ক্ষণে ক্ষণে উত্তেজনা ছড়িয়েছে আদতে বিশ্বকাপের জন্য গুরুত্বহীন বাংলাদেশ-শ্রীলঙ্কা ম্যাচ। শেষ হাসিটা হেসেছে বাংলাদেশ। ৩ উইকেটের জয়ে টানা ছয় হারের পর জয়ের দেখা পেয়েছেন সাকিব আল হাসানরা। তবে জয়টা সাকিব আল হাসান ও নাজমুল হোসেন শান্তর জুটিতে যে রকম সহজে আসবে বলে মনে হচ্ছিল, সেভাবে আসেনি।
শ্রীলঙ্কার ২৮০ রানের লক্ষ্য তাড়ায় ৪১ রানের মধ্যে বাংলাদেশের দুই ওপেনারের উইকেট তুলে নিয়ে লড়াই জমিয়ে তোলার আভাস দেয় শ্রীলঙ্কা। তবে সাকিব ও নাজমুল অন্যদিনের মতো আজ আর সস্তায় উইকেট দিয়ে আসেননি। বরং তাঁদের দুর্দান্ত এক জুটিতে ভালোভাবেই ম্যাচে আছে বাংলাদেশ। সাকিব আউট হওয়ার আগে সাকিব-শান্ত জুটি থেকে বাংলাদেশ পেয়েছে ১৬৯ রান।
কাকতালীয়ভাবে বাংলাদেশ অধিনায়ক আউট হয়েছেন ম্যাথুসের বলে।
ম্যাথুসের টাইমড আউট নাটকের পর তাঁর বলেই আউট হয়েছেন সাকিব। সাকিব ড্রেসিংরুমে ফেরার পথে হাত দিয়ে কাল্পনিক ঘড়ি দেখান ম্যাথুস। যেটার অর্থ, ‘তোমারও সময় শেষ।
’ সাকিব ৬৫ বলে ৮২ রান করেছেন। তাঁর ইনিংসে ১২ চার ও ২ ছক্কা। সাকিবের পর ম্যাথুসের পরের ওভারে আউট হন নাজমুলও। ১০১ বলে ৯০ রান করেছেন এই বাঁহাতি ব্যাটার। ম্যাচে ফেরা শ্রীলঙ্কা এরপর দ্রুত আরো ২ উইকেট তুলে নেয়।
১০ রানে মুশফিকুর রহিম ও ২২ রানে আউট হন মাহমুদ উল্লাহ। ২১১ রানে ৪ উইকেট থেকে ২৫৫ রানে ৬ উইকেট হারায় বাংলাদেশ। জয় থেকে ১২ রান দূরে থাকতে ফেরেন মেহেদী হাসান মিরাজও।
তবে বাংলাদেশের হাত থেকে ম্যাচ ছুটতে দেননি তাওহিদ হৃদয়। ১৫ রানে অপরাজিত থাকেন তিনি। তাঁর সঙ্গে এক চারে তানজিম হাসান সাকিবের ৫ রানও বড় ভূমিকা রাখে বাংলাদেশের জয়ে। এর আগে লঙ্কানদের লড়াকু সংগ্রহের বড় কৃতিত্ব চারিথ আশালাঙ্কার। এই মিডল অর্ডার ব্যাটার বিশ্বকাপে প্রথম সেঞ্চুরির দেখা পেয়েছেন। তাঁর ১০৮ রানের ইনিংস শ্রীলঙ্কাকে পথ হারাতে দেয়নি। কারণ লঙ্কানদের শুরুটা আশাজাগানিয়া ছিল না। দলীয় ৫ রানে ফিরে যান ওপেনার কুশল পেরেরা। এরপর ৬৭ রানের মধ্যে আরো ২ উইকেট হারায় তারা। আউট হয়ে যান কুশল মেন্ডিস (১৯) ও পাথুম নিশাঙ্কা (৪১)। চতুর্থ উইকেটে সাদিরা সামারাবিক্রমাকে নিয়ে ঘুরে দাঁড়ানোর বার্তা দেন আশালাঙ্কা। দুজনের ৬৩ রানের জুটি। সাকিব আল হাসান সামারাবিক্রমাকে ৪১ রানে ফিরিয়ে এই জুটি ভাঙেন।
এরপর অ্যাঞ্জেলো ম্যাথুসের টাইমড আউট নাটক। হেলমেটের ফিতা ছিঁড়ে যাওয়ায় ব্যাটিং শুরু করতে সময়ক্ষেপণ করেন ম্যাথুস। যেটা এবারের বিশ্বকাপের প্লেয়িং কন্ডিশন অনুযায়ী দুই মিনিট পেরিয়ে যায়। বাংলাদেশ দলের আবেদনে আউটের ঘোষণা দেন আম্পায়ার। শ্রীলঙ্কার ইনিংসের সবচেয়ে বড় জুটিটি এরপর ষষ্ঠ উইকেট জুটিতে। আশালাঙ্কার সঙ্গে ধনঞ্জয়া ডি সিলভার ৭৮ রানের জুটি। ৩৪ রানে ধনঞ্জয়া স্টাম্পড হয়ে ফিরলে জুটি ভাঙে।
মহেশ থিকশানার সঙ্গে জুটি সেঞ্চুরি পূর্ণ করেন আশালাঙ্কা। তাঁর ১০৫ বলের ইনিংসে ৬ চার ও ৫ ছক্কা। থিকশানা ২২ রান করেছেন। বাংলাদেশের পক্ষে ৩টি উইকেট নিয়েছেন তানজিম হাসান সাকিব। ২টি করে উইকেট নিয়েছেন সাকিব ও শরিফুল ইসলাম।