গাজায় স্বাস্থ্যকর পণ্য পাচ্ছেন না নারীরা

অবরুদ্ধ গাজায় স্বাস্থ্যকর পণ্য পাচ্ছেন না নারীরা। যুদ্ধবিগ্রহের দেশে আরেক সংগ্রামে কাটছে নারীদের জীবন। পণ্য না পাওয়ায় প্রয়োজনের তাগিদে অস্থায়ী সমাধানগুলো অবলম্বন করছেন। স্বাস্থ্যের ওপর খারাপ প্রভাব ফেলবে জেনেও বেছে নিচ্ছেন সেগুলোই। এ বিভীষিকাময় পরিস্থিতি নারীদের জন্য দুঃস্বপ্নে পরিণত হয়েছে। বিশেষজ্ঞরা দুর্বল স্যানিটেশন এবং মাসিক পণ্যের অভাবের দীর্ঘমেয়াদি প্রভাব সম্পর্কে উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন। 

গাজার বাসিন্দা হিন্দ খৌদারি মিডল ইস্ট আইকে বলেছেন, যুদ্ধ শুরু হওয়ার পর থেকে গৃহহীন হয়ে পড়া নারীদের স্বাস্থ্য সমস্যা দিন দিন বৃদ্ধি পাচ্ছে। টয়লেট বা পানির অ্যাক্সেস না থাকায় আমরা অত্যন্ত খারাপ সময়ের মধ্য দিয়ে যাচ্ছি। এখন আমরা অস্বাস্থ্যকর কিছু পণ্য পাচ্ছি সেগুলোই ব্যবহার করছি। পরবর্তী পিরিয়ড নিয়ে আমি উদ্বিগ্ন। আমাদের সব নারীই একই জিনিস নিয়ে ভুগছে।

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক আরেক নারী বলেছেন, স্যানিটারি প্যাড পেতে আমাদের কয়েক কিলোমিটার হাঁটতে হয়। খাদ্য সংকটের থেকেও এ বিষয়টি নিয়ে আমি চিন্তিত।

জাতিসংঘের ত্রাণ ও কর্ম সংস্থা (ইউএনআরডাব্লিউএ) অনুসারে, প্রায় ৭ লাখ ৮৭ হাজার অভ্যন্তরীণভাবে বাস্তুচ্যুত মানুষ স্কুলসহ ১৫৪টি জাতিসংঘ ভবনে আশ্রয় নিয়েছেন। আশ্রয় নেওয়া গড়ে ১৬০ জন লোক একটি একক টয়লেট ব্যবহার করছেন। প্রতি ৭০০ জনের জন্য একটি মাত্র শাওয়ার ইউনিট রয়েছে। এটি নারীদের জীবনকে দুর্বিষহ করে তুলেছে। স্যানিটারি প্যাডের অভাব এবং ধোয়া ও জীবাণুমুক্ত করার জন্য পানির অভাবের কারণে কিছু নারী ঋতুস্রাব রোধ করার জন্য বড়ি নিচ্ছেন। যদি শিগগিরই গাজায় পণ্য না আসে, তবে দুর্বল স্বাস্থ্যবিধির কারণে সংক্রমণ ছড়িয়ে মানুষ মারা যাবে। 

লন্ডনের নারী স্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞ হাজর দারবিশ বলেছেন, যুদ্ধক্ষেত্রে থাকা প্রত্যেকের ওপর, বিশেষ করে নারীদের ওপর চরম শারীরিক ও মানসিক চাপ সৃষ্টি হচ্ছে। আরও বলেছেন, একটি অস্বাস্থ্যকর পরিবেশ মূত্রনালীর সংক্রমণ এবং রোগ বিস্তারের মতো সমস্যার কারণ হতে পারে। গাজার আরেকটি প্রধান উদ্বেগের বিষয় হলো সেই নারীদের জন্য যারা সবে মাত্র সন্তান প্রসব করেছেন। কিন্তু যত্নের সুযোগ নেই। শিশুদের জন্য ন্যাপির মতো পণ্যগুলোও সুপারমার্কেটসহ ফার্মেসিগুলোতে ফুরিয়ে গেছে। বাবা-মা তাদের নবজাতকের যত্নও নিতে পারছেন না। গাজায় নারীদের পরিস্থিতি বিষয়ে কথা বলার জন্য নারীবাদী ও নারী সংগঠনগুলোর প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন দারবিশ।

LEAVE A REPLY