
অবরুদ্ধ গাজা উপত্যকায় সাত দিনের যুদ্ধবিরতি শেষ হতেই ফের ইসরাইলের বিমান হামলায় শতাধিক ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছে। শুক্রবার সকাল ৭টায় যুদ্ধবিরতি শেষ হওয়ার এক ঘণ্টা আগেই রকেট ও বিমান হামলা শুরু করে এই হত্যাযজ্ঞ চালিয়েছে ইসরাইলের প্রতিরক্ষা বাহিনী (আইডিএফ)। খবর আল জাজিরা, বিবিসি, রয়টার্সের।
ইসরাইলি সেনারা হামলা শুরুর প্রথম তিন ঘণ্টায়ই ৩২ ফিলিস্তিনি নিহত হয় বলে জানিয়েছে গাজার স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়। মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র জানিয়েছেন, যুদ্ধবিরতি শেষ হতে না হতেই শুরু করা ইসরাইলের হামলায় নিহতের সংখ্যা ১০৯ জনে দাঁড়িয়েছে। এতে আরও শত শত মানুষ আহত হয়েছেন।
গাজায় টানা ৫১ দিন আগ্রাসন চালিয়ে ১৫ হাজারের বেশি ফিলিস্তিনিকে হত্যা করেছে ইসরাইল। তারপর কাতারের মধ্যস্থতায় সাত দিনের যুদ্ধবিরতি দিয়ে পুনরায় হত্যাযজ্ঞ শুরু করেছে ইসরাইল। শুক্রবার সকাল থেকে বোমা হামলা করে এ প্রতিবেদন লেখা পর্যন্ত কমপক্ষে ১০৯ ফিলিস্তিনিকে হত্যা করেছে ইসরাইলি সেনারা।
ইসরাইল দাবি করেছে, যুদ্ধবিরতির মেয়াদ শেষ হওয়ার এক ঘণ্টা আগে গাজা থেকে একটি রকেট ছোড়া হয়। এদিকে গাজায় ফের অভিযান শুরুর জন্য হামাসকে দায়ী করেছেন ইসরাইলের প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু। শুক্রবার এক বিবৃতিতে তিনি বলেন, হামাস চুক্তির শর্ত মানেনি। যুদ্ধবিরতির অন্যতম শর্ত ছিল জিম্মিদের মধ্যে সব নারীকে তারা মুক্তি দেবে; কিন্তু হামাস তা করেনি। উপরন্তু আজ শুক্রবার ইসরাইলের নাগরিকদের লক্ষ্য করে রকেট হামলা চালিয়েছে।
তিনি বলেন, ইসরাইলের সরকারের পক্ষ থেকে আমি বলতে চাই, ৩টি লক্ষ্য অর্জনের জন্য আমরা যুদ্ধ করছি, হামাসের হাতে থাকা সব জিম্মিকে মুক্ত করা, হামাসকে নিশ্চিহ্ন করা এবং ভবিষ্যতে গাজা উপত্যকা যেন আর ইসরাইলের জনগণের জন্য হুমকি হয়ে না উঠতে পারে, তা নিশ্চিত করা।
তবে গাজার সংবাদমাধ্যমগুলো জানিয়েছে, সকাল থেকেই উত্তরাঞ্চলে গোলাগুলো এবং বিস্ফোরণের শব্দ শোনা গেছে। হামাস দাবি করেছে, যুদ্ধবিরতি শেষ হওয়ার পর ইসরাইলি সেনাদের বিরুদ্ধে তারা লড়াইয়ে লিপ্ত হয়েছে। এছাড়া তারা ইসরাইলের কয়েকটি শহরে রকেট হামলা চালানোর দাবিও করেছে।
এখনই স্থায়ী যুদ্ধবিরতি চায় না যুক্তরাষ্ট্র : জিম্মি-বন্দি বিনিময় এবং ত্রাণ সরবরাহ অব্যাহত রাখতে গাজা উপত্যকায় অস্থায়ী মানবিক বিরতির মেয়াদ আরও বৃদ্ধির পক্ষে থাকলেও এখনই সেখানে স্থায়ী যুদ্ধবিরতি চাইছে না যুক্তরাষ্ট্র।
মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেনের জাতীয় নিরাপত্তা বিষয়ক উপদেষ্টা জন কিরবি বৃহস্পতিবার এক ব্রিফিংয়ে এমনটাই আভাস দিয়েছেন। ব্রিফিংয়ে জন কিরবি বলেন, আমরা এখনই (গাজায়) কোনো স্থায়ী যুদ্ধবিরতি চাইছি না। তবে আমরা চাই, গাজায় যে মানবিক বিরতি চলছে তা আরও বৃদ্ধি পাক। আমরা চাই সেখানে ৭ দিনের যে যুদ্ধবিরতি শুরু হয়েছে তা আট, নয় ১০ কিংবা আরও বেশি দিন বর্ধিত হোক। কিন্তু যুক্তরাষ্ট্র মনে করে- এটি শেষ পর্যন্ত চ‚ড়ান্ত কোনো সমাধান আনবে না।