ভূমিকম্পে জাপানে নিহতের সংখ্যা বেড়ে ৭৮

নতুন বছরের প্রথম দিন জাপানের ইশিকাওয়ায় আঘাত হানে ৭.৬ মাত্রার ভূমিকম্প। উদ্ধারকর্মীরা ধসে পড়া বাড়ি ও ভবনের ধ্বংসস্তূপ থেকে বেঁচে যাওয়া লোকের সন্ধানে ৭২ ঘণ্টা ধরে লড়াই করে যাচ্ছে। সময়ের সঙ্গে যুদ্ধ করছেন উদ্ধারকর্মীরা, কারণ ভূমিকম্পের পর তিন দিনের গুরুত্বপূর্ণ সময় পার করে ফেলেছে জাপান। দ্রুত উদ্ধার করতে না পারলে পানিশূন্যতা, হাইপোথার্মিয়া এবং মানসিক চাপের কারণে আটকে পড়াদের বেঁচে থাকার সম্ভাবনা উল্লেখযোগ্যভাবে কমে যাবে বলে ধারণা করা হচ্ছে।

স্থানীয় সময় সোমবার প্রত্যন্ত নোটো উপদ্বীপে ভূমিকম্পটি আঘাত হানে। অনেক লোক তাদের ধসে পড়া বাড়ির নিচে আটকা পড়েছে বলে মনে করা হচ্ছে। বেশিরভাগই সুজু এবং ওয়াজিমা শহরে। ৭২ঘন্টা পর জীবিত মানুষের খোঁজ পাওয়ার সম্ভাবনা উল্লেখযোগ্যভাবে কমে গেছে।

কয়েক হাজার বাসিন্দা এখনও বিদ্যুৎ ও পানি ছাড়াই রয়েছে। ভূমিধস এবং ভেঙে পড়া রাস্তার কারণে কয়েকশ লোক সাহায্য থেকে বিচ্ছিন্ন রয়েছে।

জাপানের প্রধানমন্ত্রী ফুমিও কিশিদা এর আগে বৃহস্পতিবার বলেছিলেন, এ পর্যন্ত ১৫০ জনকে উদ্ধার করা হয়েছে এবং উদ্ধারকারীরা যতটা সম্ভব তাদের পূর্ণ মাত্রার প্রচেষ্টা চালিয়ে যাবে। তিনি বলেন, ‘এটি খুব কঠিন পরিস্থিতি।

কিন্তু জীবন রক্ষার দৃষ্টিকোণ থেকে আমি আপনাদের অনুরোধ করছি, আজ সন্ধ্যার মধ্যে যতটা সম্ভব প্রাণ বাঁচানোর চেষ্টা করবেন এবং উদ্ধারের জন্য সর্বাত্মক চেষ্টা করুন।’

এদিকে আজ ৪ জানুয়ারী সকাল ১০ টা পর্যন্ত ভূমিকম্পে মৃতের সংখ্যা ৭৮ জনে দাঁড়িয়েছে বলে কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে। এর মধ্যে দেশটির নোটো উপদ্বীপের শহর ওয়াজিমাতে নিহত হয়েছে ৪৪ জন এবং সুজুতে ২৩ জন। কর্মকর্তারা বলেছেন, ওয়াজিমা, সুজু এবং আনামিজুতে ৪ জানুয়ারী সকাল ১১ টা পর্যন্ত ৫১ জন ব্যক্তি এখনো নিখোঁজ রয়ে গেছে। কর্তৃপক্ষ তাদের পরিচয়  প্রকাশ করেছে এই আশায় যে, তাদের দ্রুত খুঁজে পাওয়া যাবে।

মোট আহতদের সংখ্যা ৩৩০ জন এবং কারো কারো অবস্থা গুরুতর।

কর্মকর্তারা আরো জানিয়েছেন, ধসে পড়া ভবনের নিচে থেকে আটকা পড়াদের দ্রুত উদ্ধার করতে না পারলে, তাদের বেঁচে থাকার আশা কমে যেতে পারে। তারা জানিয়েছেন, ১৫টি পৌরসভার ৩৬৪টি আশ্রয় কেন্দ্রে প্রায় ৩৪ হাজার মানুষ আশ্রয় নিয়েছে। এর মধ্যে ওয়াজিমায় আশ্রয় নিয়েছে প্রায় ১১ হাজার মানুষ এবং সুজুতে আশ্রয় নিয়েছে প্রায় প্রায় ৭ হাজার মানুষ। 

ভূমিকম্পে সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্থ হয়েছে ওয়াজিমা এবং সুজু শহর। তবে সেখানে ক্ষতির পরিমাণ এখনো জানা যায়নি। অন্যান্য পৌরসভায় ২১০ টিরও বেশি বাড়ি ধ্বংস বা ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। এছাড়া ভূমিকম্পের পর আফটারশকও অব্যাহত রয়েছে।

১ জানুয়ারির  বিকেল থেকে ৩ জানুয়ারী বিকেল ৪ টা পর্যন্ত জাপানের ‘মেটিওরোলজিক্যাল এজেন্সি’ নোটো উপদ্বীপে ৫২১টি ভূমিকম্প রেকর্ড করেছে। জাপানি স্কেলে যার তীব্রতা ছিল ১ বা তার বেশি। সংখ্যানটি ডিসেম্বর ২০২০ সাল থেকে ডিসেম্বর ২০২৩ সালের মধ্যে এই অঞ্চলে ঘটা এই ধরণের ভূমিকম্পের সংখ্যাকে ছাড়িয়ে গেছে।

সূত্র: দ্য আসাহি শিম্বুন

LEAVE A REPLY