দক্ষিণ এশিয়ার বৃহত্তম সার কারখানা উদ্বোধন করলেন প্রধানমন্ত্রী

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা

নরসিংদীতে নবনির্মিত ঘোড়াশাল-পলাশ ইউরিয়া সার কারখানা (জিপিইউএফএফ) উদ্বোধন করেছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। আজ রবিবার জেলার পলাশ উপজেলার জিপিইউএফএফ প্রাঙ্গণে আয়োজিত অনুষ্ঠানে উদ্বোধনী ফলক উন্মোচনের মাধ্যমে দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ায় বৃহত্তম এই সার কারখানাটি উদ্বোধন করেন সরকারপ্রধান। এরপর প্রধানমন্ত্রী কারখানাটি ঘরে দেখেন। 

তিন দশকের পুরোনো কারখানাটি সুষ্ঠুভাবে পরিচালনার জন্য নতুন করে অত্যাধুনিক প্রযুক্তি স্থাপন এবং প্রকল্পের শুরু থেকেই বিদেশি বিশেষজ্ঞদের দ্বারা যথাযথ প্রশিক্ষণের মাধ্যমে দক্ষ জনবল প্রস্তুত করা হয়েছে।

পরিবহন সুবিধার লক্ষ্যে ঘোড়াশাল রেলওয়ে স্টেশনের সঙ্গে কারখানার সংযোগের জন্য একটি রেললাইন নির্মাণের কাজ চলছে। 

প্রধানমন্ত্রী স্মারক ডাকটিকেট, উদ্বোধনী খাম এবং জিপিইউএফএফ উদ্বোধনের দিনটিকে চিহ্নিত করে একটি বিশেষ সীলমোহরও প্রকাশ করেন। অনুষ্ঠানে প্রকল্পের ওপর একটি ভিডিও ডকুমেন্টারি প্রদর্শন করা হয়।

এ সময় শিল্পমন্ত্রী নুরুল মজিদ মাহমুদ হুমায়ূন, প্রতিমন্ত্রী কামাল আহমেদ মজুমদার, সংসদ সদস্য আনোয়ারুল আশরাফ খান ও জ্যেষ্ঠ সচিব জাকিয়া সুলতানা উপস্থিত ছিলেন।

বিকেলে প্রধানমন্ত্রী মোসলেহ উদ্দিন ভূঁইয়া স্টেডিয়ামে আয়োজিত এক মহাসমাবেশে ভাষণ দেওয়ার কথা রয়েছে। সেখানে তিনি বেশ কয়েকটি উন্নয়ন প্রকল্পের উদ্বোধন করবেন।

কারখানার কার্যক্রম শুরু হলে সার আমদানির ওপর নির্ভরতা উল্লেখযোগ্যভাবে হ্রাস পাবে। কারণ, দেশের মোট বার্ষিক ২৬ লাখ টন চাহিদার বিপরীতে স্থানীয় কারখানাগুলো একসঙ্গে ১৯ দশমিক ২৪ লাখ মেট্রিক টন সার উৎপাদন করবে।

স্থানীয় কারখানাগুলো বর্তমানে প্রায় ১০ লাখ টন উৎপাদন করছে এবং বাকি বার্ষিক চাহিদা আমদানির মাধ্যমে পূরণ করা হচ্ছে। 

বাংলাদেশ ক্ষুদ্র ও কুটির শিল্প করপোরেশন (বিসিক) জানায়, কারখানাটি ৩০ হাজার লোকের কর্মসংস্থান সৃষ্টি করবে। ১১০ একর জমিতে ১৫ হাজার ৫০০ কোটি টাকা ব্যয়ে নির্মিত কারখানাটির দৈনিক সার উৎপাদন হবে ২৮০০ মেট্রিক টন।

মোট ব্যয়ের মধ্যে সরকার চার হাজার ৫৮০ দশমিক ২১ কোটি টাকা দিয়েছে এবং ১০ দশমিক ৯২০ কোটি টাকা জাইকা, এইচএসবিসি এবং ব্যাংক অফ টোকিও মিত্সুবিশি ইউএফজে লিমিটেড থেকে ব্যবসায়িক ঋণ প্রকল্পের মাধ্যমে পেয়েছে।

কারখানার দুটি বাষ্পীয় গ্যাস জেনারেটর ৩২ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ উৎপাদন করতে সক্ষম এবং প্ল্যান্টটি চালানোর জন্য ২৮ মেগাওয়াট প্রয়োজন।

এটি বাংলাদেশের প্রথম সার কারখানা, যেখানে প্রাথমিক পর্যায়ে ফ্লু গ্যাস থেকে পরিবেশ দূষণকারী আহরণ করা হবে এবং ক্যাপচার করা কার্বন-ডাই-অক্সাইড ব্যবহার করে ইউরিয়া সারের উৎপাদন বৃদ্ধি করা হবে (প্রায় ১০ শতাংশ)।

এটি দেশে অত্যাধুনিক, শক্তি সাশ্রয়ী এবং সবুজ সার কারখানা, যা ইউরিয়া সারের আমদানি কমিয়ে দেবে এবং কষ্টার্জিত বৈদেশিক মুদ্রা সাশ্রয় করবে।

LEAVE A REPLY