। বেশিরভাগ টানেল সরু হলেও কিছু ছোট যানবাহন চলাচলের জন্য যথেষ্ট প্রশস্ত। টানেলগুলো হামাস যোদ্ধাদেরকে উল্লেখযোগ্য দূরত্বে দ্রুত যোগাযোগ করার সুবিধা দিতে পারে। এতে পুনরায় অস্ত্র সরবরাহ করা, তাদের আহতদের সরিয়ে নেওয়া এমনকি যোদ্ধাদের পালিয়ে যাওয়ার জন্য সব রকম ব্যবস্থা রয়েছে।

LEAVE A REPLY