ফাইল ছবি
আগাম জামিন নিতে এসে ধরা খেলেন মানব পাচার প্রতিরোধ আইনের মামলার পাঁচ আসামি। তারা হলেন চাঁপাইনবাবগঞ্জের মো. রিটু (৪৫), রাজশাহীর বোয়ালিয়ার হেতেমখাঁ গ্রামের মো. আবুল কালাম আজাদ (৩৫), চন্দ্রিমা থানার মো. শফিকুল ইসলাম (৩৫), বাগমাড়া থানার দেওপাড়া গ্রামের মো. আফজাল হোসেন (৪১) ও পবা থানার নওহাটা গ্রামের মো. ইসরাফিল (৪৫)।
আজ মঙ্গলবার বিচারপতি আবু তাহের মো. সাইফুর রহমান ও বিচারপতি মো. বশির উল্লাহর হাইকোর্ট বেঞ্চ তাদের জামিন না দিয়ে পুলিশের হাতে তুলে দেন।
জামিন আবেদনের পক্ষে ছিলেন আইনজীবী মো. মাসুদ পারভেজ।
রাষ্ট্রপক্ষে ছিলেন ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল কে এম মাসুদ রুমী।
আইনজীবী মো. মাসুদ পারভেজ কালের কণ্ঠকে বলেন, ‘মামলার প্রধান আসামিসহ আট আসামিকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। তারা কারাগারে আছেন। এই পাঁচজন আগাম জামিন নিতে এসেছিলেন।
হাইকোর্ট তাদের জামিন না দিয়ে আদালতে দায়িত্বরত পুলিশের হাতে তুলে দিয়েছেন। পরে তাদের সংশ্লিষ্ট থানার মাধ্যমে বোয়ালিয়া পুলিশের হাতে হস্তান্তর করা হয়।’
গত ১৭ অক্টোবর ১৩ জনকে আসামি করে রাজশাহীর বোয়ালিয়া থানায় মামলাটি করেন রাজশাহী গোয়েন্দা পুলিশের (ডিবি) উপপরিদর্শক (এসআই) ডিবি কর্মকর্তা মো. মিজানুর রহমান। আসামিদের বিরুদ্ধে মানব পাচার প্রতিরোধ আইন, ২০১২ এর ৭, ৮, ১২ ও ১৩ ধারায় অভিযোগ আনা হয়েছে।
ভুক্তভোগীকে আটকে রেখে ইচ্ছার বিরুদ্ধে অসামাজিক কাজের প্রস্তাব, প্রলোভন ও ভয়ভীতি দেখানোর মতো অপরাধের বর্ণনা আছে এসব ধারায়।
মামলার এজাহারে বলা হয়েছে, প্রধান আসামি মো. নাইমুল ইসলাম নাঈম (১৯) ফোন করে পূর্বপরিচিত ভুক্তভোগীকে বোয়ালিয়া থানার সাহেব ভুবনমোহন পার্কে আসতে বলেন। গত ১৬ অক্টোবর বিকেলে ওই পার্কে গেলে ভুক্তভোগীকে পার্কের পার্শ্ববর্তী এলাকা সাহেব বাজার গণকপাড়ার পদ্মা আবাসিক হোটেলের ২০১ নম্বর কক্ষে নিয়ে যান।
এজাহারে আরো হয়েছে, সেখানে নাঈম যৌন সম্পর্ক করতে চাইলে ভুক্তভোগী আপত্তি করেন। সম্পর্ক স্থাপনে রাজি না হওয়ায় একপর্যায়ে নাঈম ভুক্তভোগীকে ওই কক্ষে আটকে রাখেন।
আটকে থাকার একপর্যায়ে নাঈম বাথরুমে গেলে সুযোগ পেয়ে সেখান থেকে পালিয়ে আসেন ভুক্তভোগী। হেতেমখাঁ মোড় হয়ে বাড়ি ফেরার সময় ডিবি পুলিশ দেখতে পেয়ে তাদের পুরো ঘটনাটি খুলে বলেন ভুক্তভোগী।
ডিবি কর্মকর্তা মো. মিজানুর রহমান সরকার মামলার প্রাথমিক তথ্য বিবরণীতে বলেন, ভুক্তভোগীর কাছে পুরো ঘটনা জানার পর ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে জানিয়ে ফোর্সসহ ওই হোটেলে অভিযানে যান। ওই অভিযানে প্রধান আসামি মো. নাইমুল ইসলাম নাঈম, পদ্মা আবাসিক হোটেলের স্টাফ মো. সোহাগ (৩১), মো. আবুল কালাম (৫৫), মোসা. শাপলা (২৮), মোসা. আঞ্জুমান (৩৫), মোসা. শিরিন আকতার (২২), মোসা. মাসুদা আক্তার (২০), মোসা. রোকসানাকে (২৬) গ্রেপ্তার করা হয়।
এ সময় পালিয়ে যান হোটেলটির ব্যবস্থাপক (ম্যানেজার) মো. রিটু (৪৫), হোটেল মালিক মো. আবুল কালাম আজাদ (৩৫), মো. শফিকুল ইসলাম (৩৫), মো. আফজাল হোসেন (৪১) ও মো. ইসরাফিল (৪৫)। এরপর তারা হাইকোর্টে আগাম জামিন চেয়ে আবেদন করেন।