দিল্লির দূষণ নিয়ে প্রতিবেশী রাজ্যগুলোকে তিরস্কার সুপ্রিম কোর্টের

ভারতের নয়াদিল্লিতে দূষণের মাত্রায় উন্নতির কোনো লক্ষণ নেই। ছবি : এএফপি

ভারতের নয়াদিল্লির দূষণ নিয়ে রাজনৈতিক লড়াই বন্ধ হোক। রাজধানীর বাতাসের গুণগত মান যে শ্বাসরুদ্ধকর পর্যায়ে পৌঁছেছে তা ‘মানুষের স্বাস্থ্যকে খুন করার শামিল’। নয়াদিল্লির বায়ুদূষণ নিয়ে এমনই মন্তব্য করলেন দেশটির সুপ্রিম কোর্ট। এক সপ্তাহ ধরে দিল্লির বাতাসের গুণগত মান ‘অত্যন্ত ভয়ানক’ পর্যায়ে পৌঁছেছে।

রাজধানীর দূষণ পরিস্থিতির দিকে নজর রেখে ইতিমধ্যে প্রাথমিক স্কুলগুলোকে ১০ নভেম্বর পর্যন্ত বন্ধ রাখার নির্দেশ দিয়েছে অরবিন্দ কেজরিওয়াল সরকার।

হাঁসফাঁস করতে থাকা নয়াদিল্লির দূষণ নিয়ে এবার দিল্লি ও তার প্রতিবেশী রাজ্যগুলোকে তিরস্কার করলেন শীর্ষ আদালত। প্রত্যেক শীতে প্রতিবেশী রাজ্য পাঞ্জাব ও হরিয়ানায় শস্যের গোড়া পোড়ানোই দিল্লির এই দূষণের মূল কারণ বলে মন্তব্য করেছেন আদালত। তাই শস্যের গোড়া পোড়ানো বন্ধ করতে এ দুই রাজ্যকে দ্রুত ব্যবস্থা নেওয়ার কথা বলা হয়েছে।

পাঞ্জাব সরকারকে শীর্ষ আদালত বলেছেন, ‘শস্যের গোড়া পোড়ানো এখনই বন্ধ হওয়া উচিত। কিভাবে করবেন সেটা আপনাদের বিষয়। আপনাদের কাজ। তবে এই কাজ এখনই বন্ধ হওয়া উচিত।

দূষণ নিয়ে মামলাকারীর আইনজীবী অপরাজিতা সিং আদালতে জানান, পাঞ্জাবে এখনো শস্যের গোড়া পোড়ানো চলছে। নয়াদিল্লির বাতাসের গুণগত মানের চরম অবস্থার জন্য শস্যের গোড়া পোড়ানোই দায়ী। এর পরই তিনি বলেন, ‘প্রতিবেশী রাজ্যগুলো এই কাজ বন্ধ করার বিষয়টি মুখে বললেও কার্যক্ষেত্রে তা করা হচ্ছে না। এখনো শস্যের গোড়া পোড়ানো চলছে।’

দিল্লির দূষণ নিয়ে এর পরই অসন্তোষ প্রকাশ করেন আদালত।

সেই সঙ্গে জানিয়ে দেন, দূষণ নিয়ে রাজনৈতিক লড়াই করা ঠিক নয়। এখানে মানুষের স্বাস্থ্য জড়িয়ে আছে। বাতাসের গুণগত মান যেভাবে খারাপ হচ্ছে, তা মানুষের স্বাস্থ্যকে খুন করার শামিল।

দিল্লিতে বাতাসের গুণগত মান (একিউআই) এক সপ্তাহ ধরে ৪০০-এর ওপরে। যা অত্যন্ত ভয়ানক। পরিস্থিতি সামাল দিতে গাড়ির জোড়-বিজোড় নীতির ওপর জোর দেওয়া হচ্ছে। স্কুল বন্ধ করা হয়েছে। নির্মাণকাজ বন্ধ রাখার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। কিন্তু তার পরও রাজধানীর দূষণ পরিস্থিতি ক্রমাগত খারাপ থেকে আরো খারাপ পর্যায়ে পৌঁছেছে।

শীর্ষ আদালত জানিয়েছেন, শস্যের গোড়া পোড়ানো তো বটেই, যানবাহনের ধোঁয়াও নয়াদিল্লির দূষণের অন্যতম আর একটি কারণ। আগামী শুক্রবার এ বিষয়ে শুনানি হবে। কিভাবে শস্যের গোড়া পোড়ানো বন্ধ করা যায়, বিকল্প উপায় কী—ইত্যাদি বিষয়ে আশু সমাধানের জন্য উত্তর প্রদেশ, রাজস্থান, হরিয়ানা, পাঞ্জাব ও দিল্লি সরকারের সঙ্গে কেন্দ্রীয় সরকারকে আলোচনা করার নির্দেশ দিয়েছেন শীর্ষ আদালত।

সূত্র : আনন্দবাজার পত্রিকা

LEAVE A REPLY