পুলিশের লাঠিপেটায় আহত ৩০, মামলা ২৮৮ জনের নামে

বরিশালে পূর্বঘোষণা না দিয়ে বিএনপির লিফলেট বিতরণ কর্মসূচির সময় মিছিলের চেষ্টাকালে পুলিশের লাঠিপেটায় ৩০ নেতাকর্মী আহত হয়েছেন।

বুধবারের এ ঘটনায় নেতাকর্মীদের হামলায় তিন সদস্য আহত হয়েছেন বলে জানিয়েছে পুলিশ। এ ঘটনায় দক্ষিণ জেলা বিএনপির আহ্বায়কসহ ৭ নেতাকর্মীকে পুলিশ আটক করেছে। এরপর বুধবার গভীর রাতে কোতোয়ালি মডেল থানা পুলিশের এসআই আব্দুল মান্নান ২৮৮ নেতাকর্মীকে আসামি করে মামলা করেন। এ মামলায় ৪৮ নেতাকর্মীকে নামধারী আসামি করা হয়েছে, বাকিরা অজ্ঞাত আসামি।

স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, দুপুরের দিকে নগরীর সদর রোডের অশ্বিনীকুমার হলের সামনে লিফলেট বিতরণ কার্যক্রমের মধ্যেই মিছিলের চেষ্টা করেন বিএনপি নেতাকর্মীরা। ওই কর্মসূচিতে উপস্থিত ছিলেন কেন্দ্রীয় বিএনপির সহসাংগঠনিক সম্পাদক আকন কুদ্দুসুর রহমান, কেন্দ্রীয় সদস্য আবু নাসের মুহাম্মদ রহমাতুল্লাহ, দক্ষিণ জেলা বিএনপির আহ্বায়ক আবুল হোসেন খান ও সদস্যসচিব আবুল কালাম শাহিনসহ অঙ্গসংগঠনের নেতাকর্মীরা।

আগে থেকে না জানিয়ে মিছিলের চেষ্টাকালে জনসাধারণের নিরাপত্তা নিশ্চিতে পুলিশ তাদের বাধা দেয়। এ সময় নেতাকর্মীদের সঙ্গে পুলিশের বাগ্বিতণ্ডা ও ধস্তাধস্তি হয়। পুলিশ লাঠিপেটা করলে ৩০ নেতাকর্মী আহত হন বলে বিএনপি দাবি করেছে। অন্যদিকে বিএনপি নেতাকর্মীদের হামলায় ৩ পুলিশ সদস্য আহত হয়ে পুলিশ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রয়েছেন বলে জানিয়েছেন কোতোয়ালি মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আরিচুল হক।

এ ঘটনায় এসআই আব্দুল মান্নান কোতোয়ালি মডেল থানায় একটি মামলা করেন। সেই মামলায় আটক ৭ জনসহ ৪৮ জনকে নামধারী এবং আরও ২৪০ নেতাকর্মীকে অজ্ঞাত আসামি করা হয়। মামলায় বিএনপিসহ অঙ্গসংগঠনের নেতাকর্মীদের বিরুদ্ধে বেশ কয়েকটি অভিযোগ তোলা হয়েছে। এর মধ্যে রয়েছে বিনা অনুমতিতে সভা-সমাবেশের চেষ্টা করা, নৈরাজ্য সৃষ্টির লক্ষ্যে সড়ক অবরোধ ও যান চলাচলে বাধা দেওয়া। এছাড়া জানমালের ক্ষতিসাধন ও জনমনে আতঙ্ক তৈরি, পুলিশকে লক্ষ্য করে ইটপাটকেল নিক্ষেপ ও ধাক্কা দিয়ে আহত করা।

কেন্দ্রীয় বিএনপির সদস্য আবু নাসের মুহাম্মদ রহমাতুল্লাহ বলেন, শান্তিপূর্ণ কর্মসূচিতে পুলিশ বিনা উসকানিতে লাঠিপেটা করেছে। উলটো মিথ্যা মামলা দিয়ে বিএনপি নেতাকর্মীদের মনে ভয়ের সঞ্চার করতে চাচ্ছে সরকার। বিএনপি নেতাকর্মীরা ঐক্যবদ্ধ, তাদের ভয় দেখিয়ে কোনো লাভ হবে না। যতই বাধা আসুক, আমরা জনসাধারণের অধিকার আদায়ে রাজপথে লড়াই চালিয়ে যাব।

দক্ষিণ জেলা বিএনপির সদস্যসচিব আবুল কালাম শাহিন বলেন, আমরা শান্তিপূর্ণ কর্মসূচি পালন করছিলাম। হঠাৎ পুলিশ এসে আমাদের লাঠিপেটা করে অন্তত ৩০ নেতাকর্মীকে আহত করেছে। যেখানে আমরা ভুক্তভোগী, সেখানে আমাদেরই আসামি করা হলো। এ ঘটনার তীব্র নিন্দা জানাই।

কোতোয়ালি মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) একেএম আরিচুল হক বলেন, তারা সড়কে উঠে জনদুর্ভোগ তৈরির পাঁয়তারা করছিল। তাই জনস্বার্থে বিএনপি নেতাকর্মীদের সড়কে উঠতে নিষেধ করেছিলাম। তারা পুলিশ সদস্যদের ধাক্কা দিয়ে সড়কে উঠে নগরীর প্রধান সড়কে প্রতিবন্ধকতা তৈরি করেছে। এ সময় তিন পুলিশ সদস্য আহত হয়েছেন। এ ঘটনায় মামলা দায়েরের পর আটক ৭ জনকে গ্রেফতার দেখিয়ে আদালতের মাধ্যমে কারাগারে পাঠানো হয়েছে। মামলার অন্য আসামিদের গ্রেফতারের চেষ্টা চলছে।

LEAVE A REPLY