পুরনো এক ডেরায় ফিরছে নীল তিমিরা

পৃথিবীর বৃহত্তম প্রাণী হিসেবে পরিচিত নীল তিমি ভারত মহাসাগরের একটি অংশ থেকে নিশ্চিহ্ন হয়ে গিয়েছিল। সেখানে আবার তাদের আবাস গড়তে দেখা যাচ্ছে। এ খবরে উত্ফুল্ল বিজ্ঞানীরা বলছেন, সুযোগ দেওয়া হলে বিলুপ্তপ্রায় প্রাণীদেরও যে এভাবে ধ্বংসের কবল থেকে বাঁচানো সম্ভব, এ ঘটনা তারই প্রমাণ। পূর্ব আফ্রিকার দ্বীপদেশ সেশেলসের গবেষক এবং চলচ্চিত্র নির্মাতারা সে অঞ্চলের সাগর থেকে ২০২০ ও ২০২১ সালে নীল তিমিদের ছবি তুলেছিলেন।

এর এক বছর পরও পানির নিচের অডিও রেকর্ডিং থেকে গেছে বিশাল জলজ প্রাণীগুলো সেখানে বেশ কয়েক মাস কাটিয়েছে। বিজ্ঞানীরা বলছেন, এর অর্থ দাঁড়াচ্ছে তারা সম্ভবত সেখানে স্থায়ীভাবে থেকে প্রজনন করছে। তিমিশিকারি জাহাজের তৎপরতায় ১৯৬০-এর দশকে ওই অঞ্চল থেকে নীল তিমির ঝাঁক নিশ্চিহ্ন হয়ে গিয়েছিল। ক্ষুদ্র দ্বীপদেশটির কাছাকাছি সাগরের তলায় মাটিতে ‘শব্দ ফাঁদ’ পেতে তিমির বিচরণের প্রমাণ পাওয়া যায়।

‘এনডেঞ্জারড স্পিসিজ রিসার্চ’ জার্নালে প্রকাশিত হয়েছে এই আবিষ্কারের বিষয়টি।

প্রধান গবেষকদের অন্যতম কেট স্ট্যাফোর্ড বিবিসিকে বলেছেন, ‘দেখা যাচ্ছে, গণহারে প্রাণী হত্যা বন্ধ করে ফিরে আসার সুযোগ দিলে তাদের সংখ্যা পুনরুদ্ধার করা যায়।’ বাণিজ্যিক তিমি শিকার বিশ্বজুড়ে এরই মধ্যে একটি দীর্ঘস্থায়ী প্রভাব ফেলেছে। বর্তমানে নীল তিমির সংখ্যা আগে যা ছিল তার তুলনায় অনেক কম।

সংরক্ষণবিষয়ক আন্তর্জাতিক সংগঠন আইইউসিএন প্রজাতিটিকে বিপন্ন হিসেবে তালিকাভুক্ত করেছে। শুধু দক্ষিণ গোলার্ধেই তিন লাখের বেশি তিনি হত্যা করা হয়েছে। বহরে আধুনিক দ্রুতগামী জাহাজ যুক্ত হওয়ায় তিমি হত্যার হার অনেক বেড়ে যায়। কেট স্ট্যাফোর্ড বলেন, ‘এটি পৃথিবীতে এখন পর্যন্ত বিদ্যমান সবচেয়ে বড় প্রাণী। আমরা জানতে চাই যে তারা সাগরের কোথায় ফিরে আসছে।

সেশেলসের আশপাশে নীল তিমি রয়েছে—এটা দারুণ রকম রোমাঞ্চকর বিষয়।’সেশেলসকে সাগর সংরক্ষণের জন্য দুই কোটি ২০ রাখ ডলারের ঋণ মওকুফ করে দেওয়া হয়েছে। দেশটি চার লাখ বর্গকিলোমিটারের মতো সাগর এলাকা সংরক্ষিত ঘোষণা করেছে। সেশেলসের আশপাশে জাহাজ চলাচল কম থাকাও তিমিসহ অন্যান্য জলজ প্রাণীর উপকার করেছে বলে মনে করা হচ্ছে। 

সূত্র : বিবিসি

LEAVE A REPLY